উখিয়ায় চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডার রহস্যের কিনারা পায়নি এখনো

fec-image

কক্সবাজারের উখিয়ায় চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডার ঘটনার রহস্যের কিনারা পায়নি এখনও আইন শৃঙ্খলাকারী বাহিনী। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে ৯ অক্টোবর রাতে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো নিহত সনি বড়ুয়া (৬) এর মা রিপু বড়ুয়া এবং কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার ভাগ্নী জামাই রামু রাজারকুল এলাকার উজ্জ্বল বড়ুয়া।

এদিকে এক মাস দশ দিন অতিবাহিত হলেও হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে সংবাদ সম্মেলন এবং ১৫ নভেম্বর বিকেলে কোটবাজার স্টেশনে সম্মিলিত উখিয়াবাসী উদ্যোগে মানববন্ধন করা হবে বলে জানিয়েছেন কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়া এবং সমন্বয়ক শিক্ষক মেধু কুমার বড়ুয়া।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর পুলক বড়ুয়া বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের শনাক্তের কাজ চলছে। আশা করি শিগগিরই প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব। এর আগে উখিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন তদন্তের দায়িত্বে ছিল। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর তার পরিবর্তে ইন্সপেক্টর মর্যাদার কর্মকর্তা উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মজুমদারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। গত ১০ অক্টোবর চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের মামলা আরও নিবিড়ভাবে তদন্তের জন্য পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) কে হস্তান্তর করা হয়।

স্বজনহারা রোকেন বড়ুয়া বলেন, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট তদন্ত সংস্থা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোন কিছু জানাতে পারেনি। হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদ্ঘাটনে স্বজনদের ভুমিকা কি জানতে চাইলে রোকেন বলেন, সবাই যে যার মতো নিরব ভুমিকা পালন করছে। ভাইদের মধ্যে আমরা সবাই আলাদা আলাদা থাকি। তবে শিপু বড়ুয়া’র পরিবারের সাথে আগে থেকে সম্পর্ক ভালো ছিল না। বড় ভাই রবিসন বড়ুয়া আছে আছে, নাই নাই।

রোকেন বলেন, তদন্তের স্বার্থে আমাকে প্রায় সময় কক্সবাজারে থাকতে হয়। বাড়িতে সন্ধ্যাকালীন বাতি দেওয়ার মতো একজন লোকও নেই এখন। সন্দেহজনক নিকটাত্নীয় আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, হত্যাকারীর সাথে কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। হত্যাকারী যেই হউক না কেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রোকনের বড় ভাই রবিসন বড়ুয়া বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নিকটত্নীদের কেউ নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদেরও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এদিকে ঘটনার পর থেকে আচরণবিধি এবং নানা কারণে সন্দেহের তীর শিপু বড়ুয়ার স্ত্রী রিপু বড়ুয়ার দিকে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। তবে নিহত চারজনের মধ্যে সনি বড়ুয়া খোদ তার (রিপু) মেয়ে হওয়ায় রহস্য দেখা দিয়েছে। অপরদিকে সন্দেহজনক আটক ভাগ্নীয় জামাই উজ্জ্বল বড়ুয়াও পায়ের আঘাতের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

উল্লেখ্য, ২৫ সেপ্টেম্বর রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার বাড়ীতে তার মা সখি বালা বড়ুয়া (৬৫), স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৫), একমাত্র পুত্র রবিন বড়ুয়া (৫) ও ভাইজি সনি বড়ুয়া (৬)কে জবাই করে দুর্বৃত্তরা। এদের মধ্যে নিহত রবিন বড়ুয়া ও সনি বড়ুয়া রুমঁখাপালং হাতির ঘোনা সাইরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শিক্ষার্থী ছিল।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত মিলা বড়ুয়া’র পিতা শশাঙ্ক বড়ুয়া বাদী হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এজাহারে সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামি করা হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উখিয়ায়, ফোর মার্ডার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন