রোয়াংছড়িতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সেনা রিজিয়নের সহায়তা
বান্দরবান পার্বত্য জেলার রোয়াংছড়ি বাজারে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন।
রোববার (২৮ জুন) সকালে বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ক্ষতিগ্রস্তদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত পূর্বক এসকল সহায়তা প্রদান করেন।
এসময় বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডারসহ অন্যান্য সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
সহায়তা প্রদানের সময় বান্দরবান সেনা রিজিয়ন কমান্ডার বলেন, আপনাদের এই পরিস্থিতিতে আমি সমবেদনা জানাচ্ছি। একটি পরিকল্পিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেলে তা নতুন করে সাজানো অনেক কষ্টের হয়ে থাকে, আপনারা মনোবল হারাবেন না, ঘুুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। যে কোন দূর্যোগময় পরিস্থিতিতে পার্বত্য এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা আপনাদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষৎতেও থাকবে।
পরবর্তীতে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সর্বসাধারণের এরুপ ক্ষয়ক্ষতিতে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন।
এর আগে গতকালও সেনা রিজিয়নের নির্দেশনায় তাৎক্ষণিক দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছিলেন বান্দরবান সেনা জোন।
প্রসঙ্গতঃ শনিবার (২৭ জুন) মধ্য রাতের দিকে বান্দরবান পার্বত্য জেলার রোয়াংছড়ি বাজারে আগুনের সুত্রপাত ঘটে।
সর্বসাধারণের সহায়তায় তৎক্ষণাত ছুটে আসে রোয়াংছড়ি সেনা ক্যাম্পের সেনা সদস্যগণ। এসময় জ্বলন্ত আগুনের মাঝে আগুন নেভানো এবং জিনিসপত্র অক্ষত রাখার চেষ্টা করেছে সেনাবাহিনী।
তারা নিজের জীবন বাজী রেখে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে সাথে নিয়ে কেউ আগুন নিভানোর কাজে কেউ দোকান এবং বাড়ীতে থাকা জিনিসপত্র নিরাপদ রাখতে কাজ করেন। আর এই অক্লান্ত পরিশ্রমটি চলে মধ্য রাত হতে ভোর পর্যন্ত।
মূলত ভীত জনপদের প্রাণ সঞ্চার করে সেনাবাহিনী ও সকলকে নিয়ে সম্মেলিতভাবে আগুন নির্বাপণে সহায়তা করে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, মধ্য রাতে বাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পরে আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই অগ্নিকাণ্ডে ১৭ টি বাড়ী, ৮ টি মুদি দোকানসহ বাড়ী, ২৫ টি মুদিখানার দোকান, ৪ টি কাপড়ের দোকান, ৪ টি টিভি ইলেকট্রিক মেরামতের দোকান, ৩ টি ফার্মেসীর দোকান, ১ টি ফার্নিচার স্টোর, ১টি জুতার দোকান এবং ১টি জুয়েলারি দোকান পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
আগুন লাগার খবর পেয়ে রোয়াংছড়ি ও বান্দরবান সদরের ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটসহ সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় জনগন মিলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
রোয়াংছড়ি বাজারের নিকটবর্তী সেনা ক্যাম্প হওয়ায় আগুনের শুরু থেকে তাদের উপস্থিতির জন্য অনেক জিনিসপত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ জানান।
ধারণা করা হচ্ছে অগ্নিকাণ্ডে ৬ থেকে ৭ কোটি (স্থানীয়দের ভাষ্য মতে) টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ তাদের বিপদের সময় সেনাবাহিনীকে পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এছাড়া নগদ অর্থসহ বান্দরবান জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম ত্রাণ বিতরণ করেন রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মেহেদী হাসান ও পৌর মেয়র ইলাম বেবীসহ।