প্রথম ধাপে ৭০০ রোহিঙ্গাকে নিতে চায় মিয়ানমার

fec-image

মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর আগ্রহের কথা জানিয়ে বাংলাদেশকে চিঠি পাঠিয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে ৭০০ রোহিঙ্গাকে দ্রুত ফেরত নিতে ঢাকাকে তালিকাও পাঠানো হয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ঢাকা-নেপিডো। তবে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রোহিঙ্গাদের ফেরার পরিবেশ রাখাইনে এখনো সৃষ্টি হয়নি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম বলেছেন, প্রথম ধাপে ৭০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছে মিয়ানমার। তবে বাংলাদেশ চায় পরিবারভিত্তিক এক হাজার ১০০ জনকে একসঙ্গে ফেরত পাঠাতে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ২৮ হাজার রোহিঙ্গার যাচাই-বাছাই শেষ করেছে মিয়ানমার। পর্যায়ক্রমে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব বলে আশা করছে বাংলাদেশ। আর এই প্রত্যাবাসন স্বেচ্ছায় ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেই সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। জাতিসংঘও এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে।

শাহিরয়ার আলম আরো বলেন, মিয়ানমারে নির্বাচন, সামরিক অভ্যুত্থান এবং করোনার কারণে বহুদিন রোহিঙ্গা ফেরত প্রক্রিয়া পুরো থমকে ছিল। গত ২৭ জানুয়ারি দুই দেশের কারিগরি কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে আবারও আলোচনা শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত। মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের প্রধান ছিলেন দেশটির জনসংখ্যা ও অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের উপমহাপরিচালক ইয়ে তুনও।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত তিনটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। উভয় পক্ষ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পূর্ববর্তী আবাসন নিশ্চিতে দেরির কারণ খুঁজে বের করতে কারিগরি পর্যায়ের এই আলোচনায় নিজেদের সদিচ্ছার কথা জানায়। বৈঠকে কারিগরি জটিলতা ও তথ্যের ঘাটতির কথা তুলে ধরে মিয়ানমার প্রতিনিধিদল অনিষ্পন্ন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার ওই বছরেরই নভেম্বর মাসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। তবে এর আওতায় এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি।

সূত্র: কালেকণ্ঠ

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন