শীঘ্রই বিজিপির ১৭৭ সদস্যকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে: জেলা প্রশাসক
মিয়ানমারে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাতের জেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশ, বিজিপির ১৭৭ সদস্যকে শীঘ্রই ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ প্রান্তে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. মুজাহিদ উদ্দিন।
রোববার (২৪ মার্চ) বিকেলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বিষয়টি অতি সিক্রেট আর রাষ্ট্রীয়। সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার দু’দেশের ঊধ্বর্মহল সব বিষয় ঠিক রেখে এটি সম্পন্ন করবে। তবে অতি শীঘ্রই তাদের ফেরত পাঠানো হবে। প্রক্রিয়া শেষ প্রান্তে। তবে তিনি দিনক্ষণ বলতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ সোমবার দুপুর ও বিকেল এ পৃথক সময়ে তিন দফায় মিয়ামানমারের রাখাইন রাজ্যে বিজিপিসহ ১৭৯ জন সদস্য সীমান্তের জামছড়ি পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে। যাদের আশ্রয় দেয়া হয় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরের ১১-বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদরের বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
যাদের মধ্যে ২ জন বেসামরিক ব্যক্তি রয়েছে। তাদের ১২ মার্চ মিয়ানমারে পুশব্যাক করা হয়। বাকী ১৭৭ জন বিগত ১৩ দিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়িতে বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ বিজিবির তত্ত্বাবধানের রাখা হয়েছে।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চেরারমাঠ সীমান্তের জান্তা বাহিনীর ফেলে যাওয়া ৫০ বছরের সেই ঘাঁটিটি দীর্ঘ ১ বছর পরিত্যক্ত ছিলো। রোববার ( ২৪ মার্চ) থেকে এ ঘাঁটিতে বিদ্রোহী আরকান আর্মি কিছুটা স্ংস্কার করে ঢুকে পড়েছে। তারা এখন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের ঠেকাতে নতুন করে এখানে আবস্থান করছে।
চেরারকূলের বাসিন্দা ছৈয়দ হোসেন, আশরাফজামান ও দলিল বকসু এ প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তবে অন্যান্য কোন কতৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
রোহিঙ্গা যুবকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ
অপরদিকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলার বুথিডং টাউন শিপ এলাকায় LIR – 552 ব্যাটালিয়ান নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মি দীর্ঘদিন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
আর এ যুদ্ধে জান্তা বাহিনী সেনাদের সাথে স্থানীয় রোহিঙ্গা যুবকদের সল্প মেয়াদী সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া রোহিঙ্গা যুবকদেরকে সেনাদের সাথে পাঠিয়ে সামনের সারিতে যুদ্ধের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছেন বলে সূত্রে জানা যায় যার ফলে গত ২৩ মার্চে ৭ জন রোহিঙ্গা সৈনিক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। নিহত সৈনিকরা সিটুয়ে জেলার আইডিপি রোহিঙ্গা শিবিরের রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে । বিষয়টি জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতা আলতাফ হোসেন ও শাব্বির আহসদ।
তারা জানান, মিয়ানমার রাখাইন প্রদেশের মংডু জেলার, বুথিডং ও সিটুয়ে থেকে মিয়ানমার সেনা ও পুলিশরা রোহিঙ্গা যুবকদেরকে আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এ কারণে অধিকাংশ রোহিঙ্গা যুবক প্রাণের ভয়ে পাড়া গ্রাম ছেড়ে দেশ-বিদেশসহ বাংলাদেশে কৌশলে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টায় রয়েছে। আবার অনেকে নৌপথে বিদেশে পাড়ি জামাচ্ছে।
এদিকে ওপারে সংঘাতের সুযোগে উভয় দেশের কয়েক হাজার চোরাকারবারী নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় অবৈধ ব্যবসাসহ চোরাচালানে জড়িয়ে কোটিপতি বনে গেছে। তবে বিজিবি তাদের অভিযান ও তৎপরতা বাড়িয়েছে বলেও সূত্র উল্লেখ করেন।