আরাকান আর্মির শীর্ষ কমান্ডারের স্ত্রী-সন্তান থাইল্যান্ডে আটক

fec-image

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) এক শীর্ষ কমান্ডারের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আটক করেছে থাইল্যান্ড। গত বুধবার মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী চিয়াং মাই শহর থেকে তাদের আটক করা হয়। শুক্রবার দেশটির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট বাতিল করায় তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। বর্তমানে তাদের চিয়াং রাই প্রদেশের মায়ে সাই জেলার একটি অভিবাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাত ও দারিদ্র্য-জর্জরিত রাখাইনে কেবল রোহিঙ্গারাই একমাত্র নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী নয়। রাখাইন বৌদ্ধরা (আরাকান জাতিভূক্ত) সহ সেখানকার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সেনাপ্রাধান্যশীল কেন্দ্রীয় সরকারের নিপীড়নের শিকার হয়। কেবল রোহিঙ্গা ছাড়া বাদবাকি সব জনগোষ্ঠীর স্বীকৃতির প্রশ্নকে সামনে রেখে সশস্ত্র বিদ্রোহ করছে আরাকান আর্মি। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে এই সরব ভূমিকা বিশেষত রাখাইন বৌদ্ধদের মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তি তৈরি করেছে। এবছর সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাতের কারণে ৩৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে বিবেচনা করে মিয়ানমার।

আরাকান আর্মির অন্যতম শীর্ষ কমান্ডার মেজর জেনারেল তুন মিয়াত নাইন (৪১)। বুধবার তার স্ত্রী নিন জার ফিউ (৩৮) ও তাদের ১১ বছরের মেয়ে সাও পায়ে সান ও ১১ মাস বয়সী ছেলে মিয়াত লিন জানকে আটক করে থাই কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের পাসপোর্ট বাতিল করায় তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছি’। তবে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি দাবি করেছে, ভিসার মেয়াদ নবায়ন করতে গেলে তাদের আটক করা হয়।

থাই কর্তৃপক্ষ হিন জার ফিউকে আটক করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাখাইনের এক অ্যাকটিভিস্ট। আরাকান ইনফরমেশন সেন্টারের প্রধান নিয়াই নিয়াই লুইন বলেন, তাদের গ্রেফতার করা এবং ফেরত পাঠানো উচিত হবে না কারণ এটা স্পষ্ট যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের আটক করে জেলে পাঠাবে আর নিপীড়ন করবে। এতে করে রাখাইনের জনগোষ্ঠী, সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যকার বিরোধ আরও বাড়বে।

এর আগে গত জুলাইতে আরাকান আর্মি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েকজনকে আটক করে সিঙ্গাপুর। পরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণ দেখিয়ে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আরাকান আর্মি, মিয়ানমার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন