দেশের প্রথম ডিজিটাল পৌরসভা গড়তে চাই মেয়র মকছুদ মিয়া

fec-image

‘মেয়র হিসেবে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডই আমার ওয়ার্ড। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তারাও পৌরসভার নাগরিক, যার ভোট দেননি তারাও আমার নাগরিক । সব এলাকার উন্নয়ন করাই আমার দায়িত্ব। সবাইকে নিয়ে ঐতিহ্যবাহী কক্সবাজার জেলার দ্বীপ উপজেলার মহেশখালী তথা দেশের প্রথম একটা ডিজিটাল ও মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

রোববার (২৬ সেপ্টম্বর) বিকেলে একান্ত সাক্ষাতকারে পৌরসভা নিয়ে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি জানান মহেশখালী পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আলহাজ¦ মকছুদ মিয়া।

মেয়র পদে নির্বাচনে জয়ের হ্যাট্রিক করা এই জনপ্রতিনিধি বলেন, আমাকে মহেশখালী পৌরবাসী আবারও তাদের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি সবার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। নির্বাচনের আগেও আমি পৌরসভার পানি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলাম। এখন আমার প্রথম কাজ পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানির সংকট দূর করা এবং পৌরসভাকে লাইটিং করে আলোকিত করা। আর এর জন্য আমি আমার সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাব।

পানি সমস্যা সমাধান ছাড়াও আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে পৌর শহরের বাকী রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে চান তিনি। আর এ ক্ষেত্রে পুরনো অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সব সেবা বাস্তবায়ন করার প্রত্যয় তার।

পৌরবাসীকে পানি সরবরাহের জন্য বর্তমানে একমাত্র ভূগর্ভস্থ পানির উপরই নির্ভর করতে হয়। তাই শুপ্রিয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট সমাধানে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে দ্রুত এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুপ্রিয় পানির জন্য আর কষ্ট করতে হবেনা পৌরবাসীকে।

সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এই মেয়র প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে ৭ হাজার ৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সরওয়ার আজম বিএ পান ৫ হাজার ৪৫৮ ভোট। এই পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছে ২০৪২৭ ভোট তার মধ্যে পুুরুষ ভোটার ১০৭৯৯, নারী ভোটার ৯৬২৮ জন।

২০০২ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করা মহেশখালী পৌরসভা বর্তমানে প্রথম শ্রেণির একটি পৌরসভা উল্লেখ করে আলহাজ্ব মকছুদ মিয়া বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই স্বপ্নকে বাস্তবায়নে মহেশখালী পৌরসভায় সব নাগরিক সুযোগ সুবিধা বাড়াবো। পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পৌরবাসীর সেবাপ্রাপ্তি সহজ করতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিতে চাই।

১৯৬৩ সালের ২৫মার্চ মহেশখালী গোরকঘাটার ঐতিয্যবাহী সিকদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আলহাজ্ব মকছুদ মিয়া তৎকালীর বিরোধি দলীয় নেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুল দিয়ে যোগদানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন ২০০৫ সালে। তিনি বলেন, ছেলে বেলা থেকেই রাজনীতির প্রতি ঝোক ছিলো অনেক বেশি। পরিবারের অন্যান্যরা সদস্যরা রাজনীতির মাঠে থাকায় । বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর মহেশখালী কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিকের হাত ধরে শুরু হয় মহেশখালীর মাঠের রাজনীতি।

তিনি আরো বলেন, আমার সারা জীবনের প্রাপ্তি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন। বঙ্গবন্ধু ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকা নিয়ে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারা আমার জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দের ছিল।

রাজনৈতিক জীবনে যত অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছি, সব ভুলে গেছি নৌকা প্রতীক পেয়ে। এই প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ।

কতদিন ধরে নির্বাচন পরিকল্পনা করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, মেয়র থাকায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগাম আগ্রহ ছিল। তবে, দলের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে শতভাগ আশাবাদি ছিলাম আমি। কারণ যে পরিমান উন্নয়ন আমি করেছি আমাকে পৌরসভার জনগণের দোয়াতে মাননীয় নেত্রী নৌকা মার্কা দিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের চেয়ে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধিদের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি। কারণ স্থানীয় সরকারে থাকা জনপ্রতিনিধিরা মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ বেশি পান। তার মতে ‘মুলত স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাজের প্রতিফলন হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ’ এজন্য এই খাতে সরকারের বরাদ্দ আরও বাড়ানোর আহ্বান তার।

আগামী পৌর নির্বাচনে অংশ নিবেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে কি করতে হবে। এখন এসব নিয়ে ভাবছি না। তবে, সবসময় দল ও জনগণের পাশে থাকতে চান বলে জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন