আমার স্বাধীনতা যুদ্ধ ও জীবন

fec-image

১৯৫৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি সদরের চেঙ্গীমুখ এলাকায় আমার জন্ম, চেঙ্গীমুখ এলাকাটি পরে হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়, সেজন্য আমরা আমাদের পরিবার গর্জনতলিতে শিফট করি। এরপর আমার লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে ১৯৬৭ সালে আমার ঠাকুর দাদার সাথে বান্দরবান চলে যাই এবং লেখাপড়া শুরু করি। ১৯৭০ সালে আমি মেট্রিক পাস করার পরে রাঙামাটি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন, পরের দিন ৮ মার্চ রেডিওতে শুনে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করি। ১০ থেকে ১২ মার্চের দিকে আমি রাঙামাটি থেকে বান্দরবানে চলে যাই। কারণ, তখন আমাদের ক্লাস চলছিল না, বান্দরবান গিয়ে আমরা সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন করি। বান্দরবান আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান, মোখলেছুর রহমান এবং আমরা ছাত্ররা মিলে একটা সংগ্রাম কমিটি গঠন করি। সংগ্রাম কমিটির নিকট একনলা বন্দুক হস্তান্তর করা হয়েছিল। আমরা পাহারা দিতাম বিভিন্ন পয়েন্টে। বিশেষ করে আমরা বান্দরবানের প্রবেশমুখে রাস্তা পাহারা দিতাম। এদিকে কালুরঘাটে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআরের সাথে পাক বাহিনীর যুদ্ধ চলছিল। কালুরঘাটের দক্ষিণাঞ্চলে ছিল আমাদের মুক্তি বাহিনী অর্থাৎ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, পুলিশ, রিজার্ভ পুলিশ, আনসার বাহিনী আর উত্তরপাড়ে ছিল পাক বাহিনী।

পাক বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে আমাদের মুক্তি বাহিনী টিকতে না পেরে তারা বান্দরবান হয়ে পশ্চাদপশরণ শুরু করে। এটা সম্ভবত এপ্রিলের ১৭ কিংবা ১৮ তারিখের দিকের ঘটনা। ঐ সময় কালুরঘাটে যে বেতার কেন্দ্র ছিল, সেই বেতারকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি নিয়ে তারা পশ্চাদপশরণ শুরু করেছিল ভোরের দিকে।

তাদের পশ্চাদপশরণ করার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাদের আর এখানে থাকাটা নিরাপদ হবে না। আমরা ভারতে চলে যাব, এইসব বিষয় চিন্তা করে আমরা ভারতের দিকে অগ্রসর হতে থাকি। আমি ভারতে চলে যাওয়ার পরে মে মাসের শেষের দিকে অথবা জুনের প্রথমদিকে আমি দেমাগ্রিতে যাই, সেখানেই আমাদের রিক্রুট হয়, আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। আমি ১নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। আমার লাল মুক্তি বার্তা নম্বর ছিলো: ০২৭০১০০১৫। আমরা দেমাগ্রিতে বিভিন্ন অস্ত্রের উপর প্রশিক্ষণ নেই, এক্সপ্লোসিভ গ্রেনেড, থ্রি নট থ্রি রাইফেল এগুলোর উপর আমাদের প্রশিক্ষণ হয়। ২৮ দিনের ট্রেনিং গ্রহণের পর জুলাইয়ের ১৫ তারিখের দিকে আমাদের ওখান থেকে অপারেশনের জন্য পাঠানো হয়। অপারেশনে পাঠানোর পর আমরা তিনদিন তিন রাত হাঁটার পর রুমাতে চলে আসি। রুমায় আমরা আসি দুইটা গ্রুপ। প্রতি গ্রুপে ছিল ৪০ জন করে, মোট ৮০ জন। একটা গ্রুপ ছিল মোহাম্মদ আব্দুল হানিফের অধীনে, আরেকটা গ্রুপের দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল ওয়াহাব। উনি পরবর্তীতে জয়েন্ট সেক্রেটারি হয়েছিলেন। হানিফ গ্রুপে যারা ছিল, তারা যেহেতু দক্ষিণ চট্টগ্রাম অর্থাৎ পদুয়া, লোহাগড়ার দিকের লোক, সেজন্য তাদেরকে আমরা বললাম, তোমরা পাহাড় পার হয়ে তোমাদের এলাকায় অপারেশন করো। আমরা যেহেতু বান্দরবানের লোক, তাই আমরা বান্দরবানের দিকে যাই। আমরা ওখানে একটা ঘাঁটি করবো। ভারত থেকে যেসমস্ত ইপিআর ও মুক্তিযোদ্ধা আসবে তাদেরকে আমরা ওখানে সেল্টার দিবো। পরে ওখান থেকে দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, পটিয়া এবং কালুরঘাটে অপারেশন করবো। সেইজন্য আমরা দুইটা নৌকা নিয়ে ৪০ জন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে রওনা হই।

যখন আমরা বান্দরবানের কাছাকাছি কেচিংঘাটা এলাকায় আসি, তখন আক্রান্ত হই। সেখানে পাক বাহিনী রাইফেল দিয়ে আমাদের নৌকার উপর গুলি চালায়। সেখানে আমাদের দু’জন শাহাদাৎ বরণ করেন এবং একজনের হাঁটুতে গুলি লাগে। পরে শুনেছি, তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে টর্চার করে মেরে ফেলা হয়েছে। মোট আমরা তিনজনকে হারাই। সেখান থেকে আমরা ডোবাছড়ি নামক একটা জায়গায় যাই, তখন ছয়জনের মতো ছিলাম। বাকীরা কোথায় গেছে, আমার ঠিক জানা নাই। তখন ছিল বর্ষাকাল, বৃষ্টিতে ভিজে আমরা ডোবাছড়িতে যাই। ওখানে মোখলেছুর রহমানের অধীনে ৫৫ জনের একটা গ্রুপ ছিল। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, তৎকালীন ইপিআর বর্তমানে বিডিআর, রিজার্ভ পুলিশ এবং আনসার এইসব মিলিয়ে তাদের একটা গ্রুপ ছিল। সেইখানে আমরা আশ্রয় নেই। ওদের ওখান থেকেই পরে আমরা বেশ কিছু অপারেশন চালাই, এসব অপারেশনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজহাট মাদরাসা অপারেশন। লোহাগড়ার রাজঘাটা মাদরাসায় অপারেশন করি, ওখানে বেশ কিছু পাক বাহিনী ও রাজাকার হতাহত হয়।

এরপর আমি আবার ভারতে ফিরে যাই। সেখানে বলা হলো, এখন তোমাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ না, তোমাদের সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হবে। সেই জন্য তোমাদের হাইয়ার ট্রেনিং নিতে হবে। যাতে সম্মুখ যুদ্ধে তোমরা টিকে থাকতে পারো। কারণ, এর আগে যেগুলো ছিল, সেগুলো ছিল গেরিলা যুদ্ধ। গেরিলা যুদ্ধের নিয়ম ‘হিট এন্ড রান’, অর্থাৎ মারো এবং ভাগো। মেরে পালাতে হবে। জায়গা দখল করার কোনো সুযোগ নেই। এটাতে কিছু অসুবিধাও ছিল। আমরা যেসব জায়গায় অপারেশন চালাতাম, পরে সেখানে পাঞ্জাবিরা এসে স্থানীয় লোকদেরকে টর্চার করতো। এতে এলাকার মানুষজন আমাদের প্রতি কিছুটা বিরক্ত হতো। বিরক্ত হতো এইজন্য যে, আমদের অপারেশন চালানোর জন্যই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কাজেই গেরিলা যুদ্ধ করে একটা দেশকে স্বাধীন করা যায় না। সম্মুখ যুদ্ধ ছাড়া দেশকে স্বাধীন করা যায় না। গেরিলা যুদ্ধে শুধু প্রতিপক্ষকে আতঙ্কে রাখা যায়।

সেখানে আরও ১৭ দিন ট্রেনিং নিই, তারপর আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে আমরা দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ায় চলে আসি এবং আমাদের ক্যাম্প স্থাপন করি। ওখানে আরও চারটা গ্রুপ ছিল। আলম গ্রুপ, খোদা বক্স গ্রুপ। আলম গ্রুপের আলম পরে পুলিশের এডিশনাল আইজি হয়েছিলেন। খোদা বক্স, উনি পুলিশের আইজি হয়েছিলেন। আরেকটা ছিল ক্যাপ্টেন করিমের গ্রুপ, উনি ছিলেন ফ্লাইং সাব সার্জেন্ট। আরেকটা গ্রুপ হলো দলছুট কিছু ইপিআর। যদিও ওদের অস্ত্র-শস্ত্র, গোলা-বারুদ কমে গিয়েছিল।

তারপরও পাক বাহিনী কিন্তু সহজে ওদের উপরে আক্রমণ করার সাহস পেত না। তারা এ এলাকাকে নাম দিয়েছিল ‘সেকেন্ড ইন্ডিয়া’। তখন আমরা বিভিন্ন জায়গায় অপারেশন পরিচালনা করেছিলাম। কয়েকবার আমাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিল। পাকিস্তানিদের ছিল অঢেল গোলা বারুদ, আমরা তাদেরকে পিছু হটাতে পারছিলাম না। আমাদের টু-ইঞ্চি মর্টার ছিল, এক পর্যায়ে মর্টার দিয়ে চারটি গোলা তাদের দিকে নিক্ষেপ করি। তারপর তারা ওখান থেকে পশ্চাদপশরণ করে।

এরপরও আমাদের উপর চারবার হামলা হয়েছিল, আমরা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অতর্কিত হামলা চালাই। তারা চারবার চেষ্টা করার পরও আমাদের সেই জায়গাটা দখল করতে পারে নাই।

ডিসেম্বরের ৭ কিংবা ৮ তারিখ ওখানে ভারতীয় অফিসারদের অধীনে আরো দুইটা কোম্পানি চলে আসে, ওদের ভারী ও শক্তিশালী অস্ত্র ছিল। আমাদের কমান্ডাররা এবং ওরা মিলে একটি প্ল্যান করি। আমাদেরকে বলা হলো যে, ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টায় নদী পার হয়ে কালুরঘাট ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের দিকে রওনা দিবো।

আরেকটা গ্রুপ থাকবে চন্দ্রঘোনা লিচু বাগানের কাছে। কাপ্তাই থেকে যেসব পাক আর্মি পালিয়ে ক্যান্টনমেন্টের দিকে যাবে তাদেরকে প্রতিরোধ করা, বাধা দেওয়াই হবে তাদের কাজ। ১৬ ডিসেম্বর রাত ৯টা পর্যন্ত আমরা জানতাম না যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। যোগাযোগের এতই অভাব ছিল।

আমরা রাত ৮টায় খেয়ে দেয়ে প্রস্তুত, ৯টার দিকে রওয়ানা হব, ঠিক তখনই গোলাগুলি শুরু হয়ে গেল। গোলাগুলি শুরু হওয়ার পর আমাদের একটা আশংকা ছিল যে, আমরা কী আক্রান্ত হয়ে গেলাম কি-না। একজন, দু’জন এসে বলতেছে যে, দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। আমাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না যে, আসলেই কি দেশ স্বাধীন হয়েছে কি-না। কারণ, তখনও তো ভিয়েতনামে যুদ্ধ চলছিল, সেটা তো চল্লিশ বছরের উপরে হয়ে গেছে।

আমি ধরে নিয়েছিলাম যে, মিনিমাম আমাদের পনের বছর লাগবে বা তারও বেশি। আমার বিশ্বাসও হচ্ছিল না যে, এত তাড়াতাড়ি দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। তারপর বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে, ওয়ারল্যাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করে কনফার্ম হলাম যে, দেশ আসলেই স্বাধীন হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ওরা অস্ত্র সমর্পণ করে আত্মসমর্পণ করেছে। ১৬ ডিসেম্বর এমন একটা স্মরণীয় মুহূর্ত যেটা আমি আমার জীবনে আর পাবো না। সেই মুহূর্তটাকে আমি এখনও স্মরণ করি। আমার স্মৃতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের রাত ৯টার সেই ঘটনাটা আজো জ্বলজ্বল করে।

বিজয় অর্জনের পূর্বে আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, সেভাবে আসলে যুদ্ধটা হয় নাই। আসলে আমার যুদ্ধ করার স্বাদ মিটে নাই। সেই হলো যোদ্ধা, যার একটা পা নাই, একটা চোখ নাই কিংবা একটা বড় ক্ষত থাকবে; সে ক্রাচে ভর দিয়ে হাঁটবে। এমন কল্পনাই তো স্বাভাবিক। আমরা একদম অক্ষত হয়ে ফিরে আসবো, সেটা প্রত্যাশা করি নাই। আমরা যে রণের জন্য প্রস্তুত ছিলাম, সেটাতে আর অংশগ্রহণ করার সুযোগ ছিল না, যেহেতু দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, সোনার বাংলা গড়ার কথা। সোনার বাংলার অর্থ এই নয় যে, সোনার থালায় খাবো কিংবা সোনায় দেশকে ভরে দেব। অর্থাৎ উনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এই পাঁচটা মৌলিক অধিকার যাতে নিশ্চিত হয়, ধনী-গরিবের মধ্যে যাতে ব্যবধান না থাকে, আমরা যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হই, দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই। দেশে কোনো দুর্নীতি থাকবে না, অসমতা থাকবে না। এইসবকে সামনে রেখেই আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি।

পাকিস্তান আমলে ৫টা প্রদেশ ছিল। পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান, খাইবার, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এবং পূর্ব পাকিস্তান এই ৫টা প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তান ছিল। জনসংখ্যা পশ্চিমের চার প্রদেশের তুলনায় পূর্ব পাকিন্তানে বেশি ছিল। কিন্তু সম্পদের যে বণ্টন হতো তা শুধু মাত্র একটি প্রদেশ হিসাবে যা পাওয়ার দরকার ততোটুকুই পেত পূর্ব পাকিস্তান, লোক সংখ্যার বিচারে নয়। কাজেই পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ সম্পদ বণ্টন, চাকরি এবং অন্যন্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ও অবহেলিত ছিল। এসব বিবেচনা করে ৬ দফা পেশ করা হয় এবং এর ভিত্তিতে ৬৯-এর গণ আন্দোলন হয়। মূলত বঙ্গবন্ধু এই ৫টি মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। আর এটাই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য।

আমার মতো আরও অনেক পাহাড়ি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা তো তখন এ প্রশ্ন করি নাই যে, এটা তো বাঙালিদের ওয়ার, আমরা কেন যুদ্ধ করবো? সে প্রশ্ন কখনো আমার মাথায় আসেনি। তেমনিভাবে কোনো বাঙালি আমাদের বলে নাই যে, তোমরা তো পাহাড়ি, তোমরা আমাদের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলে আমাদের অনেক তথ্য লিক হয়ে যাবে। জাতি, ধর্ম, পেশা, সম্প্রদায় নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছি। তখন কিন্তু এত ভেদাভেদ ছিল না, আমরা তাদেরকে প্রশ্ন করি নাই, তারাও আমাদেরকে প্রশ্ন করে নাই। একে অপরের দুঃখে আমরা দুঃখিত হতাম, অন্যজনের সুখে সুখি হতাম। এই জিনিসটা কিন্তু পরবর্তীতে অনেকের মধ্যে ছিল না।

মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য প্রথমে আমাদের দেশটাকে ওউন করতে হবে, আই হ্যাভ টু ওউন। আমি যদি সবসময় দেশটাকে বিক্রি করে ফায়দা লোটার তালে থাকি, আমার মাঝে যদি ন্যূনতম দেশপ্রেম না থাকে, তাহলে এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কোনদিন হাসিল হওয়ার কথা নয়। শুধুমাত্র সরকারের একক প্রচেষ্টায় এটা কখনোই সম্ভব নয়। এখানে জনগণের একটা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালাচ্ছেন, অন্যদিকে স্বাধীনতা বিরোধীদের তিনি বিচারের সম্মুখীন করাচ্ছেন। আমি মনে করি, প্রশাসনিক যন্ত্র এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। কাজেই আমি মনে করি, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন কোনো কঠিন কাজ নয়।

প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা: একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার পর তিনি চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমান চুয়েট) থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৬ সালের জুন মাসে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন