হিজড়া সম্প্রদায়ের নির্মিত মসজিদে মিলেমিশে নামাজ পড়েন সবাই

fec-image

ময়মনসিংহে নির্মিত হয়েছে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য প্রথম মসজিদ। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ৩৩ শতক জমি বরাদ্দ নিয়ে নগরীর ৩৩ নং ওর্য়াডের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বড়ইকান্দী গ্রামে বানানো এ মসজিদের নাম ‘তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর ও দক্ষিণ চর কালিবাড়ি আশ্রয়ণ মসজিদ’।

চলতি রমজান মাস শুরুর এক সপ্তাহ আগে এ মসজিদের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু হয়েছে। এতে হিজড়াদের সঙ্গে নিয়মিত নামাজ পড়ছেন এলাকার সাধারণ মানুষও।

জানা যায়, নবনির্মিত এক কক্ষ বিশিষ্ট মসজিদটির দেয়াল ও চাল টিনের। সামনে ছোট্ট বারান্দা। পাশেই বসানো হয়েছে পাম্প, ওজুখানা ও বাথরুম।

সেতু বন্ধন হিজড়া কল্যাণ সংঘের সভাপতি জয়িতা তনু হিজড়া বলেন, বড়ইকান্দী গ্রামে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে আমরা ৪০ জন হিজড়া বসবাস করি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এলাকার মসজিদে আমাদের কয়েকজন নামাজ পড়তে গেলে অনেকেই হাসাহাসি ও কটূক্তি করে। পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেই। এ জন্য আমরা বিভাগীয় কমিশনারের কাছ থেকে ৩৩ শতক জমি বরাদ্দ নিয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছি। সেই সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার আমাদের মসজিদের জন্য দুই লাখ টাকা দিয়েছেন, এটা দিয়েই আমরা এ মসজিদের প্রাথমিক কাজ করেছি। এ মসজিদের জন্য কিছু মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় এবং নিজেদের টাকায় হাফেজ মো. আব্দুল মতিন নামের একজন ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি গত বিশ দিন ধরে এ মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতি করছেন। এতে হিজড়াসহ এলাকাবাসীও নামাজ পড়ছেন।

তিনি আরও বলেন, হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে নির্মিত এই মসজিদটি শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের প্রথম। পাশাপাশি একটি মাদ্রাসা, তিনতলা মসজিদ কমপ্লেক্সসহ কবরস্থান ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত এসব প্রতিষ্ঠান বাস্তবে রূপ নেবে।

ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, স্থানীয় হিজড়া জনগোষ্ঠীর কয়েকজন সদস্য আমার কাছে এসে মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য জমি চাইলে তাদের ৩৩ শতক জমি সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করি। এরপর সম্প্রতি তারা মসজিদের ঘর নির্মাণের জন্য আমার কাছে সহযোগিতা চায়। পরে আমি তাদের জন্য একজন বিত্তবান মানুষের কাছ থেকে কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারা এখন মসজিদ নির্মাণ করে নামাজ পড়ছেন। এটা ভালো উদ্যোগ।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন