দেশ পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চাইলেন ড. ইউনূস
দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এবং পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি ওয়াশিংটনকে পাশে থাকার আহ্বান জানান।
শান্তিতে নোবেল পাওয়া ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জের বর্ণনা দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিকে সংস্কার ও পুনরায় গড়ে তুলতে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আর্থিক খাত সংস্কার শুরু করেছে এবং বিচার বিভাগ ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কার করেছে৷
তিনি প্রতিনিধি দলকে বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় এবং ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এই বিপ্লব একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার আশা সৃষ্টি করেছে। ’
প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের একটি রূপরেখা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ভোট কারচুপি রোধ, বিচার বিভাগ, পুলিশ, বেসামরিক প্রশাসন, দেশের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য তার সরকার ছয়টি কমিশন গঠন করেছে। ’
তিনি বলেন, তার সরকার আগের স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে জড়িত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের দ্বারা চুরি করা সম্পদ ফেরত পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সরকারের সমানে দুর্নীতি মোকাবেলার চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির সাগরে ছিলাম। ’
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সহকারী সচিব ব্রেন্ট নিইম্যানের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধিদল অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে এবং ওয়াশিংটন ডিসি তার সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করতে পারলে খুশি হবে বলে মতামত প্রকাশ করে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, তারা অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক পরিচালিত সংস্কারের জন্য প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা দিতে আগ্রহী।
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার, বিনিয়োগ, শ্রম সমস্যা, রোহিঙ্গা সংকট এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর নিয়েও আলোচনা হয়।
ডোনাল্ড লু, মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ব্রেন্ডন লিঞ্চ, সহকারী মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি, অঞ্জলি কৌর, উপ সহকারী প্রশাসক এবং মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের একজন পরিচালক জেরোড ম্যাসন বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করেন।
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীসহ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোর্শেদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।