পেকুয়ায় মাকে নির্যাতন করায় ছেলেকে পুলিশে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

পেকুয়া প্রতিনিধি :
পেকুয়ায় এক মাকে তার নিজ ছেলে কর্তৃক শারিরিক নির্যাতন করে আহত করায় ছেলেকে পুলিশে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের বন কানন এলাকার মৃত বদিউল আলমের বসতবাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধূরী গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে মায়ের উপর নির্যাতনকারী ছেলে লিয়াকতকে আটক করে পেকুয়া থানা পুলিশের কাছে সৌপর্দ করেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৃত বদিউল আলম দু বছর আগেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে স্ত্রী শোয়া বিবি(৭০) কে একা করে মৃত্যুবরণ করেছেন। শোয়া বিবি ছয় সন্তানের জননী। চার মেয়ে ও দুই ছেলের সবাই বিবাহিত। দিনমজুর স্বামী মৃত্যুকালে বসত-ভিটে ছাড়া আর কিছু দিয়ে যেতে পারেননি তার পরিবারকে। ছেলে লিয়াকত আলী ও মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে স্বামীর দিয়ে যাওয়া বসত-ভিটেতে বসবাস করেন তারা। দু’ছেলের আর্থিক টানাপোড়েন থাকায় জীবনের শেষ সময়ে এসেও নিজের জীবিকা নির্বাহ করেন অন্যের ঘরে কাজ করে। এর মধ্যেও জীবনের বাকি দিনগুলো কোন মতে কাটছিল তার।

ভিটে ভাগাভাগির অজুহাতে মায়ের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন শুরু করে ছেলে। এমন কোন নির্যাতন বাকি রাখেনি যে, তা মায়ের উপর চালায়নি। অভাগা সে মায়ের দেয়া বর্ণনা শুনলে চোখের পানি ধরে রাখা দায়। নিয়মিত মারধর, গভীর রাতে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার মত নিন্দনীয় কাজ করতে কার্পণ্য করেনি ছেলে লিয়াকত আলী।

পরে, স্থানীয়রা বসত-ভিটে ভাগ করে দিলেও পুরোটা দাবি করে ওই ছেলে। মায়ের কাছ থেকে লিখিত দানপত্র আদায়ের চেষ্টাও করে সে। আর তা না দেওয়াতে নিজ মায়ের উপর এমন নির্যাতন চালায় সে।

এতে ওই দূর্ভাগা মা অতিষ্ট হয়ে পরায় দারস্থ হন টইটং ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে। চেয়ারম্যান বেশ কয়েকবার ওই ছেলেকে শুধরাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। এমনকি তার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চাওয়ায় মায়ের প্রতি আরো হিংস্র হয়ে উঠে ওই ছেলে।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া মো. মোস্তাফিজ ভূইয়া জানান, মা শোয়া বেগমের দায়ের করা এজাহারের ভিত্তিতে ছেলে লিয়াকতকে আসামী করে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। যার নং- ১৯। ২৯ সেপ্টেম্বর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন