মিয়ানমার থেকে আবারও ভেসে আসছে মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ

fec-image

কয়েকদিন বন্ধের পর বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে পরপর ৪টি মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠলো তুমব্রু বাজার ও আশপাশের ১২টি গ্রাম। জানা গেছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গত দুইমাস ধরে সশস্ত্র বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের ওপার বিজিপি ক্যাম্প থেকে ভেসে আসছে পর পর ৪টি মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ। যা নতুন করে প্রভাব বিস্তার করছে সীমান্ত লাগোয়া স্থানীয়দের মাঝে।

এ বিষয়ে তুমব্রু বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের সেনা ও বিদ্রোহী গ্রুপ (এএ) এর মাঝে চলমান দীর্ঘদিন যাবত সংঘর্ষের অংশ হিসেবে ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্ত পিলার ৪১, ৪০, ৩৯, ৩৮, ৩৭ , ৩৬ , ৩৫ , ৩৪ ও ৩১ এলাকায় তাদের মাঝে প্রচণ্ড সংঘর্ষ চলমান রয়েছিল। এই সংঘর্ষে বিজিপি প্রচুর পরিমাণ ভারী অস্ত্র, মর্টার শেল ও সামরিক হেলিকপ্টার হতে বৃষ্টির মত গোলাবর্ষণ করেছিল। তবে গত কয়েক দিন যাবত সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল এবং কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ চলমান রয়েছে।

ব্যবসায়ী আবদুল কাদের গ্রাম পুলিশ আবদু জাব্বার জানান, প্রায় ৩ দিন পর আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হঠাৎ সীমান্ত পিলার ৩৪ সংলগ্ন মিয়ানমারের তুমব্রু রাইট বিজিপি ক্যাম্প হতে পর পর ৪টি ভারী অস্ত্রের মর্টার শেল বিস্ফোরণ তুমব্রু ও বাইশারী এলাকার ১২টি গ্রাম ভূমিকম্পের ন্যায় কেঁপে উঠে। যার ফলে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশের লোকজনের মাঝে পুনরায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া প্রতিদিন মিয়ানমার সেনা ও বিজিপি সীমান্ত এলাকায় ক্ষুদ্র অস্ত্র ফায়ার অব্যাহত রেখেছে।

এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ বলেন, হঠাৎ মর্টারশেলের আওয়াজে তার পরিষদ যেন ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা হয়েছিলো বলে তার নাইট গার্ড তাকে বলেছে। ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে স্থানীয়দের সতর্কতার সাথে চলাফেরাসহ সীমান্তের কাছে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে এলাকার লোকজনের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে তুমব্রু বাজার শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরে আসা পূজারীরা চরম আতঙ্কে মহাঅষ্টমী পালন করছে।

ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে স্থানীয়দের সতর্কতার সাথে চলাফেরাসহ সীমান্তের কাছে না যাওয়ার জন্য নিষেধ করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুর্গা পূজা মন্দিরের সভাপতি রূপনা ধর।

৩৪ বিজিবির একটি সূত্র জানান, তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তাদের টহলদলের সদস্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও টহল জেরদার করা হয়েছে যেন কোন নতুন রোহিঙ্গা সীমান্তের এপারে না আসতে পারে এবং সীমান্ত যেন রক্ষিত থাকে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিস্ফোরণ, মর্টার শেল, মিয়ানমার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন