ইয়াবা পাচারের অভিযোগে বৌদ্ধ বিহারের পুরোহিতসহ গ্রেপ্তার ৩
বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে ডিপু চাকমা একজন প্রথিতযশা ভিক্ষু হবেন। সমাজ থেকে হিংসা–বিদ্বেষ দূর করে আলো ছড়াবেন। ডিপো সেই পথে অনেক দূরও এগিয়েছিলেন। গত দুই বছর খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির আদর্শ বৌদ্ববিহারের প্রধান পুরোহিত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এরই মধ্যে তিনি হঠাৎ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। কয়েক মাস জুয়া খেলে প্রায় ২০ লাখ টাকা হারান। পরে জড়িয়ে পড়েন ইয়াবা পাচারে।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডিপু চাকমাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্যটি জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) লালবাগ বিভাগ। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন আপেল বড়ুয়া ও মোমিন হাওলাদার।
ডিবি লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ওই ৩ জনের কাছ থেকে ১৬ হাজার ইয়াবা বড়ি ও ৩টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে।
ডিবি বলছে, ডিপু চাকমা ২০১২ সালে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে দিঘীনালা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ২০১৫ সালে তিনি রাঙামাটি রাজবিহার পালি কলেজে থেকে পালি শাস্ত্রে ডিপ্লোমা করেন। পরে দীক্ষা নেন পুরোহিত হওয়ার, পরেন কঠিন চিবর ও গেরুয়া বসন। বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে পুরোহিতের দায়িত্ব পালন শেষে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন বৌদ্ধ বিহারের প্রধান হিসেবে এক বছর দায়িত্ব পালন করেন। পরে দায়িত্ব গ্রহণ করেন খাগড়াছড়ি জেলা সদরে। সেখান থেকে বদলি হয়ে সর্বশেষ খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি আদর্শ বৌদ্ববিহারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ডিবি জানায়, আদর্শ বৌদ্ববিহারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ডিপু অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। নিজের বেতন, দানদক্ষিণা, বাবার ভিটামাটি বিক্রির টাকা এবং মায়ের ধার নেওয়া দেড় লাখসহ প্রায় ২০ লাখ টাকা জুয়া খেলে নষ্ট করেন। পরে ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ও তাঁর সহযোগী আপেল বড়ুয়া কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা থেকে ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় আসতেন। আর মোমিন হাওলাদার তাঁদের কাছ থেকে ইয়াবা নিয়ে তা ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় বিক্রি করতেন।