কুতুবদিয়াপাড়ায় ঝুঁকিতে ৪০ হাজার মানুষ, শুটকি মহালে কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা
কক্সবাজার পৌরসভার সমিতিপাড়ায় আলোচিত হামলার ঘটনায় এখনো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সোমবার ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়াপাড়ার কতিপয় লোকজনের মাঝে সারাদিন দফায়-দফায় হমালা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ৬ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ, অগ্নি সংযোগ ও লুটপাটে অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। দিন শেষে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এলাকাবাসী।
কুতুবদিয়া পাড়াবাসীর অভিযোগ, তাদের যাতায়তের একমাত্র পথ সমিতিপাড়া দিয়ে হওয়ায় কুতুবদিয়া পাড়ার প্রায় ৪০ হাজার লোক আতঙ্কে রয়েছে। এখনো তাদের যাতায়তে বাধা, হামলা ও মারধরের চেষ্টা করছে সমিতি পাড়ার লোকজন। এতে স্থানীয়দের আতঙ্কের পাশাপাশি দেশের সর্ববৃহৎ শুটকি মহাল নাজিরারটেকেরও বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
শুটকি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এরইমধ্যে তাদের ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে শুটকি ক্রয় ও ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদেরও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
আতঙ্কিত কুতুবদিয়াবাসী বলছেন, সমিতিপাড়াবাসী কর্তৃক প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকি ও হামলার আশঙ্কা করছেন তারা। এতে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে জনজীবন।
কুতুবদিয়ার স্থানীয় জসিম উদ্দিন বলেন, সমিতিপাড়ায় সড়ক পথে গতিরোধ করে হামলার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসাকেন্দ্রসহ শহরে গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেতে পারছে না এলাকাবাসী। এমনকি ওই পথ দিয়ে পর্যটকরাও দেশের বৃহৎ শুটকি মহালে যেতে পারছেন না। এনিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
শুটকি ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুটকির গাড়ি ঢুকতে না দেওয়ায় মজুদ করা শুটকি নষ্ট হচ্ছে। ২ দিনে তাদের ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার শুটকি ক্ষতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোটি টাকার বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে শুটকি ক্রয় ও ভ্রমনে যাওয়া পর্যটকদেরও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
আতঙ্কিত কুতুবদিয়াপাড়ার লোকজন বলছেন, সমিতিপাড়ার কিছু লোক তাদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এতে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে তাদের জনজীবন।
নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখি সমবায় সমিতির লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিক উল্লাহ সওদাগর বলেন, এই ঘটনায় তারা বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। সড়ক অবরোধ থাকায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া কাঁচা মাছের ২টি ট্রাক প্রায় ৬ ঘণ্টা আটকা পড়ে। এতে মাছগুলো পঁচে প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও মাছ পরিবহণের আরও ২টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোটি টাকার লোকসান গুণতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওই বিরোধ কোনভাবেই শেষ হতে দিচ্ছে না স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল। এতে লোকজনের পাশাপাশি বিরাট হুমকির মুখে শুটকি মহাল। এই অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামানকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে সাড়া না দেওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এই অবস্থায় সকলের প্রত্যাশা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে উত্তেজিত পরিবেশ স্বাভাবিক করা হোক। পাশাপাশি বিরোধ ভুলে এলাকার শান্তি ও কল্যাণে এগিয়ে আসুক সবাই।