শুরু হলো দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্ধার কাজ

ভয়াবহ এই ভবন ধসে এই পর্যন্ত ৩৯৮টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২৪৪৪ জনকে।  ৩৫১ টি লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্ত করা হয়েছে। তবে আগুনে কতজনের লাশ পুড়ে গেছে তা নিশ্চিত নয়।

ব

পার্বত্য নিউজ ডেস্ক

ক্ষীণ আশা রেখেই সতর্কতার সাথে সাভারে ভবন ধসের ১১০ ঘণ্টা পর ভারী সরঞ্জামের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ সরানো শুরু হয়েছে।  রোববার রাত সাড়ে ১১টায় দুটি হাইড্রোলিক ক্রেন দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু হয়। প্রথমেই একটি ক্রেন দিয়ে সরানো হয় প্রায় অর্ধেক দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিলার।

ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে চার দিন পরও জীবিতদের সন্ধান মেলায় ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করে কেটে কেটে গর্ত তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চালাচ্ছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। রোববার দুপুরেও জীবিত উদ্ধার হন পাঁচজন।   উদ্ধারকর্মীদের ধারণা অনুযায়ী সর্বশেষ জীবিত একজনকে উদ্ধারে রাত সোয়া ১০টা পর্যন্ত চেষ্টা চলে। কিন্তু শাহীনা নামে ওই পোশাককর্মীকে উদ্ধারে ভবনের কনক্রিটের রড কাটার সময় আগুন ধরে যায়। এতে আহত হন তিনজন উদ্ধারকর্মী।

সেখানে উদ্ধার অভিযানে থাকা এক দমকলকর্মী বেরিয়ে আসার সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, তারা ওই নারীকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছেন। শাহীনা মারা গেছেন।

এরপরই বড় ধরনের উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। রাতে এক পর্যায়ে ধসে পড়া ভবনের চৌহদ্দী থেকে সাংবাদিকসহ সবাইকে সরিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ছিলেন শুধু উদ্ধারকাজে যুক্ত সেনাবাহিনী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা।

ভারী সরঞ্জাম ব্যবহার শুরুর আগ মুহূর্তে সাংবাদিকদের ডেকে নেয়া হয় ৩৫ হাজার বর্গফুট এলাকাজুড়ে নির্মিত এই ভবনের পেছন দিকে, যে ভবনটি যুবলীগ নেতা সোহেল রানা বেআইনিভাবে নির্মাণের অভিযোগে ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, “কেউ জীবিত নেই বলে ধারণা করেই আমরা দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্ধার কাজ শুরু করেছি।” তবে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা সময় নিয়ে এগোচ্ছি। ধীরে ধীরে কাজ করা হবে।”কেউ বেঁচে থাকলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত যেন না হন সেজন্য এই সতর্কতা বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমল।

উদ্ধার অভিযানে থাকা বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সঞ্জিব সাহা জানান, বুলডোজার, ক্রেন, ফর্কলিফ্টার, ডাম্পার, এক্সকেভেটরসহ বিভিন্ন ভারী যন্ত্র আনা হয়েছে।

ভারী সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে ধ্বংসস্তূপে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে রাত ১০টা ৫ মিনিটের দিকে। শাহীনাকে উদ্ধারে রড কাটার সময় স্ফূলিঙ্গ থেকে গার্মেন্টসের কাপড়ে আগুন লেগে যায়।

ধসে পড়া এই ভবনে পাঁচটি কারখানা ছিল। মঙ্গলবার ফাটল দেখা দিলেও বুধবার মালিক পক্ষ কাজে যোগ দিতে বাধ্য করে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন