উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে ভোজ্যতেল: আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নীরব
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার:
উখিয়া সীমান্তের প্রায় ১৫টি পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে ভোজ্য তেল পাচারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলেও পবিত্র রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে তা আরো শতগুণ বেড়েছে। উখিয়ার কতিপয় ব্যবসায়ী স্থানীয় ভাবে বাজারজাত করণের নাম ভাঙ্গিয়ে ইউএনও’র অনুমতিপত্র ব্যবহার করে প্রতি সপ্তাহে সহস্রাধিক ব্যারেল ভোজ্য তেল সরবরাহ আনছে।
খুচরা বিক্রির নামে পাচারকারীর হাতবেয়ে এসব ভোজ্য তেল সড়ক, উপসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক পথ দিয়ে মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃংখলা কমিটির সভায় তেল পাচার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও প্রতিরোধের কোন পদক্ষেপ না থাকায় পাচারকারী সিন্ডিকেট অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, উখিয়া, মরিচ্যা, পালংখালী ও কোটবাজারের ১২ জন পাইকারী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সরবরাহকৃত ভোজ্য তেল স্থানীয় ভাবে খুচরা বিক্রির বাধ্যবাধকতা থাকলেও ঐসব অসাধু ব্যবসায়ীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতিপত্র নিয়ে চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রতি সপ্তাহে নির্ধারিত পরিমাণের অধিক ভোজ্য তেল সরবরাহ আনছে। সড়ক পথে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে ম্যানেজ করে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে আসা এসব ভোজ্য তেলের সিংহভাগ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
উখিয়া সদর ও পালংখালী ষ্টেশন ঘুরে স্থানীয় গ্রামবাসির সাথে কথা বলে জানা যায়, পালংখালী ষ্টেশনের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে যে পরিমাণ ভোজ্য তেল সরবরাহ নেওয়া হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় বেশি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পালংখালী ষ্টেশন থেকে সীমান্তের জিরো পয়েণ্ট নিকটবর্তী হওয়ার সুবাদে অনায়াসে এসব ভোজ্য তেল মিয়ানমারে পাচার হয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। তবে ভোজ্য তেল সরবরাহকারী সেলিম উল্লাহ এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছে। সীমান্তের বিজিবি সদস্যরা ভোজ্য তেল পাচারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাড়ী ঘরের চাহিদা বা খুচরা বিক্রির অজুহাতে ভোজ্য তেল পাচার করা হচ্ছে।
বিজিবি সদস্যরা আরো জানান, এ নিয়ে মাসিক আইনশৃংখলা কমিটির সভায় আলোচনা হলেও দিক নির্দেশনা না থাকার কারনে ভোজ্য তেল উদ্ধার বা পাচারকারীকে আটক করা সম্ভব হচ্ছেনা। সড়কপথে ভোজ্য তেল নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার ফজলুল হক জানান, ইউএনওর অনুমতি থাকার কারনে তারা ভোজ্য তেলের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছেনা।
উখিয়া উপজেলার মোট পরিবার অনুপাতে কত মেট্টিক টন তেলের চাহিদা রয়েছে এবং কি পরিমাণ তেল সরবরাহ আনার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুমতিপত্র দেওয়া হচ্ছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, তেল পাচারের অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।