‘ঐক্যবদ্ধ থাকলে পাহাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ত্বরান্বিত হবে’

fec-image

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেছেন, জনসেবার মন নিয়ে সবাইকে জনগণের পাশে থাকলেই দেশের উন্নয়ন হবে। সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সকলকে কাজ করতে হবে এবং পরিষদ সংশ্লিষ্ট সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকলে পাহাড়ের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ত্বরান্বিত হবে। তাই সকলকে ভাল মন নিয়ে জনসেবা করতে হবে।

রবিবার (২০ অক্টোবর) সকালে জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

এ সময় সভায় পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ, সদস্য থোয়াই চিং মারমা, ত্রিদীব কান্তি দাশ, সান্তনা চাকমা, স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, সাধন মনি চাকমা, মনোয়ারা আক্তার জাহান, রেমরিয়ানা পাংখোয়া এবং হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে জেলায় মহামারী আকারে বড় ধরনের কোন রোগ এখনো দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক বার্তা ও লিফলেট বিতরণ করায় অন্যান্য জেলার তুলনায় এ জেলায় রোগীর সংখ্যা কম হয়েছে।

তিনি বলেন, পূর্বের তুলনায় এখন জেনারেল হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গর্ভবতী মায়েদের প্রসবের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতেই বুঝা যায় মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গত মাসে ৪৪৭জন গর্ভবতী মহিলার ডেলিভারি হয়েছে। এছাড়া রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এখতিয়ারধীন রয়েছে। অন্যদিকে ইপিআই ও জেনারেল হাসপাতালে সকল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, বর্তমানে ৯৬৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধান কাটা হচ্ছে। এছাড়া কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা চাষীদের পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয়গুলোতে এসএসসি পরীক্ষার লক্ষ্যে টেস্ট পরীক্ষা চলছে। এছাড়া সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক ৭ম শ্রেণী মেধাবৃত্তি কার্যক্রমটি সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা বরুন কুমার দত্ত বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃত্রিম প্রজনন, চিকিৎসা সেবা, টিকা প্রদান, প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক কার্যক্রম করা হয়েছে। এছাড়া গবাদি পশুকে চিকিৎসা ও প্রোডাকশন কার্যক্রম যথারীতি চলছে। জেলার সবকটি উপজেলায় প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তারা নিয়মিত চিকিৎসা প্রদান করায় এখনো তেমন কোন রোগ মহামারী আকারে ধারণ করেনি।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অঃদাঃ) মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০৪৬ জন বেকার যুবকদের বর্তমানে যুব উন্নয়নের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামী ১নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস উদযাপন করা হবে।

হাঁস-মুরগী খামারের ব্যবস্থাপক মোঃ আশরাফুল আলম জানান, বর্তমানে খামারে ২৯২৫টি ২৯দিনের ফাউমী ও সোনালী মুরগীর বাচ্চা রয়েছে। আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে বাচ্চাগুলো তালিকাভুক্ত ক্ষুদ্র খামারী ও জনসাধারণের মাঝে সরকারি মূল্যে বিক্রয় করা হবে। এছাড়া নিয়মিত জনসাধারণ ও খামারীদেরকে মুরগী পালন ব্যবস্থাপনা সম্পর্র্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

সভায় হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, নানিয়ারচর ও কাপ্তাইয়ের উদ্যান তত্ববিদরা জানান, নার্সারিতে টার্গেট অনুযায়ী হাড়িভাঙ্গা, আম্রপালি, লিচু, নারিকেলসহ বিভিন্ন প্রজাতি গাছের চারাকলাম উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে। সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন