মণিপুরে ভয়াবহ সংঘাত: শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা চান মুখ্যমন্ত্রী
চলতি মাসের শুরু থেকেই রক্ত ঝরছে ভারতের উত্তর-পূর্ব মণিপুর রাজ্যে। শান্তি ফেরাতে এবার রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রাজ্যের সব বিধায়ককে নিয়ে রবিবার রাজ্যপাল লক্ষ্মণ আচার্যের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
সেখানেই তিনি এ দাবি জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, রবিবার বীরেন শাসক জোটের সব দলের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। তার পর বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনে যান।
সেখানেই রাজ্যপালের কাছে কিছু দাবি জানান।
মণিপুরে বিজেপিশাসিত সরকার। সেই সরকারেরই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন। অনেকের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ভরসা রাখতে পারছে না মণিপুর সরকার।
গত বছর মে মাস থেকে উত্তপ্ত মণিপুর। শান্তি ফেরাতে বারবার পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনী মণিপুরে শান্তি ফেরানো দায়িত্বে আছে। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী চান, রাজ্যের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হোক।
প্রথমে ড্রোন হামলা।
তারপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। গত এক সপ্তাহে মণিপুরে বিদ্রোহীদের এই জোড়া নাশকতা ঘুম কেড়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর। এই পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে বিদ্রোহীদের সম্ভাব্য আস্তানার সন্ধানে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে মণিপুর পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। ইতিমধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে তিনটি বাংকার।
এদিকে মেইতেইরা দাবি করছে, কুকিরাই ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। পুলিশের দাবি, স্থানীয়ভাবে তৈরি হলেও উন্নত প্রযুক্তির ওই ক্ষেপণাস্ত্র তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আঘাত হানতে পারে। কুকিরা অবশ্য কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করে পাল্টা দাবি করে, মেইতেই সশস্ত্র বাহিনী আরাম্বাই টেঙ্গলের যোদ্ধাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মেইতেই এলাকায় আছড়ে পড়ে ওই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে মণিপুরে। মণিপুরের মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে নতুন করে তপ্ত হয়ে ওঠে সম্প্রতি কংপোকপি ও পশ্চিম ইম্ফলের দুটি জায়গায় ড্রোন হামলাকে কেন্দ্র করে। দুটি হামলাই হয়েছিল মেইতেই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকায়। সেপ্টেম্বর মাসে এখনো পর্যন্ত অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় মণিপুরের শাসকদলের সব বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। এর পর রাতেই রাজ্যপাল লক্ষ্মণ আচার্যের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে যান বীরেন।