পানছড়িতে এইচএসসিতে একমাত্র জিপিএ ৫ পেয়েছে দীপা নন্দী
পানছড়ি উপজেলায় এবার এইচএসসিতে একমাত্র জিপিএ ৫ পেয়েছে দীপা নন্দী। তবে সে অন্য দশ জনের চেয়ে সম্পূর্ন ভিন্ন। শারিরীক প্রতিবন্ধী হয়েও লেখাপড়ায় রয়েছে তার ধারাবাহিক সফলতা। পঞ্চম, অষ্টম, এসএসসি ও এইসএসসিতে রয়েছে তার জিপিএ ৫।
উপজেলায় এবারের এইসএসসির ফলাফলে একমাত্র জিপিএ ৫ তার দখলে। পানছড়ি ডিগ্রী কলেজে সে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। কলেজ অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা তার এ ফলাফলে খুব খুশী। তিনি বলেন, সে খুব মেধাবী। অল্পতেই সব কিছু বুঝে নিতে পারে। ভবিষ্যতে সে অনেক ভালো করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
দীপা নন্দী জানায়, কলেজ অধ্যক্ষ সমীর দত্ত স্যার ভর্তি থেকে শুরু করে ফর্ম ফিলাপ পর্যন্ত সব কিছুই ফ্রি দিয়েছে। তাই কোন টেনশন ছাড়াই নিজের পড়ালেখাটুকু ঠিক ভাবে করতে পেরেছি। পানছড়ি বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে ভবিষ্যতে দেশের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন বুনছে দীপা।
জানা যায়, দীপার বাবা সুভাষ নন্দী জন্মের পর মাকেসহ পাঠিয়ে দেয় বাপের বাড়ি। দীপার মা পপি দাসও মানসিক প্রতিবন্ধী। সেই থেকে মামা সঞ্জয় দাশ ও মামী চুমকি বিশ্বাসের অভাবের সংসারে তার বেড়ে উঠা। মামা-মামীর অভাবের সংসারে সে কোনদিন অভাব অনুভব করেনি। যখন যা দরকার মামা-মামী সময়মতো দিয়েছে। মামা সঞ্জয় দাশ ও মামী চুমকী বিশ্বাসের প্রতি বার বার কৃতজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
মামী চুমকি বিশ্বাস জানায়, তিন বছর বয়স থেকেই সে আমাদের সংসারে। অভাবের সংসার হলেও তার চাহিদা মেটাতে চেষ্টা করেছি। পানছড়ি প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংঘের সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, সে আমাদের সংঘের গর্ব। তার পাশে থেকে সহযোগিতা কথা জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, দীপা জিপিএ ৫ পেয়েছে শুনে খুশী হয়েছি। জেলা প্রতিবন্ধী অফিস সব সময় দীপার পাশে থেকে সহযোগিতার কথা জানালেন তিনি। উল্লেখ্য এসএসসিতেও দীপা ছিল উপজেলার একমাত্র জিপিএ ৫ ধারী।