রাঙ্গামাটিতে আনারসের বাম্পার ফলন: দাম নিয়ে হতাশ চাষীরা
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
আগাম আনারসে ভরপুর হয়ে উঠেছে রাঙ্গামাটির বাজারগুলো। চারিদিকে টসটসে আনারসের গন্ধে মৌ মৌ করছে বাজার। তবে আগাম আনারসের ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশ চাষীরা।
চাষী ও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে আনারসের প্রচুর উৎপাদন হচ্ছে। সবচেয়ে অধিক উৎপাদন হচ্ছে নানিয়ারচরে।
মৌসুমের আগেই হাটবাজারে এসেছে প্রচুর আনারস। বাজারে প্রতিটি আনারস বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। তবে কৃষকদের কাছে পাইকাররা কিনছেন মাত্র ৪-৫ টাকায়। নানিয়ারচরসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আনারস জেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে।
স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে রাঙ্গামাটির আনারস যাচ্ছে ঢাকা, শরীতপুর ও চট্টগ্রামসহ বাইরের জেলায়। নানিয়ারচর উপজেলা থেকে শহরের বনরূপা সমতাঘাট বাজারে আনারস বিক্রি করতে আসা চাষী প্রীতিসন চাকমা বলেন, আগাম আনারস চাষ করতে যা খরচ হচ্ছে তা পুষিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ আনারসের প্রচুর বাম্পার ফলনের ফলে ন্যায্য দামও পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, নিজেদের উৎপাদিত প্রচুর আনারস খুচরা বিক্রি করা সম্ভব নয়। বাজারে আনা সব আনারস একসঙ্গে বিক্রি করতে হয় পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। খুচরা বিক্রিতে দাম বেশি পাওয়া গেলেও তাড়াতাড়ি বিক্রি করতে না পারলে আনারসগুলো পচে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দাম কম পাওয়া গেলেও বাজারে নিয়ে আসা আনারস পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, জেলায় বেশিভাগই আনারসের চাষ হয় নানিয়ারচর উজেলায়। তাছাড় রাঙ্গামাটি সদর ও লংগদু উপজেলায় ও প্রচুর আনারসের চাষাবাদ হচ্ছে। সাধারণত আনারসের উৎপাদন হয় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে। কিন্তু বর্তমানে যে আগাম আনারসের উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে ‘রাইফেন’ নামের হরমোন জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে চাষাবাদ করা হচ্ছে। এই আনারসের জাতের নাম হচ্ছে ‘হানিকুইন’।
তিনি আরও বলেন, এবার মৌসুমে জেলায় প্রায় এক হাজার আটশত হেক্টর জমিতে আনারসের চাষাবাদ হয়েছে। তবে নানিয়ারচরে এক হাজার হেক্টর জমিতে আনারসের আবাদ হয়েছে। ফলন প্রচুর হওয়ায় আনারস বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে জেলার বাইরেও।
রাইফেন’ হরমোন দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যেসব আনারসের উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো মানুষের কোন ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান।