বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে সুন্দরবন : আনু মুহাম্মদ
তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেদ্রসহ সরকারের সুন্দরবন বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের কারণে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে সুন্দরবনকে বাদ দিচ্ছে ইউনেস্কো। এটা শুধু আমাদের জন্য নয়, সারাবিশ্বের প্রতিবেশ-পরিবেশ সুরক্ষার জন্য হুমকিস্বরূপ।
শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি বিকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিলো। জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গবেষক ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ওই প্রস্তাব আমরা প্রকাশ করেছি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, কম দামে প্রত্যেক ঘরে, শিল্প কলকারখানা ও কৃষিতে নিরবছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছাতে এমন কোনও প্রকল্পের প্রয়াজন নেই যা বাংলাদেশের সর্বনাশ করে। আমরা দেখিয়েছি, রামপাল, মাতারবাড়ি এবং রূপপুরের মতো প্রকল্প না করেও আরও কম দামে ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব। এই প্রস্তাব আমরা সরকারের কাছে দিয়েছি। এতে বিপদ নেই, পরিবেশগত সমস্যা হবে না, দামও কম হবে। এই প্রস্তাবে সরকারের আগ্রহ নেই।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরে ওই প্রস্তাব জমা দেওয়ার দুই বছর পার হয়েছে। কিন্তু সরকার এটা নিয়ে কোনও আলাচনায় যেতে চাইছে না। উল্টো এমন প্রকল্প করছে, যেসব প্রকল্পে পরিবেশ হুমকিতে পড়ছে।’
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘রামপাল, রূপপুর, পায়রাসহ প্রতিটি প্রকল্প ভয়ঙ্কর ধরনের ঋণনির্ভর। সবগুলা প্রকল্পই বিদেশি কোম্পানিকেদ্রিক। কোনটি চীনের, কোনটি রাশিয়ার, বাকিগুলো ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের। এই পাঁচটি দেশের ব্যবসায়িক স্বার্থপূরণ হচ্ছে এসব প্রকল্পে। তারা ঋণ দিয়ে ব্যবসা করছে। তাদের কয়লা সম্পর্কিত যে প্রযুক্তি সেটা তারা বিক্রি করছে। পারমাণবিক প্রযুক্তি-যেটা বিশ্বের কোথাও এখন চলছে না, সেটা রাশিয়া বিক্রি করছে। তাদের পরামর্শকদের চাকরি হচ্ছে। তাদের যেসব অদক্ষ শ্রমিক তাদেরও চাকরি হচ্ছে আমাদের দেশের এ সব প্রকল্পে।’
জাতীয় কমিটির জেলা আহ্বায়ক এস এ রশিদের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় খুলনার সাবেক পৌর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেটট এনায়েত আলী, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আমজাদ হোসেন, বাগেরহাট জেলা কমিটির আহ্বায়ক ফররুখ হাসান জুয়েল, ডা. মনোজ কুমার দাসসহ বিভিন্ন জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।