রাজধানীর মতিঝিলে এনসিটিবি ভবনের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় রুজুকৃত মামলার এজাহারনামীয় আসামি পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঙালি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি মো. শাহাদাৎ ফরাজী সাকিব (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এর ডিবি-মতিঝিল বিভাগ।গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১১:০০ ঘটিকায় রাজধানীর শ্যামপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।ডিবি সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ দুপুরে পাঠ্যপুস্তকের মলাটে গ্রাফিতির বিষয়কে কেন্দ্র করে মতিঝিলে এনসিটিবি ভবনের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক ১৭ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় এজাহারনামীয় ১৬ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০০/৩০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতারকৃত মোঃ শাহাদাৎ ফরাজী সাকিব উক্ত মামলার ৬ নং এজাহারনামীয় আসামি।উল্লেখ্য, উক্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জানুয়ারি রাতে এজাহারনামীয় আসামি আরিফ আল খবির (৩৮) এবং মোঃ আব্বাস (২৪) কে গ্রেফতার করেছিলো মতিঝিল থানা পুলিশ। পরবর্তীতে গত ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ১২.১০ ঘটিকায় মোঃ হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছিল ডিবি। এ নিয়ে এই মামলায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি ও মতিঝিল থানা পুলিশ।গ্রেফতারকৃত শাহাদাৎ ফরাজী সাকিবকে মতিঝিল থানার মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।উল্লেখ্য, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’। গত ১২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।তারপর গত ১৫ জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। একইসময়ে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও কর্মসূচি ঘোষণা দেয়। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।পরে এই ঘটনার দায়ে 'সংক্ষিপ্ত আদিবাসী ছাত্র- জনতা' পক্ষে মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। অন্যদিকে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও মতিঝিল থানা পুলিশ তাদের মামলা গ্রহণ করেনি। এরপর সংগঠনটির পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করার জন্য আবেদন করলেও আদালত মামলাটি গ্রহণ না করে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।