রাঙামাটিতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এসপি ও ওসিকে প্রত্যাহার না করলে লাগাতার হরতালসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়ন চাকমাকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক মারধর এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে ছাত্রলীগের ডাকে সকাল সন্ধ্যা হরতাল শেষে এক বিক্ষোভ সমাবেশে ৪৮ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্রলীগ। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এসপি ও ওসিকে প্রত্যাহার না করলে লাগাতার হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার(১৩ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শান্তিপূর্ণ হরতাল শেষে জেলার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে শহরের বনরূপায় ছাত্রলীগের বিক্ষোভ সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন ।
এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. সাওয়াল উদ্দিন, শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুল আলম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর জব্বার সুজন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা প্রমুখ।
বিক্ষোভ সভায় বক্তারা জানান, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার দিকে জেলা শহরের রাজবাড়িস্থ স্টেডিয়াম এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপেন চাকমাকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ক্যাডাররা মারধর করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে ছাত্রলীগ শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ সমাবেশ করে। কিন্তু পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান এ কর্মসূচিকে বাঁধা প্রদান এবং গুলি চালানোর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমকে অবগত করলে তার নেতৃত্বে কোতয়ালী থানার ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়া এবং পুলিশের সহকারী-পরিদর্শক সৌরজিৎ বড়ুয়াসহ (এএসআই) পুলিশ সদস্যরা অতর্কিত ভাবে ছাত্রলীগের মিছিলের উপর গুলি বর্ষণ, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট এবং লাঠিচার্জ করে। এসময় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ পথচারীরা পুলিশের হামলার শিকার হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এসপি পুরো জেলায় সর্বত্র চাঁদাবাজি করছে এবং সন্তু লারমার সাথে আতাত করে এ অঞ্চলে সাপ্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা বলেন, আমাদের হরতালের কর্মসূচি শেষ হলেও আমাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না। এসপি, এএসপি এবং ওসিকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি। প্রত্যাহার না করলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও তারা জানান।
হরতালের সমর্থনে বনরূপা, রিজার্ভবাজার, কলেজগেইট, তবলছড়ি এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পিকেটিং করেছেন জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। খোলেনি শহরের দোকানপাট। চলেনি কোন প্রকার যান।
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুপায়ন চাকমার উপর অতর্কিত হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার(১২ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ দফায় দফায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাংবাদিক, পুলিশ, পথচারী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ অন্তত ৫০জন আহত হন।