’বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বান্দরবান অংশে সিসি ক্যামেরার আওতায় আসলে অপরাধ কমবে’
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের ঘুমধুম থেকে দোছড়ি সীমান্ত এলাকায় মাদক পাচার বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন এই সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে মাদক উদ্ধার হচ্ছে। মাদক কারবারীরা প্রতিনিয়ত নানা কৌশলে দেশের অভ্যান্তরে নিয়ে আসছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক। এই অবস্থায় বান্দরবান সীমান্ত এলাকা সিসি ক্যামরার আওতায় আনার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশসহ সীমান্ত পর্যবেক্ষনে সিসি ক্যামরার সফলতা পেয়েছিল বিজিবি। ২০১৮ সনে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুমধুম ও বাইশফাঁড়ি সীমান্ত এলাকায় এসব সিসি ক্যামরা বসানো হয়েছিল। এতে করে ওই এলাকা সহজেই পর্যবেক্ষণ করতে পারছে বিজিবি।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে প্রতিবেশী মিয়ানমারকে বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও নানা সময় মিয়ানমার সীমান্ত বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বেআইনী কার্যক্রমের লিপ্ত ছিল। বিশেষ করে সীমান্তে মাইন স্থাপন, মাদক পাচার, চোরাচালান সর্বশেষ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিতে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
এদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্তে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। অরক্ষিত সীমান্তকে নিজেদের আয়ত্বে আনতে নাইক্ষ্যংছড়ির ৬০ কিলোমিটার এলাকাসহ বিভিন্ন সীমান্তে বর্ডার আউটপোস্ট (বিওপি) নির্মাণ করেছে। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে ২৭১কি.মি সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ফলে সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান এবং উপজাতী-রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে আরও জোরালোভাবে কাজ করতে পারছে সীমান্তরক্ষীরা।
জানতে চাইলে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আলম বলেন- বিজিবির মাধ্যমে সীমান্তে বসানো সিসি ক্যামেরাগুলো দেখেছি। ওইসব এলাকা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে তারা। তবে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী একটি মহল মাদক কারবারে জড়িত থাকায় প্রতিনিয়ত কৌশল অবলম্বন করছে মাদক ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের সাথে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সীমান্ত ৭১ কি.মি ও জোনের অধীনে ৯৪ কি.মি সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত পিলার ৪২ থেকে ৫৫নং পর্যন্ত বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট (বিওপি) রয়েছে ১৪টি। এবং কক্সবাজার ৩৪বিজিবির নিয়ন্ত্রিত সীমান্ত পিলার ৩১থেকে ৪২ পর্যন্ত বিওপি রয়েছে ৮টি। এর পর সীমান্ত পিলার ৫৫ থেকে আলীকদম ৬৮নং পোয়ামুহুরী পর্যন্ত এলাকা বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন (অরক্ষিত) রয়েছে।
সীমান্তে বসবাসরত একাধিক বাসিন্দা জানান, অরক্ষিত সীমান্তের চেয়ে রাতের আঁধারে অন্য সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের মত ঘটনা ঘটে। তাদের মতে সীমান্ত এলাকা সিসি ক্যামরা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মাদকসহ নানা অপরাধ দূর করা সম্ভব হবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবিকে নিয়ন্ত্রণকারী রামু সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান এই প্রসঙ্গে বলেন, সীমান্তে বিজিবি টহলের পাশাপাশি সীমান্তের কিছু অংশে সিসি ক্যামরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এতে করে ওইসব এলাকায় অপরাধ কমেছে। যেহেতু বর্তমানে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এতে আগামীতে সীমান্তের বাকী অংশ সিসি ক্যামরার আওতায় আসতে পারে।