দলীয় প্রভাব দেখিয়ে বান্দরবানে ইট ভাটার জন্য প্রকাশ্যে চলছে পাহাড় কাটা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রশাসন ও পুলিশের নিস্ক্রিয়তার সুযোগে বান্দরবানে ইট ভাটার প্রস্তুতিমুলক কাজের জন্য দিন দুপুরে প্রকাশ্যেই পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। পাহাড় কেটে পরিবেশ ধংস করে রোয়াংছড়ির ছাইংগ্যা, লামার ফাইতং, ফাঁসিয়াখালী, নাইক্ষ্যংছড়ির সোনাইছড়ি, ঘুমধুমসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে পাহাড় কেটে ইট তৈরির জন্য মাটি মজুদ করা হলেও প্রশাসন কিংবা পুলিশ এসব অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ না করার অভিযোগ উঠেছে। সরকার ও দলীয় নেতার দাপট দেখিয়েই ছাইংগ্যা এবং ফাইতংয়ে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে ভাটার জন্য মাটি মজুদ করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
জেলা শহর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দুরে রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের ছাইংগ্যা এলাকায় ‘এবিএম’ নামীয় ইট ভাটার মালিক এবং পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিলনের বিরুদ্ধে। এছাড়া ও এলাকার আরও কয়েকটি ইটভাটায় একইভাবে মাটি ব্যবহারের জন্য পাহাড়ের অংশ কেটে মাটি সংগ্রহ ও মজুদ করা হচ্ছে জানিয়েছে স্থানীয়রা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই গত ১০দিন ধরে প্রকাশ্যে দিবালোকে পাহাড় কেটে দিব্যি চললেও পুলিশ ও প্রশাসন রয়েছে নির্বিকার। ৩দিন আগে ছাইংগ্যা এলাকায় রোয়াংছড়ি থানার এস আই আরিফের নেতৃত্বে পুলিশ দল অবৈধ পাহাড় কর্তন এলাকা পরিদর্শন করার পরও রহস্যজনক কারণে কাউকে আটক বা আইনগত কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে রোয়াংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর আলী মিডিয়াকর্মীদের বলেছেন, পাহাড় কাটার স্থলে পুলিশ দল যে গেছেন, তা তিনি জানেন না। তবে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।
এদিকে লামা উপজেলার ফাইতং অঞ্চলে এবারও ইটভাটায় ব্যবহারের জন্যে অবাধে পাহাড় কাটা শুরু হয়েছে। প্রশাসনের কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই এসব পাহাড় কাটা চলছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। আওয়ামীলীগ নেতা নামধারী ওই এলাকার এক ইউপি চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রণেই অবাধে পাহাড় কর্তনসহ নানাবিধ অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সচেতন মহল থেকে জানানো হয়েছে। তবে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ছাইংগ্যা এবিএম ইটভাটার মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, ইটভাটার জায়গা সম্প্রসারণের জন্য কিছু পাহাড় কাটা হচ্ছে।
এদিকে সংশিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, ইটভাটা নির্মাণ ও ইট তৈরির ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত বিধি লংঘিত হলেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ইটভাটার নামে অবৈধ পাহাড় কাটার বিষয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।