ফলোআপ : আসল ঘটনা দীর্ঘ পরকীয়া প্রেম

মুরাদনগরে হিন্দু নারীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত আ.লীগ নেতাকে বিএনপি বানিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচার!

fec-image

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের একজন দুবাই প্রবাসীর স্ত্রীর দীর্ঘ পরকীয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ফজর আলী স্থানীয় বিএনপির কোনো নেতা বা কর্মী নয়। ফজর আলীর সাথে বিএনপি ট্যাগ লাগানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে স্থানীয় বিশ্বস্ত সূত্রগুলো পার্বত্যনিউজকে নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয়রা বলছে, ফজর আলীর সাথে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর দীর্ঘ পরকীয়া চলছিল। ফজর আলী আওয়ামী লীগের নেতা এবং আওয়ামী সরকারের আমলে স্থানীয়  ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী নেতার ঘনিষ্ঠ লোক ছিল। আর এ কারণেই এলাকার লোকজন এই অবৈধ পরকিয়ার প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। অবশেষে ২৬ জুন ২০২৫ রাত আনুমানিক ১০টায় তাদের দুজনকে বিবস্ত্র অবস্থায় হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয়েছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, অভিযুক্ত ফজর আলীর বাড়ি আর ওই প্রবাসীর স্ত্রীর পিতার বাড়ি একই গ্রামে। প্রবাসীর স্ত্রী প্রায়ই স্বামীর বাড়ি থেকে পিতার বাড়ি অর্থাৎ ফজর আলীদের গ্রামে বেড়াতে আসতেন। আসা-যাওয়া কালে এক পর্যায়ে তাদের মাঝে সখ্যতা গড়ে ওঠে। তাছাড়া আওয়ামী লীগ আমলে ইউপি কার্যালয়ে বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে হলে অভিযুক্ত ফজর আলী তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতেন। সেই সুবাদে তাদের মাঝে সখ্যতা আরো গভীর হয়। যা পরবর্তীতে পরকীয়ায় রূপ নেয়। তাদের এই অনৈতিক পরকীয়া অনেকদিন ধরে চলে আসলে এলাকাবাসীর একাংশের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

বিক্ষুব্ধরা জানায়, আওয়ামী সরকারের আমলে ফজর আলী ইউপি চেয়ারম্যানের দাপটেই এলাকায় চলাফেরা করতেন। তাই প্রতিবেশীরা ফজরের এই প্রকাশ্য পরকীয়ার প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে অভিযুক্ত ফজর আলী কৌশলে স্থানীয় বিএনপির পরিচয়ে চলাফেরা করতে শুরু করেন। সরকার পতন হলেও ফজর আলী ও ওই প্রবাসীর স্ত্রীর পরকীয়ায় কোনো প্রভাব পড়েনি। তারা আগের মতোই তাদের সম্পর্ক চালিয়ে যান এবং স্বামীর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে এসে ফজরের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়।

ঘটনার দিন অর্থাৎ ২৬ জুন ওই প্রবাসীর স্ত্রী তার পিতার বাড়িতে আসেন এবং তার পরকীয়া প্রেমিক ফজরকে রাতে বাসায় আসতে বলেন। বিষয়টি স্থানীয় ছেলেরা বুঝতে পেরে বাড়ির আশেপাশে গোপনে অবস্থান নেয়। প্রবাসীর স্ত্রীকে ও ফজর আলীকে হাতেনাতে ধরার জন্য এলাকাবাসী সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। একপর্যায়ে পরকীয়া প্রেমিকযুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় একই ঘরে বিবস্ত্র অবস্থায় ধরে ফেলে। হাতে নাতে দুজনকে ধরার পর ফজর আলীকে গণধোলাই দেওয়া হলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তাদের এই পরকীয়ার গুঞ্জন দুবাইতেও তার স্বামীর কানে পৌঁছে যায়। এ নিয়ে প্রবাসী স্বামীর সাথে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে জানা যায়। ঘটনার দিন বিশেষ করে একটি মুসলমান ছেলের সাথে একটি হিন্দু মেয়ের এরকম অনৈতিক সম্পর্ক হাতে নাতে ধরা পড়ার বিষয়টি বাহিরচর গ্রামে হিন্দু পাড়াতে ব্যাপকভাবে জানাজানি হয়।

অভিযুক্ত ফজর আলী মুসলমান হওয়ায় বাহিরচর হিন্দু পাড়ার লোকজন শলা পরামর্শ করে নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে পুলিশ খবর দেয় এবং প্রবাসীর স্ত্রীকে বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। মূলত উক্ত ঘটনাটি দুইজনের পূর্বের সম্পর্কের জের ধরে সংঘটিত হয়। এখানে জোরপূর্বক ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে এই ভিডিওটি মূলত প্রবাসীর স্ত্রীর প্রতিবেশীরা করেছে। তাদেরকে এখনো সনাক্ত করা যায়নি ও পরিচয়ে জানা যায়নি।

মূলত উপস্থিত যারা এই ভিডিওটি করেছে তাদের অনেকেই হিন্দুদের বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত ছিল এবং ভিডিওটি বিভিন্ন গ্রুপে দেওয়ার ফলে ভাইরাল হয়ে যায়। এখানে অভিযুক্ত ফজরের নামের সাথে বিএনপি’র নেতা ট্যাগ লাগানো উদ্দেশ্য প্রণোদিত  বলে বিশ্বস্ত সূত্র পার্বত্যনিউজকে নিশ্চিত করে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন