মিয়ানমারে সামরিক বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ নিহত ১৩৩

fec-image

মিয়ানমারের একটি গ্রামে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ নিহতের সংখ্যা ১৩৩ জনে পৌঁছেছে। ক্ষমতাচ্যুত জাতীয় ঐক্য সরকারের মানবাধিকারমন্ত্রী অং মিও মিনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন।

গত মঙ্গলবার মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল সাগাইংয়ের কানবালু শহরে এ হামলা চালিয়েছিল জান্তা সরকারের বিমানবাহিনী। দুই বছর আগে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর এ হামলাকে জান্তা সরকারের সবচেয়ে মারাত্মক হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন কিয়ুনহলার বরাত দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ ব্যক্তি।

অং মিও মিন অভিযোগ করে বলেছেন, হামলার পর সেখানে চিকিৎসকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজগুলো শহরের ওপর দিয়ে উড়তে দেখা গেলেও নতুন করে হামলা হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সাগাইং অঞ্চল বেশ কয়েক মাস ধরেই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মুখপাত্র জেনারেল জ মিন তুন দেশটির সরকারি টেলিভিশনকে বলেছেন, ‘হ্যাঁ, আমরা এই হামলা চালিয়েছি। আমরা আগে থেকেই পা জি গি গ্রামে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কেননা ওই গ্রামে একটি সশস্ত্র সংগঠনের অফিস খোলার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছিল।’

মিয়ানমারের সামরিক সরকার বিরোধী সশস্ত্র সংগঠনগুলো পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফএস) নামে পরিচিত। তাঁরা মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশে সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে আসছে। সাগাইং অঞ্চলে তাঁদের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বলেছেন, ‘একটি দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক এ আইন স্পষ্টভাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। এসব ঘটনার মধ্য অনেকগুলো মানবতা এবং যুদ্ধাপরাধের মধ্য পড়ে। এসবের যথেষ্ট প্রমাণাদি পাওয়া গেছে।’

এদিকে মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, শতাধিক পোড়া ও বিকৃত মৃতদেহ পড়ে আছে। অনেক ভবন ধসে গেছে। উদ্ধারকারীরা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ছবিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

গত মাসে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং গত মাসে বলেছেন, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাজ ‘সন্ত্রাসমূলক’। এসব সংগঠনকে সরকার ভেবেচিন্তে মোকাবিলা করবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: নারী, নিহত, বিমান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন