ফেব্রুয়ারিতে ফের শুরু রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি

fec-image

আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক বিচারিক অপরাধ আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি ফের শুরু হবে। মামলার বাদিপক্ষ আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা জাল্লৌ শুক্রবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দাওদা জাল্লৌ বলেন, ‘মামলার কার্যক্রম পুরোপুরি সচল করতে আগামী ২১ জানুয়ারি হাইব্রিড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।’

হাইব্রিড শুনানির সংজ্ঞায় গাম্বিয়ার এই সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা বলেন, এটি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে কয়েকজন ব্যক্তি শুনানিতে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন এবং অন্যরা এতে যুক্ত হবেন ভার্চুয়াল বা অনলাইন মাধ্যমে।

২০১৯ সালে যখন এই মামলার কার্যক্রম শুরু হয়, সে সময় আদালতে মিয়ানমারের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ও তৎকালীন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি; কিন্তু বর্তমানে দেশের ক্ষমতা হারিয়ে কারাবন্দি থাকায় সু চির মনোনীত কোনো প্রতিনিধি এই মামলার শুনানির সময় তার পরিবর্তে উপস্থিত থাকবেন বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন দাওদা জাল্লৌ।

আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের মুখপাত্র অবশ্য মামলার শুনানি শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কবে থেকে তা শুরু হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কিছু জানাতে চাননি।

২০১৭ সালে আরাকানে কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে বোমা হামলা করার অভিযোগ ওঠে সশস্ত্র রোহিঙ্গাগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে। এই হামলার জের ধরে বাংলাদেশ- মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হামলা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সামনে টিকতে না পেরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মিয়ানমারে জাতিগতভাবে রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতেই ২০১৭ সালে এই গণহত্যা চালিয়েছিল দেশটির সেনাবাহিনী।

মহামারির কারণে এতদিন মামলার কার্যক্রম অনেকটাই স্থবির ছিল। তবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন- প্রতি ৬ মাস পর পর যেন রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় সেনাবাহিনী।

২০১৯ সালে যখন হেগ শহরে যখন এই মামলার কার্যক্রম শুরু হয়, সে সময় শুনানিতে উপস্থিত হয়ে সু চি এই মামলা খারিজ করে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি নিজেই আছেন কারাবন্দি অবস্থায়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আদালতে, আন্তর্জাতিক, গণহত্যা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন