নাইক্ষ্যংছড়ি শিশু পার্ক উন্নয়ন: কাজে আসেনি বরাদ্দ
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে উন্নয়নের পর আবারো পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে নাইক্ষ্যংছড়ি শিশু পার্ক। কাজ শেষে উদ্বোধন হলেও বর্তমানে এই পার্কটির চারপাশ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। সঠিক সংষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে জানান পার্শ্বের এলাকার বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে রেস্ট হাউস সংলগ্ন শিশু পার্কটির গেটে ঝুলছে তালা। ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেছে পার্কের চারপাশ। পার্কের দোলনা, স্লিপার, ছাতাসহ যে কয়টি রাইড বসানো হয়েছিল সবগুলোতে মরিচা ধরেছে। ইটের তৈরি বেঞ্চের টাইলস ভেঙ্গে গেছে। দূর থেকে দেখে অনেকটা সেই আগের গোচারণ ভূমির মতোই মনে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৭সনে শিশুদের বিনোদনের জণ্য পাহাড়ী এই উপজেলায় শিশু পার্কটি প্রতিষ্ঠা করেছিল উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু তখন উপজেলা সদরে জনবসতি ও আধুনিকতার তেমন ছোঁয়া না থাকায় আপনা আপনি শিশু পার্কটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পার্কের মালামাল চুরি এবং পার্কের চারপাশের কিছু জমিও বেদখল হয়ে গেছে।
সর্বশেষ ২০১৬ সনে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সাফায়েত মুহাম্মদ শাহে দুল ইসলাম পার্কটি পুন: চালুর উদ্যোগ নেন এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিট এই পার্ক সংস্থার কাজের জন্য ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন। সংস্কার কাজ শেষে পার্কটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন পার্বত্য মন্ত্রী। কিন্তু কয়েক মাস না পেরোতেই শিশু পার্কটি পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে। রাতে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা।
এদিকে শিশু পার্কটির এমন বেহাল দশার কারণে পাহাড়ী এই উপজেলার শিশুদের খেলার সুযোগ কমেছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘আসলে চারদিকে ছেলে মেয়েদের খেলার জায়গা কমে যাচ্ছে’। তার মধ্যে এত সুন্দর পার্কটিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উন্নয়ন বরাদ্দ কাজে না আসা নিয়ে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত বলেন, ‘কাজটির বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আমি যোগদানের পর কাজ হয়নি। বিস্তারিত ফাইল দেখে বলতে হবে’।
এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, আমি যোগদানের পর থেকে এই পার্কটির জন্য কোথাও থেকে কোন অনুদান আসেনি। এর আগে কোথায় থেকে বরাদ্দ হয়েছিল তা আমার জানা নেই। তবে পার্কটি বর্তমানে পরিত্যাক্তের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, শিশু পার্কের জন্য একজন কেয়ারটেকার দরকার আর এ জন্য ফান্ডেরও প্রয়োজন রয়েছে।