কক্সবাজারে নলকূপের জায়গা রক্ষায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর ঝাড়ু মিছিল

fec-image

শহরের টেকপাড়ায় আবারও কক্সবাজার পৌরসভার গভীর নলকূপের জায়গা দখলের পাঁয়তারা করছে দখলবাজ চক্র। যার অংশ হিসেবে সংবাদকর্মী হায়দার নেজামের উপর হামলা, গভীর নলকূপ ভাংচুর ও প্রকাশ্যে অস্ত্র মহড়া দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু তবুও ক্ষান্ত হয়নি দখলবাজেরা। তাই শতবছরের গভীর নলকূপের জায়গা রক্ষায় মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করেছে বৃহত্তর টেকপাড়াবাসী।

মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকালে মসজিদ রোডে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেছেন, টেকপাড়া মসজিদে রোডে শত বছরের পুরোনো একটি পাতকুয়া বর্তমানে গভীর নলকূপ রয়েছে। এটি এলাকাবাসীর সুপেয় পানির অন্যতম উৎস। কক্সবাজার পৌরসভার তত্ত্বাবধানে গভীর নলকূপটি স্থানীয়রা রক্ষণাবেক্ষণ করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আবদু সাত্তার, আবদুল গাফফার, সায়েদ হোসাইন কাদেরী গং গভীর নলকূপের জায়গা দখলে মরিয়া হয়ে উঠে। এ নিয়ে কয়েকবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী দখলবাজ চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।

বিগত ২০২১ সালের ০৯ আগস্ট (সোমবার) পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি সন্তোষজনক সমাধান করে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, এই জায়গা কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি। ব্যক্তিগত স্বার্থে এটি কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। এলাকার মানুষের পানি সংকট লাঘবে এখানে গভীর নলকূপ করে দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, কিন্তু মেয়রের নির্দেশ উপেক্ষা করে ওই দখলবাজ চক্র সম্প্রতি ফের বেপরোয়া হয়ে উঠে। যার অংশ হিসেবে তাঁরা গভীর নলকূপের পাইপ ছিদ্র করে দেয়। এলাকার মানুষ যাতে পানি নিতে না পারে সেজন্য ময়লা পানিতে সয়লাব করে দেয় পাইপে। এতে এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে।

জনভোগান্তি নিয়ে গত রোববার হায়দার নেজাম নামে দৈনিক রূপালী সৈকতের স্টাফ রিপোর্টার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তার উপর বর্বর হামলা চালায় আবদুল গাফ্ফার গং।। ওই সময় তারা প্রকাশ্যে দা, কিরিচ, হাতুড়ি, লাঠিসহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। একপর্যায়ে তারা গভীর নলকূপ ভাংচুর করে বিনষ্ট করে দেয়। ওইদিন রাতে গভীর নলকূপ স্থাপনের পৌর মেয়রের ফলক ও নাম কালো রং দিয়ে মুছে দেয়।

এলাকার কেউ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে জানে মারার হুমকি ধমকী দেয়। হামলা, ভাংচুর ও অস্ত্রের মহড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসলে অভিযুক্ত সায়েদ হোসাইন কাদেরী ও আবদুস সাত্তারকে আটক করা হয়।

এলাকাবাসী জানায়, গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন এলাকার নারীরা পানি সংগ্রহ করে। কিন্তু সেখানে তারা সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। তাদের বাড়ি থেকে নারীদের গতিবিধি নজরদারি করা হয়। তাই অবিলম্বে সেই সিসি ক্যামেরা সেখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে।

সাংবাদিক আজিজ রাসেলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন টেকপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমদ, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী, তরুণ সমাজ সেবক লায়ন মিজানুল করিম, টেকপাড়া সমাজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামাজিক আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজারের সভাপতি সামশুল আলম কেলু, বার্মিজ মার্কেট মালিক সমিতির কার্যকরি সভাপতি মুছা কলিম উল্লাহ, ৪নং ওয়ার্ড কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ফজল আহমদ, তরুণ মুসলিম ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ শাহেদুর রহমান শাহিন, ৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসালম, ৪নং ওয়ার্ড কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ব্যাংকার বেলাল ও সাঈদী প্রমুখ।

এসময় তরুণ মুসলিম ঐক্য পরিষদের সভাপতি মফিজুর রহমান, জাহেদুল ইসলাম জাহেদ, আবদুল্লাহ আল মামুন রিয়াদ, এহেসান উল্লাহ, হামিদুর রহমান হামিদসহ এলাকার শতশত নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন