আজ থেকেই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে : র‌্যাব

fec-image

পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযান চালাবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, কেএনএফের কাছে কি ধরনের অস্ত্র আছে সেটি আটকের পর বলা যাবে। তাছাড়া গত মঙ্গলবারে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে যে-সব অস্ত্র লুট হয়েছে সেটি কম নয়। সে লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সমন্বিতভাবে আজ থেকেই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হবে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রুমা সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নিজাম উদ্দীনকে সম্পূর্ণভাবে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া ছিল মূল টার্গেট। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যৌথ অভিযান চালিয়ে বেথেল পাড়া থেকে কয়েক মাইল দূরে হতে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে সম্পূর্ণ অক্ষত ও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছি। এবং উদ্ধারের পর তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার বলেন, গত ২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রথমে মসজিদে হামলা চালিয়ে নামাজরত অবস্থায় ব্যাংক ম্যানেজারকে তুলে নিয়ে যায়। ব্যাংকে নিয়ে ব্যাকের ভল্ট ভেঙ্গে টাকা লুট করার চেষ্টা ব্যর্থ হলে ব্যাংক ম্যানেজারের কাছ থেকে ১ কোটি টাকা দাবি করে। তাদের চাহিদা মত টাকা না পেয়ে ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশের ১০টি ও আনসার সদস্যের ৪টি মোট ১৪টি সরকারি অস্ত্র ও গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার আরো বলেন, অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা ব্যাংক ম্যানেজার মো. নেজাম উদ্দীনকে রাত ৩টা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে পাহাড়ি পথে গহিন অরণ্যে নিয়ে গিয়েছিল। এসময় কেএনএফ সদস্যরা অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে দুই বেলা খাবার সরবরাহ করেছে এবং ঘুমানোর সুযোগ দিয়েছিল। তবে কেএনএফ সদস্যরা অপহৃতের সাথে কোন খারাপ আচরণ বা শারীরিক নির্যাতন করেনি। কেএনএফের পক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহৃতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে কেএনএফ। অপহরণ ঘটনার পর সরকারের নির্দেশে র‍্যাব, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে কৌশল অবলম্বন করে আমরা অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে পরিকল্পনা করি। সেই মত আমরা স্থানীয় জনসাধারণসহ সকলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলি। আমরা আমাদের পরিকল্পনা মতে মুক্তিপণ ছাড়াই গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে রুমা সদরের বেথেল পাড়া থেকে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

এসময় র‍্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা গত ২ তারিখে রুমা ব্যাংক ও অস্ত্র লুট ঘটনার পরের দিন দিন-দুপুরে থানচিতে দুটি ব্যাংক লুট করে। গতরাতে আবারো থানচিতে ব্যাংক লুট করতে গিয়ে পুলিশ ও বিজিবি’র উপর গুলিবর্ষণ করেছে। তারা দিনের পর দিন সীমা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য কখনো কাম্য হতে পারেনা।

র‍্যাবের গণমাধ্যম কমান্ডার বলেন, কেএনএফ তাদের সক্ষমতা জানান দিতে এবং তাদের কর্মীকে আকৃষ্ট করাতে একের পর এক নাশকতা ওদিন দুপুরে হামলা চালাচ্ছে। আমরা ব্যাংক ম্যানেজারকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। এখন আমাদের আর কোনো পিছু টান নেই। পুলিশ ও আনসারের ১৪টি লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধীদের ধরতে শীঘ্রই সাঁড়াশি অভিযান চালাবে র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী।

এদিকে গত ২ এপ্রিল থেকে রুমা ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজার অপহরণ ও থানচির দুই দফা ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন