সাভারে ১৭ দিন ধরে অলৌকিকভাবে বেঁচে থাকা রেশমার উদ্ধার করা হলো
সাভার থেকে: আল্লাহর অশেষ রহমতে রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে রেশমা নামের একজন জীবিত শ্রমিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হলো। আজ বিকাল চারটা ২৮ মিনিটে উদ্ধারকারী দল তাকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর এম্বুলেন্সে করে সিএমএইচ এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে তাকে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে উদ্ধারকারী দল ধংসস্তুপ অপসারণে গেলে রেশমা একটি ছিদ্র দিয়ে পাইপ বের করে উদ্ধারকারী দলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিষয়টি খেয়াল করে সেনা সদস্য রাজ্জাক। সে তার নিজের নাম আসমা বলে জানায়। উদ্ধারকারী সেনা সদস্য মেজর মোয়াজ্জেম বলেন, আসমা তাকে বলেছেন, সে যেখানে ছিলেন সেখানে প্রচুর খাবার ছিল। খোঁজ পাবার পর কাতে উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায় সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল। উদ্ধারের আগে তাকে খাদ্য ও অক্সিজেন দেওয়া হয়ে। রেশমা উদ্ধারের পর সেনাবাহিনী ধংসস্তুপে আরো প্রানের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে। এটি একটি বিশ্ব রেকর্ড। এর আগে হাইতির ধংসস্তুপে সর্বোচ্চ এগারো দিন পর জীবিত মানুষকে উদ্ধার করা হয়। ফলে ইতোমধ্যেই রেশমার উদ্ধার ঘটনা বিশ্ব মিডিয়ায় ব্রেকিং নিউজ হিসাবে স্থান পেয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সাড়ে তিনটার দিকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনের অংশে রেশমার সন্ধান পাওয়া যায়। বেসমেন্টের নামাজ পড়ার স্থানে রেশমা আটকে ছিল। পুরো ভবনটি ধসে পড়লেও সেই স্থানে তিনি অক্ষত ছিল।
তার সন্ধান পাওয়ার পর সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়, যাতে দ্রুতই হাসপাতালে নেওয়া যায়।
তার সন্ধান পাওয়া উদ্ধারকারী একজন স্বেচ্ছাসেবক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আমি ওই স্থানটি দিয়ে যাতায়াত করছিলাম। এসময় একটি গোঙানির আওয়াজ শুনি। এরপর একটি ফুটো দিয়ে কান পাতলে ভেতর থেকে এক নারী কণ্ঠ বলে ওঠে, আমাকে বাঁচান, আমাকে বাঁচান। তিনি তার নাম বলেন রেশমা। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সবাই তার সঙ্গে কথা বলেন।”
রেশমাকে উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকারীর দল এ মুহূর্তে ভারী যন্ত্রপাতির ব্যবহার বন্ধ রাখে। কাটার মেশিন দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে তাকে বের করার চেষ্টা করা হয়।
গত ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এতে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।