রাঙামাটিতে মুজিববর্ষ সফল করতে প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ

fec-image

রাঙামাটিতে মুজিববর্ষ ২০২০ সফল করতে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তাদের নির্দেশ দিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা। বর্ষটি সফল করার লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

চেয়ারম্যান বৃষকেতু আরও বলেন, জেলার আওতাধীন প্রত্যেক উপজেলার গ্রাম-শহর পরিছন্নসহ নানা উন্নয়ন কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এ জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

চেয়ারম্যান স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাদের উদ্দেশ্যে জানান, সরকারের উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে সারাদেশের ন্যায় আমাদের অঞ্চলও উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ছোঁয়া লাগবে।

জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সিভিল সার্জন ডা: শহীদ তালুকদার, জেলা পরিষদের সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী, থোয়াই চিং মারমা, ত্রিদীব কান্তি দাশ, সান্তনা চাকমা, পরিষদ সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, অমিত চাকমা রাজু, পরিষদ সদস্য সাধন মনি চাকমা, মনোয়ারা আক্তার জাহান, রেমলিয়ানা পাংখোয়া, পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমাসহ জেলা পরিষদ হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার বলেন, বিগত মাসে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ৯৬০ হলেও চলতি মাসে ৬২৬জন পাওয়া গেছে। সুতরাং আগের তুলনায় চলতি বছরে ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ অনেকাংশে কমেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতেও ডেলিভারি সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কম্যুনিটি ক্লিনিকে এ পর্যন্ত ৩২ হাজার ৫৮৬জন রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছে। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে সকল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, বর্তমানে আমনের মৌসুম চলছে। গত ৯-১০ নভেম্বর ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাব এ জেলায় না পড়ায় শাক-সবজির তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। এছাড়া নিরাপদ সবজি ও ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

তিনি বলেন, সামনে বোরো মৌসুমে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকদেরকে সহায়তার জন্য জেলা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে বীজ ও ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পরিণয় চাকমা বলেন, বর্তমানে সব প্রাইমারী স্কুলে সমাপনী পরীক্ষা চলছে। এবারে ১১ হাজার ৩৮জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া জেলার চেলাছড়া ও আটারকছড়া আবাসিক ছাত্রাবাস সমূহের ব্যয় রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র লেখা হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, ইতিমধ্যে দেশের ২০৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। জেলা ও উপজেলার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৯৫% নতুন বই চলে এসেছে যা বছরের ১ম দিনেই বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক মেধাবৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে পরিষদের সাথে সভা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এ লক্ষ্যে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ বরুন কুমার দত্ত বলেন, অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃত্রিম প্রজনন, চিকিৎসা সেবা, টিকা প্রদান, প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক কার্যক্রম করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত গবাদি পশুকে চিকিৎসা ও প্রোডাকশন কার্যক্রম যথারীতি চলছে।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অঃদাঃ) মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেকার যুবকদের বর্তমানে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, আসামবস্তী, নানিয়ারচর ও কাপ্তাইয়ের উদ্দ্যানতত্ববিদরা জানান, নার্সারিতে শীতকালীন শাক-সবজি, ফুলের চারা ও টার্গেট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজাতি গাছের চারা-কলাম উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে।

এছাড়া, সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন