কোরাল মাছের কৃত্রিম প্রজননে’র হ্যাচারি পরিদর্শনে দশ দেশের মৎস্য বিজ্ঞানী

fec-image

সাধারণত সমুদ্র উপকূল থেকে কোরাল (ভেটকি) মাছের পোনা সংগ্রহ করে চিংড়ি ঘেরে চাষ করা হয়। এতে কোরাল মাছ ঘেরের চিংড়িসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ খেয়ে ফেলায় চাষিদের লাভের বদলে লোকসান হয়। এই অবস্থায় হ্যাচারিতেই কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে মৎস্য গবেষকেরা কোরাল মাছের পোনা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। আর এই কাজ দেশে প্রথমবারের মত সফলভাবে সম্পন্ন করেছে কক্সবাজারের গ্রিন হাউজ মেরিকালচার হ্যাচারি। যা পরিদর্শনে এসেছে ১০ দেশের মৎস্য বিজ্ঞানী।

বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে সকাল ১১টার দিকে আশিয়ানভূক্ত ১০ দেশের ২৫ জন মৎস্য বিজ্ঞানী বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সফল কৃত্রিম উপায়ে কোরাল মাছ প্রজননের হ্যাচারী গ্রিনহাউজ মেরিকালচার পরিদর্শন করেন। কক্সবাজার শহরের কলাতলী মেরিনড্রাইভ সড়কে অবস্থিত গ্রিনহাউজ মেরিকালচার হ্যাচারীর বিভিন্ন অংশ পর্যবেক্ষণ করেন প্রতিনিধি দল।

গ্রিনহাউজ মেরিকালচার হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী তারিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, দেশে প্রথম কৃত্রিম উপায়ে কোরাল মাছের পোনা উৎপাদন করছেন। গত বছরের নভেম্বরে তারা সফলতার সাথে পোনা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। এখন হ্যাচারিতে ২ লাখের বেশি পোনা রয়েছে। অর্ধশত মা কোরাল রয়েছে। তার মধ্যে পোনা বিক্রি হয়েছে প্রায় দেড় লাখ। এই মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থা যদি সহযোগিতা করে তাহলে এই মাছ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা যাবে।

গ্রিনহাউজ মেরিকালচার হ্যাচারির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, কোরালের মাদার বা মা মাছগুলো সমুদ্র থেকে সংগ্রহ করা হয়। এরপর বৈজ্ঞানিক উপায়ে ডিম দেওয়ার উপযোগী করা হয়। এর মধ্যে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে মাছের চাহিদা মেটাতে এটি একটি সম্ভাবনার জায়গা। এই মাছ পোনা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদন করা যাবে।

পরিদর্শন দলের দলনেতা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়ান শাখার মহাপরিচালক মো. রইস হাসান সরোয়ার এই কাজকে স্বাদুবাদ জানিয়ে বলেন, এটি ব্লু-ইকোনিমিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। গ্রিনহাউজ মেরিকালচারের কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ে সম্প্রসারণের জন্য সকল প্রকারের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, গ্রিনহাউজ মেরিকালচার হ্যাচারির স্বত্বাধিকারী তারিকুল ইসলাম চৌধুরী, দেশীয় কন্সাটেন্ট মো. মাহবুব আলম, মৎস্য অধিদপ্তরের আশিয়ান-বাংলাদেশ সহযোগিতা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুল আলম, দেশি-বিদেশি টেকনিশিয়ান এবং হ্যাচারির সকলস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, মাছের কৃত্রিম প্রজনন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন