উখিয়ায় দুর্বৃত্তদের হাতে কলেজছাত্রী খুন 

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার/ উখিয়া প্রতিনিধি:

উখিয়া উপজেলার রুমখা চরপাড়া গ্রামে শারমিন আক্তার (১৮) নামে এক কলেজ ছাত্রীকে গলাকেটে হত্যা করেছে দূবৃত্তরা। নিহত কলেজ ছাত্রী মৃত আবু তাহেরের কন্যা ও উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্রী।

নিহতের মা জাহানারা বেগম জানান, কক্সবাজার টেকনাফাইপ্পা পাহাড়ের বাসিন্দা আব্দুল করিমের ছেলে নুরুল কবির (২৮) নামক এক দুধর্ষ সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তিনি একজন ডাকাত প্রকৃতির লোক। তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমার মেয়েকে ধারালো চুরি দিয়ে জবাই করে নিশংসভাবে খুন করে।

কলেজ ছাত্রীকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে খবর শুনে এলাকার শত শত লোক ঘটনাস্থলে ভীড় জমায়। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়েরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে প্রেরণ করেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, অফিসার ইনচার্জ বলেন, পরিকল্পিতভাবে কলেজ ছাত্রী শারমিনকে পৈশাষিক ভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজ ছাত্রী শারমিন প্রতিদিনের ন্যায় কলেজ শেষে ও প্রাইভেট পড়ে বাড়িতে ফিরে। ওই সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। সন্ত্রাসী কিলার পরিকল্পিতভাবে একা পেয়ে তাকে ঠাণ্ডা মাথায় জবাই করে পালিয়ে যায়।

নিহতের মামা হাছান আহমদ সওদাগর জানান, ৩ বোন, ১ ভাইয়ের মধ্যে ২ বোনের বিবাহ হয়েছে। ছোট ছেলে ও ছোট মেয়ে নিয়ে মা জাহানারা বেগম বাড়িতে একাই থাকত। অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে মেয়ে শারমিনকে উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার জন্য কলেজে ভর্তি করে।

পাশ্ববর্তী মহিলারা জানান, হত্যাকাণ্ডের সময় মা বাড়িতে ছিল না। অসুস্থ পিতা হাবিবুর রহমানকে দেখতে তিনি বাপের বাড়িতে যান। এ সুযোগে সন্ত্রাসী কিলার কলেজ ছাত্রী শারমিনকে খুন করে পালিয়ে যায়। পরে মা খবর শুনে এসে রক্তাক্ত মেয়ের লাশ বাড়িতে পড়ে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী কলেজ ছাত্রী শারমিন হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, হত্যাকারী নরপশুকে দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে জড়িত নুরুল কবিরের বোন ওই এলাকায় পিয়াজু বিক্রেতা নুরুর সাথে বিবাহ করে। এ সুবাধে সে চর পাড়া গ্রামে আসা-যাওয়া করত। এমনকি হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসী নুরুল কবিরকে অনেকেই দেখেছেন বলেও  জানান। খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সন্ত্রাসী নুরুল কবিরের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। লম্পট হিসাবে সবাই তাকে চেনে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন