যুদ্ধ ব্যবসায়ী এরিক প্রিন্স কেন মিয়ানমারে

ডেস্ক রিপোর্ট:

খবরটি বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার জন্য উদ্বেগের। বহুল আলোচিত ‘ব্ল্যাকওয়াটার’-এর প্রতিষ্ঠাতা এরিক প্রিন্স মিয়ানমারেও সামরিক ঠিকাদারির কাজে লিপ্ত হচ্ছেন।

১৯৯৭-এ জন্ম নেওয়া ‘ব্ল্যাকওয়াটার’-এর কথা বাংলাদেশের সংবাদপত্র পাঠকদের অনেকের নিশ্চয়ই মনে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সংস্থাটি ছিল ভাড়াটে সৈনিকদের কারবারি। এরই প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এরিক প্রিন্স যুক্তরাষ্ট্রের নেভি-সীলের সাবেক কর্মকর্তা। ইরাকে নির্মম ধাঁচের খুনোখুনির জন্য এরিক ও তাঁর সংস্থা দুনিয়াব্যাপী কুখ্যাতি পেয়েছিল একদা। সেই সামরিক ঠিকাদার এরিক আবার খবরের শিরোনাম হলেন সম্প্রতি।

ব্ল্যাকওয়াটার থেকে এফএসজি এবং এফএসজি-মিয়ানমার ইরাকসহ বিভিন্ন স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করতে গিয়ে ব্ল্যাকওয়াট বৈশ্বিক যে দুর্নাম কুড়ায়, তা থেকে রেহাই পেতেই কিছুদিন পর্দার আড়ালে থাকে তারা। বিশেষত বারাক ওবামার শাসনামলে। ২০১০-এ এরিক ‘ব্ল্যাকওয়াটার’ বিক্রি করে দেন এবং ২০১১ থেকে সেই সংস্থাটির নাম রাখা হয়েছে একাডেমি!

পরবর্তীকালে এরিক নতুন নামে আরেকটি সংস্থা গড়েন ‘ফ্রন্টিয়ার সার্ভিসেস গ্রুপস’ বা এফএসজি নামে। কৌতূহলোদ্দীপকভাবে সংস্থাটি নিবন্ধিত হয় হংকংয়ে। সম্প্রতি এই কোম্পানি মিয়ানমারে আরেকটি যৌথ উদ্যোগী কোম্পানির গোড়াপত্তন করেছে ‘এফএসজি-মিয়ানমার’ নামে। দেশটির ডিরেক্টরের অব ইনভেস্টমেন্টের নথি থেকে দেখা যায়, এফএসজি-মিয়ানমারের নিবন্ধন নম্বর ১১৭৮২৫৭৭৯।

বলা হচ্ছে, এই কোম্পানি চীন, জাপান, থাইল্যান্ডসহ মিয়ানমারের ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের’ নিরাপত্তা দেবে। নিবন্ধনের পরপরই এফএসজি-মিয়ানমার তাদের রেঙ্গুন কার্যালয় (লোয়ার পাজুনডাং রোড, বোটাহটাং টাউনশিপ) থেকে নিরাপত্তাকর্মী চেয়ে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে।

ব্ল্যাকওয়াটারের অভিজ্ঞতা থেকে ইতিমধ্যে এটা জানা, এরিকের ভাড়াটে ‘সুরক্ষাকর্মী’রা অধিকাংশই হয়ে থাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনী ছেড়ে আসা সৈনিক ও কর্মকর্তা। বেপরোয়া ‘অভিযান’ পরিচালনায় যাঁদের থাকে ‘সুনাম’।

এরিক যখন চীনের ব্যবসায়িক অংশীদার!

ইরাকে এরিক বাহিনীর বহু কুকীর্তির একটি ছিল ২০০৭ সালে বাগদাদের রাস্তায় ১৪ জন বেসামরিক নাগরিককে গুলি করে হত্যা। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিস্তর হইচই হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটনার বিচারও হয়েছে। তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরই এরিককে আবার পূর্ণ উদ্যমে সামরিক ঠিকাদারিতে সক্রিয় হতে দেখা যায়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের কাছে তিনি স্বীকার করেন, কুখ্যাত অতীত সত্ত্বেও ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগেই ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি। ধারণা করা হয়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পকে রাশিয়ার সহায়তা পেতে সাহায্য করেন এরিক।

ট্রাম্পের সঙ্গে এরিকের বোঝাপড়ায় আফগানিস্তানে ব্ল্যাকওয়াটারধর্মী কাজের সুযোগ তৈরির বিষয়ও ছিল। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র বাহিনী সরানোর যে কথাবার্তা চলছে, তারই পটভূমিতে এরিকের প্রস্তাব হলোÑআফগানিস্তান তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হোক। সেখানকার পুরো যুদ্ধকে ‘প্রাইভেটাইজ’ করা যায়! আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঘানি প্রকাশ্যেই এই রকম প্রস্তাবের বিপক্ষে থাকায় তা এগোচ্ছে না।

এভাবে আফগানিস্তানের ঠিকাদারিতে পিছিয়ে পড়লেও দ্রুত এরিক পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের বড় চমক দেখান চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। এ বছরের শুরুতে এ রকম তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে (গার্ডিয়ান, ১১ ফেব্রুয়ারি)Ñচীনের উইঘুর মুসলমানদের অঞ্চলে এরিকের নতুন সংস্থা এফএসজি ‘প্রশিক্ষণকেন্দ্র’ স্থাপন করেছে। এই খবরের অকথিত অংশটুকু আন্দাজ করা কঠিন নয়। কারণ, চীন সরকার উইঘুরদের বিরুদ্ধে লড়ছে। ইতিমধ্যে সরকারি হিসেবেই গ্রেপ্তার হওয়া উইঘুর মুসলমানের সংখ্যা ১৩-১৪ হাজার। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরও বেশি।

ব্যাপক আন্তর্জতিক উদ্বেগের মুখে এফএসজি পরে তাদের ওয়েবসাইট থেকে উইঘুরদের কাশঘরে ‘প্রশিক্ষণকেন্দ্র’ গড়ার সংবাদটি মুছে ফেলে। যে সংবাদটি ২২ জানুয়ারি তারা প্রথম প্রকাশ করেছিল চীনা ভাষায়। তবে এরিকের এফএসজি যে চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ কর্মসূচির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত সেটা কোম্পানি গোপন করছে না। ইউনানের কার্যালয় থেকে তারা এই উদ্যোগের নিরাপত্তা কাজে যুক্ত।

এফএসজির কাঠামোতে এরিক নির্বাহী পরিচালক এবং ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবে থাকলেও চেয়ারম্যান হলেন চীনের রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা চায়না ইন্টারন্যাশনাল ট্রাস্ট ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশনের (সিআইটিআইসি) চেয়ারম্যান চ্যাং জিনমিং। ২০১৪ সালে এরিকই এফএসজির গোড়াপত্তন করলেও পরে শেয়ারের বড় এক অংশ সিআইটিআইসির কাছে বিক্রি করে দেন। বিনিময়ে তারা প্রায় ১০৭ মিলিয়ন ডলার পুঁজি দেয় এরিককে।

সিআইটিআইসির সম্পদমূল্য এখন ৯৭২ বিলিয়ন ডলার। এই সংস্থারই অন্যতম শাখা সিআইটিআইসি-মিয়ানমার আরাকানে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প কাইয়াকপু বন্দর নির্মাণে যুক্ত।

এফএসজি-মিয়ানমারের ৫ ডিরেক্টরের তালিকায় সর্বাগ্রে নাম রয়েছে সান্দার উইন-এর। যিনি মিয়ানমারের মূল্যবান খনিজ পাথর ব্যবসায়ের অন্যতম চরিত্র। আর এই পাথর উত্তোলন নিয়েই কাচিন অঞ্চলে স্থানীয় জনজাতিগুলোর সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী সামরিক বিরোধ। চীন এই পাথর ব্যবসায়ে একচেটিয়া কর্তৃত্ব চাইছে বহুদিন।

ফলে অনুমান করা হচ্ছে, এরিকের সৈনিকেরা কাচিন ও আরাকান পর্যন্ত চলে এসেছে চীনের বিনিয়োগকে নিরাপত্তা দিতে। এফএসজি যে মিয়ানমারে সক্রিয় সেটা বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিশ্চিতও করেছেন তাদের এক কর্মকর্তা। (২২ মার্চ, ডেইলি স্টার, ঢাকা)

এরিকের সঙ্গে চীনের সাম্প্রতিক সখ্যতা আসলে একটা বড় দৃশ্যের সূচ্যগ্র মাত্র। চীন যে ক্রমে অপ্রচলিত নিরাপত্তা যুগে প্রবেশ করছে এটা তারই সাক্ষ্য। যুক্তরাষ্ট্রও পুঁজিতন্ত্রের বিকাশে এ রকম কৌশল অবলম্বন করেছে যুগ যুগ ধরে এবং ব্যাপক নিন্দাও কুড়িয়েছে। চীনের পুঁজিতান্ত্রিক উত্থান যে সেই পুরোনো মূল্যবোধেরই একালের নির্মম সংস্করণমাত্র এরিক-চীন মৈত্রী মৃদুলয়ে সেই বার্তাই দিচ্ছে।

অপ্রচলিত নিরাপত্তার যুগে চীন

সিল্করুট পুনরুজ্জীবনের নামে চীন ইতিমধ্যে প্রায় ৬৫ দেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ ব্যবসায়ে সক্রিয়। তাদের প্রায় ৩০ হাজার ব্যবসায়ী এবং প্রায় ১০ লাখ কর্মী যুক্ত থাকবে এসব প্রকল্পে। সুদান, ইরান, পাকিস্তানসহ এশিয়া-আফ্রিকার অনেক বিবাদিত জনপদে কোটি কোটি ডলার খাটছে চীনের। এদের রক্ষা করতে জল-স্থল সর্বত্র নিরাপত্তা বিনিয়োগও বাড়াতে হচ্ছে। এখনই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চীনের প্রধান তিন জ্বালানি কোম্পানি সিএনপিসি, সিনোপ্যাক এবং কনোক-এর নিরাপত্তা খরচ বছরে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। তারপরও ‘দুর্ঘটনা’ ঘটছেই। ২০১৪ থেকে সিল্করুটের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৪৪ জন চীনা মারা গেছে ‘সন্ত্রাসী’দের হাতে। ফলে অপ্রচলিত নিরাপত্তা চাহিদা চীনের জন্য বিপুল।

বিদেশে নিরাপত্তা প্রশ্ন দেখতে চীন পৃথক একটি সংস্থাও গঠন করেছে। কিন্তু নিজেদের অভ্যন্তরীণ অপ্রচলিত নিরাপত্তা সামর্থ্য দিয়ে এ খাতে দেশটির উদীয়মান চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধবিগ্রহের অভিজ্ঞতা চীনের প্রাক্তন সৈনিকদের কম।

চীনে প্রায় ৫ হাজার সিকিউরিটি ফার্ম গড়ে উঠেছে ইতিমধ্যে। কিন্তু তার মাত্র ছয়টি বিদেশে কাজের উপযুক্ততা সনদ পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশটির দক্ষতা বাড়াতে আরও সময় প্রয়োজন। এর মাঝেই নির্বিঘে বিভিন্ন দেশ থেকে মুনাফা আনতে হলে এরিক প্রিন্সের মতো ভাড়াটে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দরকার চীনের। এরিকের জন্যও এটা এক বিরাট বাজার। গত বছর সাউথ চায়না মনিং পোস্টকে এরিকের এফএসজি লিখিতভাবে জানিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন চীনা বিনিয়োগকে তারা ‘সুরক্ষা’ দেয়। বেসামরিক নিরাপত্তাকর্মী তৈরির জন্য চীনের রাজধানীতে গড়ে ওঠা সবচেয়ে বড় কলেজটির মালিকানার একাংশও এফএসজি পেয়েছে বলে খবর রয়েছে।

অর্থাৎ চীনের হাত ধরে এরিক তাঁর পুরোনো কর্মজগৎকে নতুন উদ্যমে পুনর্গঠিত করতে পারছেন। সেই সূত্রেই যে তাঁর মিয়ানমার আসা তা আন্দাজ করা কঠিন নয়।

এরিকের কর্মীরা কেন মিয়ানমারে আসবেন

চীন মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী এবং সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। দেশটিতে চীনের কেবল জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিনিয়োগই আছে অন্তত ৩১ স্থানে। এর মধ্যে কাচিনে তিন বিলিয়ন ডলারের মেইটসোন মেগা ড্যাম প্রকল্প জনবিক্ষোভের মুখে থমকে আছে। একই অঞ্চলে রয়েছে মূল্যবান পাথরের খনি, যা চীনের ব্যবসায়ীদের জন্য দারুণ আগ্রহ–উদ্দীপক এক স্থান। কিন্তু কাচিনে রয়েছে সশস্ত্র জাতীয়তাবাদী আন্দোলনও যারা স্থানীয় সম্পদের জনহিস্যার জন্য লড়ছে। একই ধরনের লড়াই চলছে আরাকানে। অথচ এখানেই চীন গভীর সমুদ্রবন্দর এবং পাইপলাইন প্রকল্পে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে রেখেছে। এ রকম অবস্থায় জাতিগত সংঘাতে জর্জরিত মিয়ানমারের নীতিনির্ধারক এবং চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘অপ্রচলিত নিরাপত্তাকাঠামো’ দরকার।

শান্তি ও ব্যবসার মধ্যে চীন কখনো প্রথমটিকে দ্বিতীয়টির চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে এমন দেখা যায়নি। কাচিন ও আরাকান অঞ্চলে দুরূহ সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে মানবাধিকার দলনের জন্য নিন্দিত মিয়ানমার বাহিনীর জন্যও অপ্রচলিত নিরাপত্তা সহায়তা ভালো কাজে দিতে পারে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত জুন থেকে এরিকের প্রতিষ্ঠান মিয়ানমারে সক্রিয়। তবে ওখানে তারা ঠিক কী ধরনের ‘অভিযান’-এ লিপ্ত এবং কোন অঞ্চলে কোন ধরনের বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেসব বিষয়ে কোনো তথ্য পাচ্ছে না স্থানীয় নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো। ‘পাং কু’ নামে স্থানীয় এক এনজিওর কর্মসূচি কর্মকর্তা দোই রার মতে, এফএসজিকে কাজ চালাতে অনুমতি দেওয়ার আগে এই কোম্পানি ও তার কর্মকর্তাদের পূর্বতন রেকর্ড এবং তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ বিবেচনায় রাখা জরুরি।

বিষয়টি যেভাবে বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের

চীনের সঙ্গে এরিকের হৃদ্যতা বিশ্বে ভাড়াটে সৈনিকতার নতুন এক বিশাল বাজারের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মুশকিল হলো, অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশ থেকে এ রকম বিষয়ে গোপন তথ্য যত সহজে বের করতে পারতেনÑচীন ও মিয়ানমারের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়। তবে এফএসজি-মিয়ানমারের কার্যক্রম নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ ঘটেছে। ইতিমধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলের ঘটনাবলির মোটাদাগের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ার শিকার বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের তাদের পুরোনো বসতিতে ফেরত পাঠাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এর মধ্যেই রাখাইনে বৌদ্ধপ্রধান আরাকান আর্মির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সে ক্ষেত্রে সংখ্যায় অল্প হলেও বৌদ্ধ রাখাইনদেরও উদ্বাস্তু হিসেবে নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

এ রকম অবস্থায় এরিক প্রিন্সের ভাড়াটে নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইনেও কোনো রকম অভিযানে যুক্ত হবে কি না সেটা এক উদ্বেগজনক প্রশ্ন। রাখাইনে চীনের বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে। ফলে সেখানে বিনিয়োগের নিরাপত্তায় এফএসজি যুক্ত হয়ে পড়লে স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ পেতে পারে। সরকারের প্রতিপক্ষ কাচিন আর্মি ও আরাকান আর্মি নিঃসন্দেহে বিষয়টি নেতিবাচকভাবেই দেখবে, যা মুসলমান রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ রাখাইন উদ্বাস্তুদের বাংলাদেশ থেকে সেখানে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টাকে আরও বিলম্বিত করতে পারে।

আলতাফ পারভেজ: দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে গবেষক

সূত্র: প্রথম আলো

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন