কক্সবাজারে নিখোঁজ রেমিটেন্সযোদ্ধাকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুতি

fec-image

গত বছরের ২১ অক্টোবর সৌদি আরব থেকে দেশে ছুটিতে আসেন কক্সবাজার বদর মোকাম এলাকার বাসিন্দা হাবিব উল্লাহ (২৮)। কিন্তু দেশে আসার ১০ দিনের মাথায় নিখোঁজ হন। অদ্যবধি তার সন্ধান মেলেনি। যে কারণে পরিবারে চলছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

রেমিটেন্সযোদ্ধা হাবিব উল্লাহকে জীবিত বা মৃত ফেরত পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়েছেন স্বজনেরা।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে হাবিব উল্লাহর পক্ষে বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভগ্নিপতি আহমদ ছফা।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের ২ নভেম্বর নাসরিন আক্তার নামের এক মেয়ের ফোনে ঘর থেকে বের হয় হাবিব। এরপর থেকে বাড়িতে ফিরেনি। ব্যবহৃত ফোনটিও বন্ধ। দীর্ঘ ৮ মাস হলো। কোন হদিস নাই। আমরা উদ্বিগ্ন। হাবিব উল্লাহকে ফিরে পেতে সবার সহযোগিতা চাই।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর থেকে সম্ভাব্য সবস্থানে খোঁজাখুঁজি করেছি। সন্ধান মেলেনি। নববিবাহিতা হাবিব উল্লাহর স্ত্রী, মা-বাবাসহ স্বজনেরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছে। নাসরিন আক্তারের ব্যবহারের ০১৮৮…২৪৯, ০১৭১৮…৯৫৭, ০১৩০৬…৭৮১ মোবাইল নাম্বারের কললিস্ট বের করলে আসল রহস্য উদঘাটন হবে।

আহমদ ছফা বলেন, হাবিব উল্লাহ একজন রেমিটেন্সযোদ্ধা। তার নামে দেশের কোন থানায় মামলা, অভিযোগ, কিংবা সাধারণ ডায়েরিও নেই। তিনি কক্সবাজার পৌর শহরের বদরমোকাম এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে। সৌদি আরবে পিতার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তিনি পরিচালনা করেন।

প্রধান অভিযুক্ত নাসরিন আক্তার চট্টগ্রাম কর্ণফুলি ৮ নং ওয়ার্ডের ইছা নগর মির্জাপাড়ার মির্জা মোহাম্মদ জানে আলমের স্ত্রী। তার সঙ্গে হাবিব উল্লাহর মুঠোফোনে ঘনিষ্টতা হয়। সেই ‍সুবাদে তাকে ফাঁদে ফেলা হয় বলে স্বজনদের ধারণা।

এদিকে, হাবিব উল্লাহ নিখোঁজের ঘটনায় নাসরিন আক্তার ও তার স্বামী মির্জা মোহাম্মদ জানে আলমের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন প্রবাসী হাবিব উল্লাহর পিতা আবদুল হাকিম (৬৫)। মামলাটি তদন্তাধীন।

মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর বিকাল ৩টার দিকে হাবিব উল্লাহকে কক্সবাজার বাসটার্মিনাল থেকে অপহরণ করা হয়। রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি ব্রিজ এলাকায় ছিল বলে ফোনে জানায়। কিন্তু রাত ১০টার পর থেকে তার ফোন বন্ধ। এ ঘটনায় ২ নভেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ডায়েরি করা হয়েছিল। যার নং-১০৬। ৩ নভেম্বর ৩টি নাম্বার থেকে ফোন করে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। প্রাণরক্ষায় ৫টি নাম্বারে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রদান করেন। টাকা নিয়েও হাবিব উল্লাহকে ছেড়ে দেয়নি অপহরণকারীচক্র। উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের দারস্থ হয় ভিকটিম পরিবারের সদস্যরা।

মামলা ও নিখোঁজ ডায়েরীর পরও হাবিব উল্লাহর বিষয়ে ক্লু না পাওয়ায় পরিবারে এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সন্ধান চেয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিতা আবদুল হাকিম, মা রেহেনা বেগম ও স্ত্রী আফরিন সুলতানা রিপা মনিসহ স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন