টেকনাফ সীমান্তে আবারও বেড়েছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ

fec-image

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ওপার থেকে আবার ভেসে আসছে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ।

এমন অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা। মাঝখানে কয়েক দিন রাখাইনের পরিস্থিতি বেশ শান্তই ছিল। সোমবার (৮ এপ্রিল) ভোর রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্তে, হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে এপারের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।

জানা যায়, হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের পূর্বদিকে মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওইসব এলাকায় নতুন করে সংঘাত ছড়িয়েছে। সীমান্তের এসব এলাকায় শনিবার ভোররাত পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসে।

বিশেষ করে সাবরাং ইউনিয়ন, সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, হোয়াইক্যংয়ের খারাংখালী, ঝিমংখালী, হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার, ওয়াব্রাং, পুরানবাজার, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, টেকনাফ সদরের আলীখালি, লেদা, মুচনী, জাদীমুড়া, দমদমিয়া, টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যং পাড়া, চৌধুরীপাড়া, কেকে পাড়া, জালিয়াপাড়াসহ অন্তত ৩০টি গ্রামে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়।

সকাল থেকে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের চলমান যুদ্ধে এপারে অনেক ভারী গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। প্রতিদিন এ ধরনের গোলার বিকট আওয়াজ এখানকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।’

নয়াপাড়া সীমান্তের নবী হোসেন জানান, ওপার থেকে আসা বোমার ভয়ঙ্কর কয়েকটি শব্দ শুনেছি। এছাড়া গুলির শব্দে রীতিমতো অভ্যস্থ হয়ে পড়েছি।’

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুস সালাম বলেন, সোমবার সীমান্তের লোকজন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন। নাফ নদের সীমান্তে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সকাল থেকে সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিনের তুলনার আজকের গোলার শব্দ বিকট।’

এদিকে মিয়ানমার মংডু ও বুথেডংয়ে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফনদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা দিনরাত নাফ নদী ও সীমান্ত সড়কে টহল বৃদ্ধি করেছে।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনে সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সংঘাতের জের ধরে যাতে রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য নাফ নদে কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, টেকনাফ, বিস্ফোরণ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন