অনুষ্ঠানে ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান

রাষ্ট্রবিরোধী আদিবাসী শব্দের ব্যবহারে রাঙামাটিতে ক্ষোভ

fec-image

বাংলাদেশের সংবিধানকে উপেক্ষা করে,রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার রাষ্ট্রবিরোধী আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করে আয়োজিত একটি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। যা নিয়ে পাহাড়ের নানা মহলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

আজ বুধবার (৯ এপ্রিল ২০২৫,) রাঙামাটি পৌরসভা চত্বরে ৪ দিনব্যাপী বিজু উদযাপন অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি সাংবিধানিকভাবে ভুল পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা দেশের সংবিধান ও শান্তি নষ্ট করার শামিল বলেও দাবি করছেন পাহাড়ের সচেতন মহল।
বাংলাদেশের সংবিধানে আদিবাসী শব্দের কোনো উল্লেখ নেই এবং রাষ্ট্র স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছে, পাহাড়ে কোনো আদিবাসী নেই। এমন পরিস্থিতিতে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারে বসে এই ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ একটি সুস্পষ্ট সংবিধান লঙ্ঘন।

তার এই কার্যকলাপ নিয়ে নানা মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে একজন রাষ্ট্রীয় চেয়ারে বসে এমন একটি প্রোগ্রামে অংশ নিতে পারেন, যা রাষ্ট্রের অবস্থানের বিপরীত। এ ছাড়া, এই অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত ব্যানার ও ফেস্টুনে শ্লোগান লেখা ছিল, আদিবাসী জুম্ম জাতির অস্থিত্ব নিশ্চিতকরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে অধিকতর সামিল হও।
সচেতন মহলের প্রশ্ন, বিজু উৎসবের নামে আদিবাসী আন্দোলন প্রচারের এমন কর্মকাণ্ড, শ্লোগান ও বক্তব্যের মাধ্যমে কি অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে? পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের এক নেতা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সংবিধানে আদিবাসী শব্দের কোনো জায়গা নেই। ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তিতেও এটি একবারও উল্লেখ করা হয়নি।

উপজাতিশব্দটি বলবৎ রয়েছে, অথচ কিছু গোষ্ঠী এই সংবিধানকে অগ্রাহ্য করে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করছে, যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক এবং দেশের শৃঙ্খলাকে বিপদমুক্ত রাখতে হুমকি সৃষ্টি করছে।
এদিকে, বিভিন্ন বাঙালি সমমনা সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তি নষ্ট করছে। এই ধরনের অনুষ্ঠানকে উৎসব হিসেবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে পাহাড়ে অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

রাঙামাটির নেটিজেরা বলছেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদারের এমন রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে অবিশ্বাস্য এবং অগ্রহণযোগ্য। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল পদে বসে যে ধরনের সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছেন, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের সংবিধান স্পষ্টভাবে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে এবং রাষ্ট্র পাহাড়ে আদিবাসী জনগণের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে। অথচ,পাজেপ চেয়ারম্যান দেশের সর্বোচ্চ আইনকে উপেক্ষা করে এমন রাষ্ট্রবিরোধী প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে জাতীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।

এটি শুধু রাষ্ট্রীয় কর্তব্যের পরিপন্থি নয়,বরং দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও বিপজ্জনক। স্থানীয়রা বলছেন, এ ঘটনায়, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারের উচিত কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং রাষ্ট্রের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করে এই ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। রাষ্ট্রের ঐক্য,সংবিধান এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কোনোভাবেই এই ধরনের কার্যকলাপকে সহ্য করা যাবে না।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন