মানিকছড়ির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক মেশিন স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ

fec-image

মানিকছড়ি উপজেলার অর্ধশত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরা নিশ্চিতকরণে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল মেশিন স্থাপনে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জোর গলায় বলছেন এতে অনিয়ম হয়নি!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে মানিকছড়ি উপজেলার ৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপ বাবদ বরাদ্দ এসেছে ২০ লক্ষ। গড়ে প্রতিটি বিদ্যালয় পেয়েছে ৫০হাজার টাকা। আর এ টাকা থেকে সরকারি নিদের্শনানুযায়ী কেনা হয়েছে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক শিক্ষক হাজিরা মেশিন। প্রতিটি বায়োমেট্রিক মেশিনের দাম দেখানো হয়েছে ৩২ হাজার ৯ শত ৫০টাকা! আর বায়োমেট্রিক মেশিনটির মডেল নং-টিজি-৯০, মেইড ইন চায়না। ৫-১০জন শিক্ষকের হাজিরায় ৩৩ হাজার টাকার মেশিন ব্যবহার নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

গভামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান স্লিপের বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা পেয়েছি। আর এ থেকে বায়োমেট্রিক মেশিন বসানোর নির্দেশনা থাকায় এবং শিক্ষা অফিসের নির্দেশিত কোম্পানীর লোকজন এসে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক মেশিন দিয়ে ৩২ হাজার ৯ শত ৫০ টাকা দাবি করে! এ মেশিনের বাজার মূল্য নিয়ে আমি সন্দেহ পোষণ করি এবং কোম্পানীর লোকজনের সাথে অনেক কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের নিয়ে শিক্ষা অফিসে এসে কর্মকর্তার সামনে লেন-দেন করি। অন্যদিকে তিনটহরী, এয়াতলংপাড়া, নতুন ডাইনছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ১৫টি প্রতিষ্ঠানের সকল বিল ভাউচার খুঁজে দেখা গেছে, ব্যয়ের প্রতিটি বিল-ভাউচার শিক্ষা কর্মকর্তার হাতে লেখা!

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষকরা কেউই মুখ খুলেনি! সকলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছে! অবশিষ্ট ১৭ হাজার টাকা খরচের কোন নমুনা কোথাও দৃশ্যত হয়নি। কিন্তু শিক্ষকরা প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ পাঠদান উপযোগিকরণ ও সংস্কার বরাদ্দ বাবদ প্রাপ্ত অর্থের সাথে নয়-ছয় করে টাকা জায়েয করা চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ!

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, স্লিপের অর্থ ব্যয় করে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক শিক্ষক হাজিরা মেশিন কেনার নির্দেশনা থাকায় নির্ধারিত কোম্পানী থেকে এসব মেশিন কেনা হয়েছে। এতে বিন্দুমাত্র অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ কারো নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন এ প্রসঙ্গে বলেন, অনেক শিক্ষক ও অভিভাবকরা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাকে দেখাতে শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি। অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন