চকরিয়ায় তিন সন্তানের জননীকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার অভিযোগ, ঘাতক স্বামী পালাতক

fec-image

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে তাছলিমা আক্তার (২৯) নামের তিন সন্তানের এক জননীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পালাতক রয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) বিকাল ৫ টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে নিহতের ভাড়া বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত তাছলিমা আক্তার বান্দরবান সদর উপজেলার বাজালিয়া পোয়াং বাজার এলাকার বাবুর্চি নাজিম উদ্দীনের স্ত্রী।

স্থানীয় প্রতিবেশী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত তাছলিমা আক্তারের স্বামী নাজিম উদ্দীন পেশায় একজন বাবুর্চি। বাবুর্চি ও দিনমজুর কাজ করে কোন রখম সে অভাবের সংসার চালাতো। প্রায় সময় নিহত তাছলিমার সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার ঝগড়া হতো।

ঘটনার পূর্বের দিন রাত্রে ও সকালে তার স্বামী বাহির থেকে এসে স্ত্রী তাছলিমার সাথে পারিবারিক বিষয়ে ঝগড়া হয়। ঘটনার দিন তাকে মারধর করে আঘাত করেছে তার স্বামী।

দুপুরের দিকে নিহতের বড় ছেলে আদিলকে ঔষধ কেনার জন্য স্থানীয় ফার্মেসীর দোকানে পাঠায় তার মা তাছলিমা। ছেলের কাছে কোন টাকা-পয়সা না থাকায় মা’য়ের জন্য ঔষধ কিনে আনতে পারেনি ছেলে আদিল। পরে ছেলে আদিল তার মা’কে বলে বাসা থেকে খেলতে বের হয়ে যায়।

পারিবারিক কলহের জের ধরে নিহতের স্বামী তার স্ত্রীর গলায় ফাঁস দিয়ে এ হত্যার ঘটনাটি করেছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহত তাছলিমা’র বাবা সোলেমান দাবি করেছেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে তার শিশু সন্তানরা তাদের মাকে (তছলিমা) বাসায় গলায ফাঁস লাগানো ঝুলন্তবস্থায় দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করতে থাকলে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এসে নিহতের বাবা ও ভাইকে খবর দেয়।

খবর পেয়ে নিহতের ভাই তার বাসায় এসে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে ঝুলন্তবস্থা থেকে উদ্ধার করে মাঠিতে শুয়ে রাখেন।

নিহত তছলিমার লাশ তার স্বামী বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় এলাকাবাসী ঘটনার বিষয়টি দ্রুত থানা পুলিশকে খবর দেয়।

খবর পেয়ে চকরিয়া থানার (ওসি) নির্দেশে থানার অপারেশন অফিসার চিরঞ্জীবের নেতৃত্বে এসআই মফিজুর রহমানসহ সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন।

লাশ উদ্ধার করতে যাওয়া চকরিয়া থানার এসআই মফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে থানার ওসি’র নির্দেশে থানার অপারেশন অফিসার‘সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী পালাতক রয়েছে। তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়নি।

নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, তিন সন্তানের এক গৃহবধু আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।

থানার এসআই মফিজুর রহমান নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি করার পর লাশ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই তার মূত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: গৃহবধু, চকরিয়া, পুলিশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন