কক্সবাজার বিমানবন্দর ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ, নির্মিত হচ্ছে আর্ন্তজাতিক টার্মিনাল

fec-image

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। সমুদ্রের বুকে রানওয়ে সম্প্রসারণের ৪২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়াও একটি আন্তর্জাতিক যাত্রী প্রান্তিক ভবন নির্মাণ কাজও ৮২ শতাংশ এগিয়েছে। আগামী ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ পুরোপুরি শেষ হবে বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এতে কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উঠানামা করতে পারবে। বাড়বে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার বিমানবন্দর ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। একদিকে চলছে সমুদ্রের বুকে রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ, অপরদিকে চলছে আন্তর্জাতিক যাত্রী প্রান্তিক ভবন নির্মাণের কাজ।

কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস ভুঁইয়া জানান, এই প্রকল্পের আওতায় সমুদ্রগর্ভে আরও প্রায় ২২০০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট প্রিসিশন এপ্রোচ লাইট স্থাপনসহ বিদ্যমান রানওয়েতে ক্যাট-২ এজিএল সিস্টেম স্থাপন করা হবে।

সমুদ্রতীরবর্তী জমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে সরকার বিমানবন্দটির আরো উন্নয়ন ঘটানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রকল্পের আওতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঘূর্নিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব থেকে রানওয়ের সুরক্ষার জন্য সমুদ্র তীরে রক্ষাপ্রদ বাঁধ নির্মাণ এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে চারপাশে রাস্তাও নির্মাণ করা হচ্ছে।

কাজ শেষ হলে নতুন ১৭০০ ফুটসহ এই বিমানবন্দরের রানওয়ে হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট, তাই দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে সমৃদ্ধ বিমানবন্দর হবে কক্সবাজার। তখন সমুদ্র ছুঁয়ে বি-৭৭৭-৩০০ ইআর, বি-৭৪৭-৪০০ এর মতো বড় আকারের বিমানগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তুজা হোসাইন জানান, বর্তমানে কক্সবাজার বিমাবন্দরে প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০টি যাত্রীবাহী বিমান ও ৬-৮টি কার্গো বিমান উঠানামা করছে। রাতে বিমান উঠানামার জন্যও প্রায় প্রস্তুত। আরও লাইটিং সিস্টেম স্থাপনের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১৪ হাজার বর্গমিটার বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক যাত্রী প্রান্তিক ভবন, একটি বোর্ডিং ব্রিজ স্থাপন, ৩৬ হাজার ৩০০ বর্গমিটার বিশিষ্ট সুপরিসর বিমান পার্কিং এপ্রোণ ও ১৯০টি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যাত্রী এবং ৩৫টি ভিআইপি ভেহিক্যাল পার্কিং বিশিষ্ট কারপার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ৮২ শতাংশ কাজ।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই বিমানবন্দর শুধু পর্যটন নয়, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক বিকাশে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে মত জেলা প্রশাসকের।

রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৫৬৮ কোটি টাকার বেশি। আর আন্তর্জাতিক যাত্রী প্রান্তিক ভবন নির্মাণে ব্যয় হবে ২৭৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় সরকার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন