মাতারবাড়িতে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত কয়েকটি গ্রাম; ঘরবাড়ি ও গাছ-পালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

fec-image

বৈরী আবহাওয়া ও বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের ফলে মহেশখালী উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩/৪ ফুট জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের ষাইটপাড়া বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে প্লাবিত হয়েছে ষাইটপাড়াসহ কয়েকটি গ্রাম। এছাড়া জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি ও উপড়ে গেছে গাছপালা।

ওই এলাকায় নারী পুরুষের কান্নার রোল পড়েছে।উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইট পাড়ার বাসিন্দা মমতাজ বেগম (৬০) আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের খবর নিতে মাঝে মধ্যে স্থানিয় চেয়ারম্যান আসলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা আসেনা। তিনি আরও জানান জোয়ারের পানিতে তার কুঁড়েঘরটি ভেঙে গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুমানোর জন্য নেই কোনে নিরাপদ ব্যবস্থা। কিন্তু এ নিয়ে খুব বেশি আক্ষেপ নেই তার। তবে সবার আগে স্থায়ী বেড়িবাঁধ চান তিনিসহ স্থানিয় বাসিন্দারা ।

স্থানিয় চেয়ারম্যান মাস্টার মোঃ উল্লাহ বলেন, নিম্মচাপের প্রভাবে ২/৩ দিন স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট পানি বেড়ে যায়। তার সঙ্গে বাড়ে বাতাসের গতিবেগ। মানুষের বুকফাটা আহাজারি দেখলে বুক ফেটে যায়। ফলে ষাইটপাড়া বেড়িবাঁধ নতুন করে ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ভেঙে গেছে কয়েকটি ঘরবাড়ি। উত্তর রাজঘাটের বেঁড়িবাধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এখন পশ্চিম ষাইটপাড়ার ভাঙা বাঁধ জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার না করলে পুরো এলাকা সাগরে তলিয়ে যাবে। মাতারবাড়ীকে রক্ষা করা যাবেনা।

তিনি আরও বলেন বেড়িবাঁধটি সংস্কারের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

৭ জুলাই (রবিবার) সকাল ১০ টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের ষাইট পাড়া বেড়ি বাঁধ অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙে গেছে অনেক ঘরবাড়ি। পড়ে গেছে অনেক গাছপালা। বাকি বেড়িবাঁধে বসানো বালুভর্তি জিওটিউব থাকায় তা মোটামুঠি অক্ষত রয়েছে।

স্থানিয়রা জানিয়েছেন, ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ সংস্কার না করার কারণে বারবার ক্ষতির সম্মুখীন হয় উপকূলের এ ইউনিয়ন। ভাঙা বেঁড়িবাধের কারনে বন্যা ও জলাবদ্ধতার ঝুঁকির মধ্যে আছে ২৫ টি গ্রামের অন্তত ৮০ হাজার মানুষ।মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অংগ্যজাই মারমা বলেন, নতুন করে বেড়িবাঁধ ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে শুনেছি। তাই বাঁধটি সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ( পাউবো) কক্সবাজারের নিবার্হী প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজারের নিবার্হী প্রকৌশলী তনয় কুমার ত্রিপুরা বলেন,মাতারবাড়ী ষাইটপাড়া ভাঙা বেড়িবাঁধ জোয়ারের পানি ঠেকাতে ৭০০ মিটার জিওটিউব দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নিমার্ণ করা হবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়ানে বর্ষা শেষে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন