৮ মে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাচন : চাচা-ভাতিজার প্রতিদ্বন্দ্বিতা
৮ মে বুধবার কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাচনের আজ সোমবার রাতেই মধ্য প্রার্থীদের প্রচারণা বন্ধ হচ্ছে। চেয়ারম্যান পদে ৩ জনেরই সমান তালে ভোটের লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা পাল্টে গেছে। চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী (মোটরসাইকেল), তার ভাতিজা ব্যারিস্টার মুহাম্মদ হানিফ বিন কাশেম (ঘোরা) ও আছহাব উদ্দিন কুতুবী আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠের প্রচারণা প্রায় শেষ করেছেন।
বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত উপজেলা এটি। প্রধান দুটি দল বিহীন নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান পদে থেকেও মাইকিং প্রচারণা বাদে দলীয় শো-ডাউনে ও গণসংযোগে অনেকটাই ব্যর্থ আওয়ামী লীগ। তৃণমূল ছাড়াও সহযোগী সংগঠনের বেশিরভাগ নেতা-কর্মীরা অজ্ঞাত কারণে বা দলীয় কোন্দলে প্রার্থীর পক্ষে না থাকার মতই চোখে পড়েছে।
এই সুযোগে কোন রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় ছাড়াই নিজ গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে ব্যারিস্টার হানিফ বিন কাশেম প্রচারণা, মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের গণসংযোগ ছিল চোখে পড়ার মত। প্রতিটি গ্রামেই তরুণ এই প্রার্থীর পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে ভোটাররা মনে করেন।
ঘোড়া প্রতীকের কর্মী বড়ঘোপ কাইন্দাইল্যা পাড়ার শারমিন আক্তার বলেন, প্রতিটি গ্রামেই মহিলাদের কাছে ঘোড়া মার্কার জয়ধ্বনি পাচ্ছেন। তারা শতভাগ আশাবাদী নির্বাচনে জয়ের।
ধুরুংবাজারের হোটেল ম্যানেজার নাজির হোসেন, মুদি দোকানদার নুরুল ইসলাম বলেন, ভোটে হুমকি বা বাধা প্রদান না করা হলে ভোটাররা কেন্দ্রে যাবে, ঘোড়া মার্কায় ভোট দেবে।
দ্বীপের উত্তর জোনের ধনাঢ্য প্রার্থী আছহাব উদ্দিন চাইছেন জনপ্রিয়তা না থাকলেও ভোটারদের থেকে কৌশলে কিনে নেবেন-এমন আবাস পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ইতিমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে শত শত কর্মী কাজে লাগিয়েছেন বলে তেলিয়াকাটা গ্রামের রেজাউল করিম নামের একজন ভোটার জানান। উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান হালিম সিকদার টাকার খেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও তার চাচা একই প্রক্রিয়ায় পারবেন না বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে যাওয়ায় তার সমর্থকদের মন ভেঙে গেছে। প্রার্থী ছাড়া নির্বাচনী কঠিন সময়ে প্রচারণা ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে মাঠে। আর এই সুযোগে অপর দু“প্রার্থী যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছে জয়ের লক্ষ্যে। নতুন প্রার্থী দু‘জন হলেও তরুণের দিকে যাচ্ছে ভোটাররা। পরিবর্তন চান অনেকেই। আর এই সুযোগ পেলে তারা ঘোড়া প্রতীকেই চেয়ারম্যান পদে ভোট দিতে চান।
অপর দিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্ধিতায় ভোটাররা রাখছেন আকবর খান (উড়োজাহাজ) ও জুনাইদুল হককে (চশমা)। উপজেলার সর্বত্রই আকবর খানের পাল্লাই ভারী মনে করেন তারা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাছিনা আক্তার বিউটি (কলসি) ও ছৈয়দা মেহেরুন্নেছা (ফুটবল)। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান হাছিনা আক্তারের প্রচারণা ও জনসমর্থনে তিনিই এগিয়ে। ফলে ৮ মে নির্বাচনের জনগণের ও সাধারণ ভোটারদের জরিপে আগামী উপজেলা পরিষদ হতে পারে হানিফ, আকবর বিউটি জুটি।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটানিং অফিসার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার ৩৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। শান্তিপূর্ণ ও প্রভাবমুক্ত পরিবেশে ভোটাররা ভোট প্রয়োগ করতে পারবে বলে তিনি জানান।