মানিকছড়িতে পেশাদার গরু চোর আটক, গরু উদ্ধার
খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলায় সম্প্রতি অসংখ্য গরু চুরির ঘটনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি গো-খামারিরা আতঙ্কে রয়েছে। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পৃথক দুইটি গরু চুরির ঘটনায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৩টি গরু উদ্ধার করেছে পুলিশ। একটি ঘটনা দফারফা হলেও অন্যটিতে চোর মো. আলাউদ্দীনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী একাধিক পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত দুই মাস ধরে উপজেলার কোথাও না কোথাও গরু চুরির ঘটনা ঘটলেও চোর চক্রের সন্ধান কেউ দিতে পারছিল না। ফলে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছিল না অপরাধীদের! সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে উপজেলার চইক্যাবিল এলাকায় মংশে মারমার গোয়াল ঘর থেকে দুইটি ষাঁড় গরু চুরি হয়। দুইটি গরুর বাজার মূল্য প্রায় এক লাখ টাকা। গরুর মালিক গরু হারানোর শোকে পরদিন মঙ্গলবার পার্শ্ববর্তী উপজেলা গুইমারা গরু বাজারে গিয়ে হাসিলদারদের বিষয়টি অবহিত করেন। এতে মানিকছড়ির জনৈক ব্যক্তি মোহসিন মিয়া ছেলে মো. আলাউদ্দিন আলী গরুক্রেতা সেজে (গরুছাড়া) হাসিল করতে গেলে বিপত্তি বাধে! গরু দেখতে চাইলে ক্রেতা আলাউদ্দিন আলী পালিয়ে যেতে চায়। এক পর্যায়ে তাকে আটক করে নাম, পরিচয় জানতে চাইলে আলাউদ্দিন আলী ইউপি মেম্বারের ( জিম্মায়/জামিনদার) এলাকায় ফিরে আসে। পরে বিষয়টি মানিকছড়ি থানায় অবহিত করে ক্ষতিগ্রস্ত মংশে মারমা। পরে অভিযুক্তকে ডেকে আনলে গরু চুরির ঘটনা স্বীকার করে এবং ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে গরু দুইটি নিয়ে অভিযুক্ত থানায় আসেন! পরে ক্ষতিগ্রস্ত মংশে মারমা মামলা করতে অস্বীকার করায় খোয়া (হারিয়ে) যাওয়া গরু দুইটি নিয়ে বাড়ি ফেরেন মংশে মারমা।
এদিকে বিগত দেড়-দুই মাসে খোয়া যাওয়া অন্য গরুর মালিকেরাও বিষয়টি জানতে পেরে তাঁদের চুরি হওয়া গরু উদ্ধারে তৎপরতা বাড়ায়। মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্পের সামনে থেকে এক মাস আগে বিধবা মনোয়ারা বেগমের একটি গাভী চুরি হওয়ায় ঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ওই মহিলার ছেলে মো.বিপ্লবের রহমান প্রথমে ইউপি সদস্য মো. আসাদুল ইসলামসহ লোকজন নিয়ে আলা উদ্দিন আলীর বাড়ির নির্জনে নির্মিত একটি গরু ঘর তল্লাশি করে তার মায়ের হারিয়ে যাওয়া গরুটি দেখতে পায়। এর পর প্রমাণাদি দেখিয়ে রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় গাভী উদ্ধার করেন!
পরে শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিপ্লব রহমান বাদী হয়ে মানিকছড়ি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০৬, তারিখঃ ৩০/০৯/২০২২ খ্রি.,ধারা: ৪৫৭/৩৮০/৪১১ পেনাল কোড-১৮৬০। পরে পুলিশ আসামি আলাউদ্দিন আলীকে খাগড়াছড়ি আদালতে প্রেরণ করেন।
এদিকে উপজেলার হাতিমুড়া, তিনটহরী, একসত্যাপাড়া, ডাইনছড়ি থেকে চুরি হওয়া গরুর মালিকেরাও তাঁদের গরুর সন্ধানে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহনূর আলম গরু উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জনৈক মংশে মারমার চুরি হওয়া দুইটি গরুর সাথে আলাউদ্দিন আলী জড়িত ছিল! কিন্তু গরুর মালিক মামলা করতে অস্বীকার করায় বিষয়টি জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সমাধা করা হলেও ওই রাতেই অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়ি থেকে আরেকটি গাভী উদ্ধার করা হয়েছে। যার বৈধ কোন প্রমাণাদি আলাউদ্দিন আলী দেখাতে পারেনি। আসলে সে পেশাদার একজন পেশাদার চোর। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মালমা করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।