সন্তু লারমার সাথে বোমাং রাজার বৈঠক: আলোচনার মূলেই ছিল পাহাড়ীদের ভূমি অধিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
তিন দিনের সফরে এসে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)’র সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বান্দরবান বোমাং রাজা প্রকৌশলী উচ প্রু’র সাথে প্রায় তিন ঘন্টা বৈঠক করেছেন।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বোমাং রাজ বাড়িতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাদের মধ্যে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে সহায়তার বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্য হেডম্যান এসোসিয়েসনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক টি মং প্রু, হেডম্যান নু মং প্রু, প্রু সং উ, মংথোয়াই চিং, সাচপ্রু, মং নু, চহ্লা প্রু জিমি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিকেলে সার্কিট হাউজে বান্দরবানের বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান কার্বারীরা সন্তু লারমার সাথে বৈঠক করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক টি মং প্রু জানান, বৈঠকে সরকারী, বেসরকারী ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন ভূমি বিরোধ নিয়ে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনকে সহায়তার বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। মূলত: পাহাড়ে বসবাসকারী পাহাড়ীদের ভূমি অধিকার ও ভূমি বিরোধে নিষ্পত্তি কমিশনকে সহায়তার বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। এছাড়া বার্ধক্য জনিত কারণে বোমাং রাজা ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে উপস্থিত হতে না পারলে কিভাবে তার প্রতিনিধি দায়ীত্ব পালন করবে সে বিষয়েও আলাপ হয়েছে বলে জানা যায়।
অন্য একটি সূত্র জানায়, সরকারের স্থাপিত বিভিন্ন নিরাপত্তা ক্যাম্প, বনবিভাগ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মৌজা হেডম্যানদের বাৎসরিক খাজনা না দেয়ায় পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনকে জানানো হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
রবিবার রাংগামাটি জেলা সদর থেকে সড়কপথে সরাসরি সার্কিট হাউসে গিয়ে অবস্থান নেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে তিনি কোন কথা বলেননি সন্তু লারমা। সার্কিট হাউসে স্বাগত জানান জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক এবং পুলিশ সুপার সনজিত কুমার রায়। পার্বত্য জনসংহতি সমিতির নেতা ও রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান অংথোয়াইচিং মারমা এবং থানছি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা উপস্থিত ছিলেন। তবে নিজ দল জেএসএস’র নেতাকর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
শনিবার থেকেই জেলা শহরের মোড়ে মোড়ে সন্তু লারমার সফরের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ মানুষ কালো পতাকা প্রদর্শণ করেন। গত ১৩ জুন রাতে জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সদর উপজেলার জামছড়ি পাড়া থেকে সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মংপু মারমাকে অপহরণ করে গুম করেছে। তার কোন সন্ধান এখনও মেলেনি। উদ্ধারের দাবীতে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশ এবং সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচিও পালন করে। এরপরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি আওয়ামী নেতা মং প্রু’কে।
এদিকে এ অপহরণকে ঘিরে জেএসএস এর অর্ধশত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সদর থানায় মংপু মারমাকে অপহরণ করার ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে। প্রায় ১২জন জেএসএস নেতা কর্মী কারাগারে রয়েছেন।