ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার ব্যাপারে জাতিসংঘে প্রস্তাব আনা হচ্ছে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে বুধবার একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হচ্ছে। এ উদ্যোগকে বানচাল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র। ওই প্রস্তাবে আগামী দু’বছরের মধ্যে ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ওই প্রস্তাব তুলবে জর্দান। কেননা জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদ না পওয়ায় ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের পক্ষে ওই প্রস্তাব তোলা সম্ভব হচ্ছে না। নিয়মানুযায়ী নিরাপত্তা পরিষদে কেবল জাতিসংঘ সদস্যরাই কোনো প্রস্তাব আনার সুযোগ পেয়ে থাকে। যদিও ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে জাতিসংঘ।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের এক উর্ধ্বতন উপদেষ্টা মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন,‘আমরা আগামীকাল(বুধবার) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের প্রস্তাবটি পেশ করব।’
এদিকে ফিলিস্তিনিদের এই প্রচেষ্টাকে বানচাল করতে তৎপর রয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এই খসড়া প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘এ ধরণের প্রচেষ্টা ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং আদতে মধ্যপ্রাচ্যে কোনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা এ ধরণের প্রতিটি পদক্ষেপ প্রতিহত করার চেষ্টা করব।’ সোমবার রোমে জন কেরির সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি আরো দাবি করেন, `ইসরায়েল পশ্চিম তীর ত্যাগ করলে ইসলামি চরমপন্থিরা জেরুজালেমের প্রাণকেন্দ্র এবং তেল আবিবের শহরতলীগুলোতে পৌঁছে যাবে।’
এছাড়া ওই ফিলিস্তিনি প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে নিজেদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। লন্ডনে ফিলিস্তিনী কর্মকর্তারা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি তাদের এ হুমকি দেন বলে আল জাজিরা জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও জাতিসংঘে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার দাবিতে ওপর আনীত বিভিন্ন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দিয়েছিল।
তবে এ বিষয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রধান আলোচক সায়েব ইরাকাত বলেছেন, ওয়াশিংটন এবার তাদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভেটো দিলে তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে ধর্ণা দেবেন। এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কেননা ফিলিস্তিনীরা ইচ্ছে করলে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলতে পারে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি বিকল্প প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে তাদের ওই প্রস্তাবে পশ্চিম তীর থেকে ইসরায়েলের প্রত্যাহারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। ওই প্রস্তাবে মধ্য প্রাচ্যে সংঘাত বন্ধে দুই রাষ্ট্রের সহাবস্থান নিয়ে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলকে দু’বছরের মধ্যে একটি সমাধান খুঁজে বের করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।