প্রাথমিক শিক্ষা পদক জেলায় এসএমসি সভাপতি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ!

fec-image

কক্সবাজার জেলা পর্যায়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ১৯ প্রতিযোগিতায় এসএমসি সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম চৌধুরী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অর্জিত ব্যক্তিগণকে শিক্ষা পদক থেকে বঞ্চিত করে অনিয়মের মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে উল্লেখিত পদে মনোনীত করেছেন বলে অভিযোগ।

এ অবস্থায় অনিয়মে ঘোষিত জেলার শ্রেষ্ঠ এসএমসি সভাপতি ক্যাটাগরী পদের ফলাফল স্থগিতকরণসহ পুর্ণঃবিবেচনাকরণে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শ্রেষ্ট এসএমসি সভাপতি নাছির উদ্দিন বাদশা।

লিখিত অভিযোগে পেকুয়া উপজেলার উত্তর মেহেরনামা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা (এসএমসি) কমিটির সভাপতি মোঃ নাছির উদ্দিন বাদশা বলেন, ২০১৯ সালে আমি পেকুয়া উপজেলার শ্রেষ্ঠ এসএমসি সভাপতি নির্বাচিত হই। গত ১০ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা পর্যায়ে উপজেলার শ্রেষ্ঠদের স্বাক্ষাৎকার গ্রহণ করের কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেখানে এডিসি শিক্ষা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে যাচাই-বাছাই কমিটি।

ওইদিন আমরা উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এস.এম.সির সভাপতির মধ্যে আট উপজেলা থেকে ৪ উপজেলা উপস্থিত ছিলাম যথাক্রমে পেকুয়া, চকরিয়া, রামু, উখিয়া সাক্ষাৎকার বোর্ডে উপস্থিত হই। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ আমাদের চারজনের এবং আমার গত ৩ বছরের বিদ্যালয়ের কর্মকান্ডের কাগজপত্র পর্যালোচনা করেন। নিয়ম অনুযায়ী দুইদিন পর ১২ ডিসেম্বর ফলাফল ঘোষণা করার কথা থাকলেও কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হবার পর গত ২৫ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা পর্যায়ে জাতীয় প্রাথমিক পদক ১৯ ফলাফল ঘোষণা করেন।

লিখিত অভিযোগে নাছির উদ্দিন বাদশা দাবি করেন, ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, জেলার শ্রেষ্ঠ এস.এম.সির সভাপতি উখিয়া, শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক উখিয়া, শ্রেষ্ঠ বিদ্যুৎসাহী সমাজকর্মী উখিয়া। পরবর্তীতে আমি ফলাফল দেখে চিন্তিত হই এবং আমি মনে করি, আমার অর্জিত শিক্ষা বিষয়ে অর্জন অন্য জনকে ঘোষণা দিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

ভুক্তভোগী নাছির উদ্দিন বাদশা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, সাক্ষাৎকারের দিন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম চৌধুরী আমাকে তার কার্যালয়ে দেখা করার জন্য বললে আমি ওইদিন রাত সাড়ে আটটার সময় কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সাথে যোগাযোগ করি। তিনি ফলাফলের জন্য আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা অনৈতিক সুবিধা দাবি করেন। আমি এতে তার কথায় কর্ণপাত করি নাই বলেই আজ আমার অর্জিত সম্মান ভিন্ন অন্যজনকে প্রদান করেছে।

নাছির উদ্দিন বাদশা বলেন, আমি গত ০৩ (তিন) বছর পেকুয়া উপজেলার উত্তর মেহেরনামা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি। উল্লেখিত সময়ে বিদ্যালয়ের অনেক উন্নয়ন শিক্ষামূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন পূর্বক এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তনে সহযোগিতা করেছি। যার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসনসহ সকলেই অবগত আছেন। অন্যদিকে জেলা কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়া চকরিয়া উপজেলা এসএসসি ছাড়া অন্য দুইটি উপজেলার সভাপতির এস.এম.সি কমিটি গঠিত হয়েছে মাত্র আনুমানিক ১ বছর কিংবা ৬ মাস। সেইজন্য আমি প্রাথমিক শিক্ষায় জাতীয় পদক ১৯ এর কক্সবাজার জেলার শ্রেষ্ঠ এস.এম.সি সভাপতি ঘোষণা দেয়া শাহ আলম (সভাপতি রেজুরকূল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় উখিয়া) ফলাফল স্থগিতকরণসহ পুর্ণঃ বিবেচনার জন্য চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও উপ-পরিচালকের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

পেকুয়া উপজেলা এসএমসি সভাপতি নাছির উদ্দিন বাদশা বলেন, যাকে কক্সবজার জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এস.এম.সির সভাপতি ঘোষণা করেছেন তিনি সাক্ষাৎকারে বিদ্যালয়ের কি পরিমাণ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড করেছে তার কোন পরিসংখ্যান তিনি বাছাই কমিটির সামনে দেখাতে পারেনি যা আমিসহ অন্যান্য উপজেলার প্রার্থীরা দেখেছি। এতে আমি মনে করি, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম চৌধুরী উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে অনৈতিকভাবে জেলার শ্রেষ্ঠ এস.এম.সির সভাপতি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে একই উপজেলা থেকে অন্য আরো ২-৩টি শ্রেষ্ঠ পদ প্রদান করেছে। যার নিরপেক্ষতা , যাচাই-বাছাইয়ের বিচারকী কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যার কারণে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় যথেষ্ট মান ক্ষুন্ন হয়েছে। শিক্ষার মূল ভিত্তি প্রাথমিক শিক্ষা সেই শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ভিত্তি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। সেই শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুরো জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তার হয়। তিনি পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনৈতিক উৎকোচ গ্রহণের মধ্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার চরম মান ক্ষুন্ন করায় তার বিরুদ্ধে আইনী প্রতিকার পাওয়ারও আবেদন করছি।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউল আলম চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্ঠা করা হয়। তবে তিনি মুঠোফোন (০১৭১১১১৬৮৩২) রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন