প্যারাবন কেটে নদী দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মানের হিড়িক!

fec-image

মহেশখালী-বদরখালী নৌ চ্যানেলে সৃজিত প্যারাবন কেটে অবৈধভাবে নদীর চর দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চকরিয়া উপজেলার বদরখালীর একটি ভূমিদস্যু চক্র।

এতে ক্ষমতাশীন দলের নাম ব্যবহার করে স্থানীয় যুবলীগের এক নেতার ইন্ধনে চলছে প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে এ চিংড়ি ঘের নির্মাণের কাজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মহেশখালী-বদরখালীর চ্যানেলের বদরখালী বাজারের ওয়াদা রোড়ের পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন স্লুইচ গেইটের পশ্চিম পাশে শত শত প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে স্কেভেটার দিয়ে মাটি কেটে করস্রোতা প্রবাহমান নদী দখল করে দিন-রাত সমান তালে ওই প্রভাবশালীরা চিংড়ি ঘের নির্মানের কাজ চালিয়ে গেলে রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বনবিভাগ রয়েছে নির্বিকার।

স্থানীয়রা বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির থেকে ইজারা নিয়েছে বলে নাম ব্যবহার করে (কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ) স্কেভেটার ও শ্রমিক দিয়ে প্রকাশ্যে দিন দুপুরে নদীর চর দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ করে যাচ্ছে জোটবদ্ধ হয়ে চক্রটি।

দখলের বিষয় নিয়ে জনগনের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে বদরখালীর এই ভূমিদস্যুরা কি প্রশাসনের চেয়েও ক্ষমতাশালী? নাকি ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে প্রশাসন চুপ রয়েছে। অবিলম্বে নদী দখলকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের রাতে ২০ থেকে ২৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। ফলে ভেঙ্গে যায় বেঁড়িবাধ। এরপর উপকূলীয় এলাকায় বনায়নে এগিয়ে আসে জাপানের একটি এনজিও সংস্থা ওয়াইস্কা ইন্টারন্যাশনাল। এই এনজিও সংস্থাটি প্রতি বছর জাপান থেকে শিক্ষার্থী নিয়ে এসে সবুজ বেষ্টনীর আওতায় ব্যাপক বাইন ও কেওড়া গাছের চারা রোপণ করে। এসব চারা এখন বড় গাছে পরিণত হয়েছে। সে সব চারা গাছ কেটে চিংড়ি ঘের নির্মাণ  অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রকাশ্যে এসব প্যারাবন নিধন করা হলেও বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে দুর্বৃত্তরা প্রতিনিয়ত প্যারাবন নিধনে মেতে উঠেছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোল (বাপা) মহেশখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, উপকুলের রক্ষা কবচ প্যারাবনের বাইন গাছ কেটে প্রবাহমান নদীর দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ জঘন্যতম অপরাধ। বলতে গেলে দখলের থাবায় মহেশখালী-বদরখালী চ্যানেলের এক সময়ের প্রাণচঞ্চল এই নদীটি এখন সরু খালে পরিণত হয়ে বোবা কান্না করছে। নদীটি উদ্ধার করে প্রাণচঞ্চল ফিরে আনা সময়ের দাবি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেপি দেওয়ান বলেন, নদী দখলকারীদের প্রশাসন কোন সময় ছাড় দেয়না। আর যদি নদী দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মাণ করে তাহলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, এটি বনবিভাগের জায়গা না তবে খাস জায়গা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড ব্যবস্থা নিতে পারবে বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন