সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে মসজিদ নির্মাণ কতোটা যৌক্তিক?


সাজেক- থানা হওয়ার আগে ছিলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। ইউনিয়ন হলেও এর আয়তন প্রায় টাঙ্গাইল জেলার সমান। পরবর্তীতে সাজেক একটি থানা হয়। রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অধীভুক্ত একটি থানা। রাঙামাটি জেলার অন্তর্গত হলেও রাঙামাটি থেকে সাজেক যাওয়ার সহজ কোনো পথ নেই। সাজেকগামীদের খাগড়াছড়ি হয়ে যেতে হয়। সাজেকে আমি এ পর্যন্ত ৬/৭ বার ভ্রমণ করেছি। সাজেক যখন আজকের ব্যস্ত পর্যটন কেন্দ্র- সাজেক হয়নি তখনো গিয়েছি, সাজেক গড়ে ওঠার সময়ও গিয়েছি, আবার ব্যস্ত পর্যটন কেন্দ্র হওয়ার পরও গিয়েছি।
প্রথমবার সাজেক গিয়েছি সম্ভবত ২০০৮ সালে। আমি ইনকিলাবের তৎকালীন খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি এইচএম ফারুককে সাথে নিয়ে সাজেক যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।তখন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন রুইথি কার্বারী।তিনি আমাদের পার্বত্য সংহতি পরিষদের সদস্য ছিলেন। সেই সুবাদে তার সাথে আমার পূর্ব পরিচয় ছিলো। রাতে তার বাসায় আমাকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেখানেই তার কাছে পরের দিন সাজেক যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করে সাজেক সম্পর্কে তথ্য জানতে চাই।
তিনি জানালেন, তিনি নিজেও কখনো সাজেক যাননি। তবে রাঙামাটি কলেজে পড়াকালীন সেখানকার দুয়েকজন সহপাঠীর কাছ থেকে সাজেকের গল্প শুনেছেন। তবে আমাদের অবাক করে দিয়ে তিনি বললেন, আপনারা যে মাইক্রো নিয়ে ঘুরছেন, এটা দিয়ে সাজেকের পাহাড়ে উঠতে পরবেন না। তার চেয়ে আমার সেকেন্ড গাড়িটা দিচ্ছি, ঘুরে আসুন। তার এই অপ্রত্যাশিত প্রস্তাবে খুশি হয়েছিলাম এবং তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রেস্ট হাউজে ফিরে এলাম। রাত ১১টার দিকে তিনি ফোন করে বললেন: দাদা, আমি নিজেও কখনো সাজেক যাইনি, তাই আপনারা যাচ্ছেন শুনে লোভ সামলাতে পারছি না, কাল আপনাদের সাথে আমিও যাবো। আমার সাথে পুলিশ প্রটেকশন থাকবে- আপনাদের নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হবে না।
সকালে আমরা তার সরকারি বাসভবনে গিয়ে হাজির। তিনি প্রস্তুতই ছিলেন। আমাদের দেখে বেরিয়ে এলেন। কিন্তু সাথে তার স্ত্রী ও পুত্র। বললেন, দাদা আমি যাচ্ছি শুনে স্ত্রী ও পুত্রও বায়না ধরেছে, তারাও যাবে। তারাও সাজেকের অনেক গল্প শুনেছে, কিন্তু যায়নি কখনো, তাই আর না করতে পারছি না। আমরাও খুশি হলাম। কারণ, নতুন ঝা চকচকে এসইউভিতে চড়ে যাবো, পুলিশ প্রটেকশনের ফলে নিরাপত্তা ও আশ্বস্ততা বেড়ে গিয়েছিলো। সবেচেয়ে ভালো লাগছিলো এটা ভেবে যে, খাগড়াছড়ির বাসিন্দা হয়েও তারা এতোদিন সাজেক দেখেননি, কিন্তু আমরা সেটা দেখতে চলেছি।
তবে আমাদের সেই আনন্দ বিষাদে পরিণত হতে বেশি সময় লাগেনি। কারণ, বেশকিছুদুর অগ্রসর হওয়ার পর আমাদের ড্রাইভার ও সাথে থাকা পুলিশ সদস্যরা জানান, তারা কেউই সাজেকের পথ চেনেন না। এদিকে পাকা পথ পেরিয়ে, কাঁচা পথ মাড়িয়ে আমরা ক্রমশ যতোই উঁচু পাহাড়ি বনের মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করলাম, ততোই রাস্তা হারাতে শুরু করলাম। এ পর্যায়ে দাতা সংস্থার গাড়ির চাকার রাস্তা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। সম্পূর্ণ জনমানবহীন উঁচু পাহাড়ি বনের মধ্যে হারিয়ে গেলাম। সঙ্গের যাত্রীরা সবাই ভয়ার্ত কণ্ঠে বলছিলো, দাদা, সম্ভবত আমরা পথ হারিয়ে ফেলেছি, চলেন ফিরে যাই। কিন্তু আমি ছিলাম সঙ্কল্পবদ্ধ।
একজন নেমে এসে চেয়ারম্যান সাহেবকে বললো, স্যার আমরা মনে হয় পথ ভুলে ভারতীয় সীমান্তের কাছে চলে এসেছি, তাই আর এগুনো ঠিক হবে না। সবাই তাতে সায় দিলো। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। মাঝে মাঝে পাহাড়ি ছড়া পেরুতে কষ্ট হচ্ছিল। গাড়ি থেকে নেমে পড়তে হয়েছে। আরো কিছুদূর এগুনোর পর একটি বিজিবি ক্যাম্প দেখে সবাই কিছুটা আশস্ত হলাম এবং তাদের কাছ থেকে সাজেক সম্পর্কে তথ্য নিয়ে পুনরায় যাত্রা করলাম।সাজেকের চেয়ারম্যান এল থাঙ্গা পাঙ্খো আমার বিশেষ পরিচিত ছিলেন। তিনিও আমাদের পার্বত্য সংহতি পরিষদের সমস্য ছিলেন। মূলত তার কাছ থেকেই সাজেকের গল্প শুনে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম।
এই যাত্রা ও যাত্রা অভিজ্ঞতার গল্প অনেক দীর্ঘ। আজকের পাঠকদের সে বর্ণনা দিয়ে ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না। এটুকু বলা প্রয়োজন হলো এই কারণে যে, আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটের অন্যতম সাজেক এমনি এমনি হয়নি। এই তিলোত্তমা পর্যটন স্পট গড়তে ও রক্ষা করতে বহু মানুষের ঘাম, শ্রম ও রক্ত ঝরেছে। আজকের সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য এটা অনুধাবন করা কষ্টকল্পনা।
দ্বিতীয়বার সাজেক গিয়েছিলাম সম্ভবত ২০১৫ সালে। তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাজেক যাওয়ার রাস্তা করেছে। সেখানে সাজেক রিসোর্ট ও রুন্ময় নামে তারা পর্যটকদের জন্য দুটি অবকাশ কেন্দ্র করেছে। বেসরকারিও বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল নির্মাণ হয়েছে, বেশিরভাগই নির্মাণাধীন।তবে সাজেকে অবস্থানকালে সেখানে নামাজ পড়ার জায়গার অভাব বোধ করেছে আমার মতো আরো অনেকেই। পরদিন ফিরে আসার পর স্থানীয় শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা সাজেকে আমার অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে আমি উচ্ছ্বসিত প্রশংসার পাশাপাশি নামাজের জায়গার সঙ্কটের কথা বলেছিলাম।আমার ধারণা, আরো অনেকেই বলে থাকবেন। পরবর্তীতে যখন সাজেক গিয়েছি, সেখানে একটি নামাজের স্থান দেখতে পেয়েছি। এটাকে ঠিক মসজিদ না বলে, এবাদতখানা বলাটাই শ্রেয় বলে মনে হয়েছে। সেই সাজেকে এতবছর পর রাঙামাটি জেলা পরিষদ একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে- এটা ছিলো পর্যটকদের প্রাণের দাবি।
কিন্তু এ নিয়ে কতিপয় পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও তাদের সমর্থকেরা মিছিল, মিটিং, মানববন্ধন থেকে শুরু করে সোস্যাল মিডিয়ায় এমনভাবে ঘৃণাত্মক ও অপসাম্প্রদায়িক প্রচারণা চালাচ্ছে যেন, এই একটি মসজিদ ঠেকানো গেলে তাদের স্বপ্নের জুম্মল্যান্ড বাস্তবায়িত হয়ে যাবে। এমন তো না যে, পাহাড়ে আর কোথাও মসজিদ নেই বা হচ্ছে না। তাহলে সাজেকে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে কেন এই প্রচারণা? এ প্রশ্নের উত্তরে যাওয়ার আগে সাজেকে মসজিদের প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয় আলোকপাত করতে চাই?
- ১. সাজেকে প্রতিদিন গড়ে ২-৩ হাজার পর্যটক গমন করে। বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফি অনুযায়ী, এই জনসংখ্যার ৮৫% মুসলিম। এই পর্যটকদের নামাজের জন্য সেখানে কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?
- ২. শুক্র-শনিবার ও বিশেষ ছুটির দিনগুলোতে এই পর্যটকের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সেসময় ও শুক্রবারের জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য সেখানে কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?
- ৩. সাজেকে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকান মালিক, শ্রমিক, কর্মচারী, ড্রাইভার যাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম, তারা সেখানে সারাদিন বা সার্বক্ষণিক থাকে- তাদের নামাজের জন্য কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?
- ৪. সাজেকে পর্যটন স্পটের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, পুলিশ ও অন্যান্য সরকারি কর্মচারী যারা সেখানে সার্বক্ষণিক অবস্থান করে তাদের নামাজের জন্য কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?
- ৫. সাজেকে গির্জা আছে, কিয়াং আছে, মন্দির আছে। সব ধর্মের প্রার্থনা কেন্দ্র থাকতে পারলে মুসলিমদের নামাজের জন্য মসজিদ থাকতে সমস্যা কোথায়?
- ৬. সাজেককে যদি পর্যটনবান্ধব করতে হয়, তাহলে পর্যটকদের সুবিধার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করা জরুরি নয় কি?
বিষয়টাতো এমন নয় যে, কারো জমি জবরদখল করে বা কাউকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে এই মসজিদ নির্মিত হচ্ছে বা নির্মাণাধীন জমির মালিকানা দাবী করে কেউ প্রতিবাদ করছে। এটি সম্পূর্ণ সরকারী জমিতে নির্মিত হচ্ছে। যারা প্রতিবাদ করছে, তারা রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকেই করছে।
প্রতিবাদী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সাজেকে মসজিদ না করে হাসপাতাল করা জরুরী। তো এই কথা এখন মনে পড়লো কেন? পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে আঞ্চলিক পরিষদ বিপুল বরাদ্দ পাচ্ছে, জনগণের অধিকার রক্ষার নামে বছরে চারশত কোটি টাকারও অধিক অর্থ চাঁদাবাজীর মাধ্যমে আয় করেছে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা। এসব টাকা দিয়ে তারা কয়টি হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে? হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক দুরে থাক, কয়টা হেল্থ ক্যাম্প পরিচালনা করেছে তারা? পার্বত্য চট্টগ্রামে খাস জমি, রিজার্ভ ফরেস্টের জমি বা বাঙালির কবুলিয়তভূক্ত জমি জবরদখল করে এরা অসংখ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, তখনতো একবারও মনে হয়নি একটি হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরির কথা।
পুরো সাজেক অঞ্চলই রিজার্ভ ফরেস্ট। তবু সেখানে পূর্ব থেকেই পাঙ্খো, লুসাই ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জনবসতি ছিলো। কাপ্তাই লেকের ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনের আওতায় বেশ কিছু চাকমা ও বাঙালিকে সাজেকের বিভিন্ন অঞ্চলে পুনর্বাসিত করা হয়। পরবর্তীকালে বাঙালি সেটেলমেন্টের সময়ও বেশ কিছু বাঙালি বসতি গড়ে ওঠে। তারপরও ২০০৮ সালে প্রথম যখন সাজেক যাই, দিঘীনালা পার হওয়ার পর থেকে রাস্তার দুইপাশ জনমানবহীন দেখেছি। কিন্তু পরবর্তীকালে যখন সাজেক গিয়েছি, রাস্তার দুইপাশে অসংখ্য নতুন নতুন বসতি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে দেখেছি। সরকারী জমি দখল করেই এসব বসতি গড়ে উঠেছে। কই তখন তো একবারও মনে পড়েনি সাজেকে একটি হাসপাতাল বা নিদেনপক্ষে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার কথা!
আমি বলছি না সাজেকে হাসপাতালের প্রয়োজন নেই। সাজেকে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবী সঙ্গত, আমিও এ দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। যত দ্রুত সম্ভব সাজেকে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হোক, না হলে অন্তত একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হোক। কিন্তু তার জন্য মসজিদের বিরোধিতা করতে হবে কেন? মসজিদ রুখে দিয়ে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার দাবীর মধ্যে তাদের দাবীর অসাধুতা প্রমাণিত হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, সরকার পাহাড়ে উন্নয়নের স্বর্ণ দুয়ার খুলে দিয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী প্রতিবাদে জানায় পাহাড়ে উন্নয়নের স্বর্ণদুয়ার খোলেনি।
যুক্তির খতিরে যদি তাদের বক্তব্যকে সঠিক ধরা হয় তাহলে বলতে হবে, পাহাড়ে যদি উন্নয়নের দুয়ার না খুলে থাকে তার জন্য কে দায়ী? সব দরোজা বন্ধ করে রাখলে উন্নয়ন কোন পথে প্রবেশ করবে পাহাড়গৃহে। সরকার পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ করতে উদ্যোগ নিলে তাতেও বাধা আসে একই শক্তির পক্ষ থেকে। কারণ হিসেবে বলা হয়, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় হলে পড়তে ও পড়াতে সমতল থেকে ছাত্র-শিক্ষক পাহাড়ে প্রবেশ করবে। সড়ক ও সেতু নির্মাণ করতে গেলে সেখানেও বাধা, বিনিয়োগে বাধা, পর্যটনে বাধা, শিল্পায়নে বাধা। যুক্তি একটাই। এগুলোতে সমতলের লোকেদের পাহাড়ে অনুপ্রবেশ বাড়বে। তবুও যদি যুক্তির সততা থাকতো তবুও একটা কথা ছিলো। কেননা, নির্মাণ কাজের কমিশন ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের তদ্বিরের লোকদের নিয়োগ দিলে আবার সেই বাধা অপসারিত হয়ে যায়।সাজেক পর্যটন কেন্দ্র চালুর ক্ষেত্রেও তারা একই ধরনের বাধার সৃষ্টি করেছিলো এবং একই প্রক্রিয়ায় সে বাধা অপসৃত হয়েছে।
কিন্তু তাদের দাবি সত্য নয়। শান্তিচুক্তির পরে পাহাড়ে প্রকৃতপক্ষেই উন্নয়নের স্বর্ণদুয়ার খুলে গেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সঙ্গত কারণে অনেক মসজিদ রয়েছে। সেগুলো সংস্কার ও পুননির্মাণও হচ্ছে।সাজেকেও একটি এবাদতখানা রয়েছে। প্রয়োজনের নিরীখে হয়তো মসজিদে রূপ নিয়েছে। তাহলে সাজেক মসজিদ নিয়ে এতো প্রশ্ন উঠেছে কেন?
উত্তরটা সাজেক মসজিদের সাথে সেনাবাহিনীকে জড়ানোর অভিপ্রায়ে। অথচ সাজেক মসজিদ নির্মাণ করছে রাঙামাটি জেলা পরিষদ। যার চেয়ারম্যান একজন চাকমা সম্প্রদায়ভুক্ত। এর সাথে সেনাবাহিনীর কোনোই সম্পর্ক নেই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এই মসজিদ নির্মাণের সাথে সেনাবাহিনীকে কেন জড়িত করে অপপ্রচার করা হচ্ছে?
এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেতে গেলে বিগত ৫-৬ বছরের পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগী রাজনৈতিক শক্তির সাম্প্রদায়িক, ঘৃণাত্মক রাজনীতি ও সন্ত্রাসের রাজনীতির গতিপ্রবাহে অভিক্ষেপ করা প্রয়োজন। একই সাথে আগামী ২-৩ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগী রাজনৈতিক শক্তির সাম্প্রদায়িক, ঘৃণাত্মক রাজনীতি ও সন্ত্রাসের রাজনীতির সম্ভাব্য ঝোঁকের দিকেও দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখলে সঠিক উত্তর পাওয়া সম্ভব।
প্রকৃতপক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের চারদিকে কান পাতলে এখানকার ইনসার্জেন্সি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনীতির যুগান্তর, প্রজন্মান্তর এবং নতুন যুগ ও প্রজন্মের পালাবদলের পদধ্বনি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে বেশ জোরেশোরে। খাগড়াছড়িতে উপজাতীয় তরুণী ধর্ষণের ঘটনা, সাজেকে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি, বান্দরবানে একের পর হত্যাকাণ্ড, বাঘাইছড়িতে বন্দুকযুদ্ধ তারই মহড়া বা মাঠ প্রস্তুতের কার্যক্রম বলা যেতে পারে।
পরবর্তী লেখায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
♦ লেখক: সম্পাদক, পার্বত্যনিউজডটকম ও পাক্ষিক পার্বত্যনিউজ; চেয়ারম্যান, সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষক
লেখকের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আরো কিছু লেখা
- ♦ বিশ্ব আদিবাসী দিবস ও বাংলাদেশের আদিবাসিন্দা
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে সরকারী সিদ্ধান্তে দৃঢ়তা কাম্য
- ♦ বিতর্কিত সিএইচটি কমিশনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে
- ♦ আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে সমস্যা কোথায়?
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম জাতীয় দৃষ্টির মধ্যে রাখতে হবে
- ♦ একটি স্থায়ী পার্বত্যনীতি সময়ের দাবী
- ♦ বাংলাদেশে আদিবাসী বিতর্ক
- ♦ আদিবাসী বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের ভুল ব্যাখ্যা ও অপপ্রয়োগ
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ১
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ২
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম কি বাংলাদেশ নয়, বাঙালীরা কি মানুষ নন- ৩
- ♦ শান্তিচুক্তির এক যুগ: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ গোষ্ঠির অতিআগ্রহ বন্ধ করতে হবে
- ♦ হঠাৎ উত্তপ্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম: খতিয়ে দেখতে হবে এখনই
- ♦ অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান সময়ের দাবী
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর কি কাজ
- ♦ রোহিঙ্গা ইস্যু : শেখ হাসিনা কি ইন্দিরা গান্ধী হতে পারেন না?
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক নীতি-কৌশলের পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন
- ♦ পাহাড়ের উৎসব: ‘বৈসাবি’ থেকে হোক ‘বৈসাবিন’
- ♦ ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন: সরকারের মর্যাদা কর্তৃত্ব ও এখতিয়ার ক্ষুণ্ন হতে পারে
- ♦ ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন বৈষম্যমূলক ও বাঙালি বিদ্বেষী
- ♦ ভারত ভাগের ৬৯ বছর পরও পার্বত্য চট্টগ্রাম আগ্রাসন দিবস পালন করে পাহাড়ী একটি গ্রুপ
- ♦ বিজিবি ভারতের ভূমি ও সড়ক ব্যবহার করে বিওপি নির্মাণ করছে
- ♦ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার না করতে তথ্য বিবরণী জারী করেছে সরকার
- ♦ বিজিবি’র মর্টার গোলার আঘাতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ২ কর্মকর্তাসহ ৪ সেনাসদস্য নিহত: আহত ৩
- ♦ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলিতে আরো ৪ বিজিবি সদস্য নিখোঁজ (ভিডিওসহ)
- ♦ নাইক্ষ্যংছড়ির বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে চরম উত্তেজনা : মিয়ানমারের বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন, গুলিবর্ষণ
- ♦ জেএসএস’র খাগড়াছড়ির পুনরুদ্ধার মিশন: দ্রুত অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে পার্বত্য চট্টগ্রাম
- ♦ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার না করতে তথ্য বিবরণী জারী করেছে সরকার
- ♦ বাংলাদেশের উপজাতীয়রা আদিবাসী নয় কেন?
- ♦ শরণার্থি ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুর নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে কাকে পুনর্বাসিত করতে চাইছে টাস্কফোর্স
- ♦ ভারত প্রত্যাগত শরণার্থি ও অভ্যন্তরীণ উপজাতীয় উদ্বাস্তুর সংখ্যা কতো?
- ♦ জেএসএসের আপত্তির কারণে টাক্সফোর্স থেকে বাঙালী উদ্বাস্তুদের বাদ দেয়া হয়
- ♦ ক্ষমা চাই আতিকুর রহমান
- ♦ শরণার্থি ও উদ্বাস্তুদের তালিকা তৈরি ও যাচাইয়ের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দিতে হবে
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই দশক: পুনর্মূল্যায়ন জরুরি
- ♦ কুকিছড়ার বুদ্ধ মন্দির ও মূর্তি ভাঙার ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে
- ♦ রাজনৈতিক ডামাডোলে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভেঙে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড প্রতিষ্ঠার তৎপরতা
- ♦ শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে তার যুগোপযোগীকরণ অত্যন্ত জরুরি
- ♦ নির্বাচনী ইশতেহারে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি
- ♦ পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা কৌশলের পুন:বিন্যাস জরুরী
- ♦ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র আন্দোলন
- ♦ শান্তিচুক্তির দীর্ঘদিন পরেও পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের কেন টার্গেটে সরকার ও সেনাবাহিনী?
- ♦ কোনো অপশক্তির কাছে মাথানত করবে না পার্বত্যনিউজ
- ♦ রূপকুমার চাকমা: পাহাড়ে এক সাহসের অকাল প্রয়াণ