ক্যান্সার আক্রান্ত হত দরিদ্র শিক্ষার্থী মংশৈম্যা মারমা বাঁচতে চায়
ক্যান্সার আক্রান্ত হত দরিদ্র শিক্ষার্থী মংশৈম্যা মারমা বাঁচতে চায়। ২০২৩ সালে ৩০ এপ্রিল এসএসসি উত্তির্ণ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ করে রেখেছেন। তিন মাস আগেই মেধাবী ছাত্র মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারের আক্রান্ত হয়েছে ১৬ বছরে তরুন মংশৈম্যা মারমা। একসময় অন্যদের মতো সেও ছিল বিদ্যালয়ের লেখা পড়া, প্রাণোচ্ছল, হাসিখুশি। বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ, ছোটাছুটি আর হইহুল্লোড়ে চারদিক মাতিয়ে রাখতো। মা-বাবার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার সখ্য একটু বেশিই।
হঠাৎ গত জানুয়ারি মাসে শরীরে দুর্বল, ক্লান্তিসহ জ্বর, কাশি অনুভব হয়ে লেখাপড়া মনোবল ভেঙ্গে পড়ে । এতে নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে তরুণের জীবনের সবকিছু। এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শুধু চোখে-মুখে বাঁচার আঁকুতি মিনতি সকলের সহযোগিতায় সুস্থ হয়ে সে আবারো ফিরতে চায় সকলের মাঝে। অসহায় তরুণের চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য দেশের সরকার ও বিত্তবানসহ সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে।
বান্দরবানের থানচি উপজেলা দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে কলা পাড়া গ্রামে বাসিন্দা হত দরিদ্র অসহায় জুমিয়া উথোয়াইচিং মারমা ৪৪, ও সহধর্মীনি উম্যানু মারমা তরুণের পিতা মাতা। গত জানুয়ারি মাসে হঠাৎ কাশি, জ্বর ও শারীরে দুর্বলতা অনুভব করলে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে কয়েকদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালের স্থানান্তর করেন। একইভাবে বান্দরবানের কয়েকদিন নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ চমেক এর স্থানান্তর করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে বলে জানানোর পর তাঁর পরিবারে নেমে আসে অশ্রু ভরা জল ও অন্ধকারের ছায়া! তবে সু-চিকিৎসা পেলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন চিকিৎসক।
থানচি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামে চিকিৎসা জন্য ছুটাছুটি করতে হত দরিদ্র অসহায় পরিবারের পক্ষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী লোকজন, বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ধারে ধারে তরুণের মা-বাবা আত্বীয়-স্বজনদের সহযোগিতা ধারকর্জ করে চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছিল। পরে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় সম্প্রতি তাকে রাজধানী ঢাকায় ফার্মগেইট এলাকা গ্রিন রোডে আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার জেনারেল হাসপাতালে ৬ষ্ঠ তলা রুম নং ৭১১ তে ক্যান্সার বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ জুবায়ের খানের অধীনে চিকিৎসাধীন। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে।
চিকিৎসক বলেন, তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা রিপোর্ট ভারতে পাঠিয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত থেকে রিপোর্ট আসছে তাঁকে অপারেশনের পাশাপাশি কেমোথেরাপি চিকিৎসা করা হলে পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠার এবং আগের মত লেখাপড়া, খেলাধুলাসহ সব কিছু করার সম্ভাবনা রয়েছে। তার এ রোগে ভারতে ক্যান্সার নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসা অপারেশনসহ বহু টাকার প্রয়োজন বলে চিকিৎসক মত দেন।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, মংশৈম্যা মারমা পরিবারে ২য় সন্তান রাঙামাটি জেলার বাঙ্গাল হালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে ২০২৩ সালে ৩০ এপ্রিল এসএসসি উত্তির্ণ পরীক্ষা অংশগ্রহণ করবে। তার ছোট বোন থানচি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত । বড় ভাই ৮ম শ্রেণির পর্যন্ত পড়ে খরচ চালাতে না পাড়ায় লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে।
কিন্তু বাবা উথোয়াইচিং মারমা ও মা উম্যানু মারমা জুম চাষী পক্ষে মোট কথা সমস্যায় জর্জরিত হওয়া এ ব্যয় বহন করা অসম্ভব। তাই জীবন প্রদীপ রক্ষার জন্য দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তরুণে মা-বাবা দুই জনেই । বাবার যোগাযোগের নাম্বার: 01818271792 – মানবিক সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করা যাবে। মংশৈম্যা মারমা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে রেমাক্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা (রনি) বলেন, তাঁর চিকিৎসায় আমিও সহযোগিতা করেছি পাশাপাশি জীবন রক্ষার্থে সকল বিত্তবানদেরও সহায়তা কামনা করছি।
মংশৈম্যা মারমা এর বাবা মা বলেন, আমার ছেলেকে চিকিৎসা জন্য যিনি খরচ চালাবেন প্রয়োজনে আজীবন আমরা দুই জনের তাদের বাড়িতে চিকিৎসা খরচে পরিমাণ মতো যে কোন কাজ করে পরিশোধ করার প্রস্তুতি ও মনোবল রয়েছে।